|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বর্ষা পেরিয়ে আসে রূপের রানি শরৎকাল। নদীর বালুচরে তখন জল নেমে শূন্যতা। সেই শূন্যতার ভেতর সাদা সাদা ফুল নিয়ে ওপরে ভেসে চলা মেঘের দিকে চেয়ে থাকে কাশফুল। কাশফুল এমন একটি ফুল যা এ শরতেই দেখা যায়। তাও আবার এ রকম ফাঁকা জায়গায়। গন্ধ নেই, তবে সৌন্দর্যে এবং জনপ্রিয়তায় ছাড়িয়ে গেছে সুগন্ধযুক্ত ফুলকেও। পাখির পালকের মতো নরম আর কমনীয় এ ফুল। কাশফুল মূলত ছনগোত্রীয় এক ধরনের বহুবর্ষজীবী ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। বর্ষা ঋতুকে বিদায় জানিয়ে নীল আকাশে সাদা তুলার মতো মেঘের সঙ্গে কাশফুলের মৃদু বাতাসে দোল খাওয়া প্রকৃতিতে শুধুই মুগ্ধতা ছড়ায়। কাশফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Saccharum spontaneum.
কাশফুল উদ্ভিদটি উচ্চতায় সাধারণত ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনা রুক্ষ এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের কোনো উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই এদের বেশি জন্মাতে দেখা যায়। গাছটির চিরল পাতার দুই পাশ বেশ ধারাল। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই কাশফুল দেখতে পাওয়া যায়। কাশফুল শুকিয়ে গেলে গ্রামের মানুষ এগুলো কেটে নিয়ে যায়। এ কাশ দিয়ে গ্রামের বধূরা ঝাঁটা, ডালি, মাদুর তৈরি করে থাকে। ঘরের চাল, বাড়ির সীমানার বেড়া ও কৃষকের মাথাল তৈরিতেও কাশগাছ ব্যবহার করা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রাচীন গ্রন্থ’ ‘কুশজাতক’ কাহিনি অবলম্বন করে ‘শাপমোচন’ নৃত্যনাট্য রচনা করেছেন। কাশফুলের বেশ কিছু ঔষধি গুণ রয়েছে। যেমন-পিত্তথলিতে পাথর হলে নিয়মিত গাছের মূলসহ অন্যান্য উপাদান দিয়ে ওষুধ তৈরি করে পান করলে পিত্তথলির পাথর দূর হয়। কাশমূল বেটে চন্দনের মতো নিয়মিত গায়ে মাখলে গায়ের দুর্গন্ধ দূর হয়। এ ছাড়া শরীরে ব্যথানাশক ফোড়ার চিকিৎসায় কাশের মূল ব্যবহৃত হয়।
