Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

কিংবদন্তিদের কাতারে মুশফিক

জ্যোতির্ময় মন্ডল

জ্যোতির্ময় মন্ডল

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কিংবদন্তিদের কাতারে মুশফিক

শততম টেস্টে ইতিহাস স্পর্শ করেন মুশফিক। ছবি: সংগৃহীত

২০ বছরের ক্যারিয়ারে বুধবারের রাত হয়তো সবচেয়ে দীর্ঘ কেটেছে মুশফিকুর রহিমের। মাত্র এক রান; কিন্তু অপেক্ষা যেন পাহাড়সম। আগের দিনের শেষ বিকালের ম্রিয়মাণ আলো থেকে নতুন সকালের নরম রোদজুড়ে ছিল সেই এক রানের তীব্র আকাঙ্ক্ষা। উত্তেজনা, রোমাঞ্চের পাশাপাশি ছিল ঈষৎ অস্থিরতাও। ছিল মৃদু ভয়। অবশেষে দিনের নবম বলে মিলল কাঙ্ক্ষিত রান। শততম টেস্টে ইতিহাস স্পর্শ করেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার। চিরচেনা উদযাপন। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ভূমি চুম্বন। ইতিহাসের ১১তম ব্যাটার হিসাবে শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করে নিজেকে কিংবদন্তিদের কাতারে নিয়ে গেলেন মুশফিক। সেই সঙ্গে মুমিনুল হকের সমান ১৩ সেঞ্চুরি করে যৌথভাবে বাংলাদেশের শীর্ষ সেঞ্চুরিয়ানও এখন তিনি।

এই সিরিজ মুশফিকময়। সিরিজের আগে থেকেই লেগেছে উৎসবের রং। দ্বিতীয় টেস্টে নিজের মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজেই নায়ক। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে শততম টেস্ট খেলা। সেঞ্চুরি ছুঁয়ে তিনি পূর্ণতা দিলেন গোটা উপলক্ষ্যকে।

আগের দিন অপরাজিত ৯৯ রান নিয়ে শেষ করেছিলেন মুশফিক। কাল সকালে মিরপুরে প্রথম বল দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন সাংবাদিক থেকে শুরু করে দর্শকরা। দিনের প্রথম ওভারেই মুখোমুখি হন মুশফিক। বাঁ-হাতি স্পিনার ম্যাথু হামফ্রিসের করা প্রথম ওভারে পাননি কাঙ্ক্ষিত রান। দুটি বলে আউট হওয়ার আশঙ্কা ছিল। পরের ওভারে লিটনের সিঙ্গেলের পর স্ট্রাইক ফিরে পেয়ে জর্ডান নিলের ডেলিভারি স্কয়ার লেগে ঠেলে এক রান নিয়ে পৌঁছে যান তিন অঙ্কে।

দৌড়ে মাঝপথে দুহাত উঁচিয়ে ধরলেন। বাড়তি কোনো উচ্ছ্বাস নেই। এটাই তো হওয়ার কথা ছিল। রান শেষ করে সেই চেনা হাসি এবং পরিচিত ভঙ্গি জানিয়ে দিল সেঞ্চুরির আনন্দ। রান শেষ করেই উদযাপন। শত রানের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। হামফ্রিসের এক ডেলিভারিতে আউট হন ১০৬ রানে। দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ নেন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বলবার্নি।

টেস্ট ক্রিকেটের প্রায় দেড়শ বছরের ইতিহাসে ১০০ ম্যাচ খেলা ক্রিকেটারদের সংখ্যা ৮৩। তাদের মধ্যে শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন মাত্র এগারোজন। ১৯৬৮ সালে প্রথম এই কীর্তি গড়েন ইংল্যান্ডের কলিন কাউড্রে। এরপর জাভেদ মিঁয়াদাদ, গর্ডন গ্রিনিজ, অ্যালেক স্টুয়ার্ট, ইনজামাম-উল-হক। ২০০৬ সালে রিকি পন্টিং হয়ে ওঠেন অনন্য। শততম টেস্টে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেন তিনি। পরে গ্রায়েম স্মিথ, হাশিম আমলা, জো রুট এবং ডেভিড ওয়ার্নার যোগ দেন এই মর্যাদাপূর্ণ তালিকায়। রুট গড়েছেন প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির নজিরও। পরে ডেভিড ওয়ার্নারও ডাবল সেঞ্চুরি করেন।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক ‘প্রথম’ মুশফিকের দখলে। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি, প্রথম শততম টেস্ট এরপর শততম ম্যাচেও সেঞ্চুরি। ইতিহাসে তার নাম আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠল।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম