পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় বাঁধে ধস
দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কয়েক মাস আগে শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় নির্মিত নদী রক্ষা বাঁধের উল্লেখযোগ্য অংশ ধসে পড়েছিল। শনিবার যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শরীয়তপুরের জাজিরায় তীব্র স্রোতের কারণে আবারও পদ্মা সেতু কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষা বাঁধের প্রায় ১১০ মিটার নদীতে ধসে গেছে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুদিনে উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট এলাকায় এ ভাঙনে অন্তত ৩০টি বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পাড়ে ভাঙন আতঙ্কে অনেকেই সরিয়ে নিয়েছেন বসতবাড়ি। জানা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতু থেকে জাজিরা মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখার কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষা বাঁধটি নির্মাণ করে সেতু কর্তৃপক্ষ। এটি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ১১০ কোটি টাকা। কয়েক দফা ভাঙনে এখন পর্যন্ত এ বাঁধের ২ কিলোমিটার অংশের প্রায় ৭৫০ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
২০২৩ সালের নভেম্বরে প্রথম জাজিরার নাওডোবা জিরো পয়েন্টে রক্ষা বাঁধে ভাঙন শুরু হয়। এরপর চলতি বছর কয়েক দফায় প্রায় ১০০ মিটার বাঁধ নদীতে ধসে পড়ে। সর্বশেষ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ পদক্ষেপ (১ লক্ষাধিক জিওব্যাগ ডাম্পিং ও অন্যান্য পদক্ষেপ) নেওয়া হলেও স্রোত বাড়ায় নদীভাঙন ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে সেতুর সার্ভিস এরিয়া-২, সেনানিবাস, দক্ষিণ থানা ও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো রয়েছে। এসব রক্ষায় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ভাটির দিকে ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে যে বাঁধ নির্মাণ করেছিল, তা এখন ধসে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
ভাঙন রোধে কর্তৃপক্ষের নেওয়া সাময়িক বিভিন্ন পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তাদের দাবি, ভাঙন প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হোক। নদী থেকে বালু আহরণের ফলেও পদ্মা সেতু প্রকল্পসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় নানারকম সমস্যা তৈরি হতে পারে। এদিকেও কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। ভাঙনকবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে যথাসময়ে পর্যাপ্ত সহযোগিতা প্রদান করা দরকার। পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় সম্ভাব্য সব ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। যেহেতু এটি একটি বিশেষ প্রকল্প, সেহেতু এর সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাজে সংশ্লিষ্টরা যাতে কোনোরকম অবহেলা না করে, সেদিকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি দিতে হবে।
