Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

ইমাম-খতিব সম্মেলনে তারেক রহমান

ইনসাফের দেশ গড়তে আলেমদের সমর্থন চাইলেন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ইনসাফের দেশ গড়তে আলেমদের সমর্থন চাইলেন

বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে রোববার ইমাম-খতিব পরিষদের জাতীয় সম্মেলনে ভার্চুয়ালি বক্তৃতা করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: যুগান্তর

দলীয় বা হীন রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মীয় বিধানের উদ্দেশ্যমূলক ব্যাখ্যা কখনো কখনো সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টির কারণ হয়ে ওঠে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসলামের বিধিবিধান নিয়ে মতবিরোধ রাষ্ট্র ও সমাজে যেন ফিতনা সৃষ্টি কিংবা মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্যের কারণ না হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করতে নেতৃস্থানীয় ওলেমা-মাশায়েক-ইমাম-খতিবরা ভূমিকা রাখতে পারেন। ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে আগামী নির্বাচনে আলেম-ওলামাদের দোয়া ও সমর্থন চেয়েছেন তারেক রহমান।

রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সম্মিলিত ইমাম-খতিব পরিষদ আয়োজিত জাতীয় সম্মেলনে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এতে বিএনপির পাশাপাশি জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। সম্মেলনে পরিষদের সদস্য সচিব মুফতি আজহারুল ইসলাম ইমাম-খতিবদের ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবি প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, উপস্থাপিত দাবির বেশ কয়েকটি অগ্রধিকার ভিত্তিতে পূরণ করার সব রকমের সুযোগ রয়েছে বলে আমি মনে করি। আপনারা ইমাম-খতিব-মুয়াজ্জিনদের জন্য সার্ভিস রুল প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন; এই দাবিটি অত্যন্ত যৌক্তিক। তিনি বলেন, অনেক মসজিদে কমিটির ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর ইমাম মুয়াজ্জিনের চাকরি নির্ভর করে। আমি মনে করি, এটি হওয়া উচিত নয়, এটি হতে পারে না। এটিকে আমি ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বিরুদ্ধে অন্যায্য আচরণ বলে মনে করি। আল্লাহর রহমতে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে সার্ভিস রুল প্রণয়নের ব্যাপারে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। অন্য দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগও বিএনপি সরকার ইনশাআল্লাহ গ্রহণ করবে। এ ব্যাপারে ইমাম-খতিবদের একাধিক কমিটি করে প্রতিটি দাবির সুনির্দিষ্ট সুপারিশ বিএনপিকে প্রদানের আহ্বানও জানান তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মানি দেওয়ার পরিকল্পনা পর্যায়ক্রমে ইনশাআল্লাহ আমরা বাস্তবায়ন করব। একই সঙ্গে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের আর্থিকভাবে আরও স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টকে শক্তিশালী করে আরও বহুমুখী প্রকল্প গ্রহণ করার একটি চিন্তাভাবনা আমাদের রয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, ইসলামি মূল্যবোধের আলোকে বিএনপি এমন একটি কল্যাণমূলক সমাজ, সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থার পক্ষে, যে রাষ্ট্র ও সমাজে মুসলমানরা নিঃসংকোচে কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী নিজেদের জীবন পরিচালনা করতে সক্ষম হবেন। নির্ভয়ে, নিরাপদে ইবাদত ও বন্দেগি করতে পারবেন। একইভাবে অন্য ধর্মের মানুষও নিরাপদে-নিশ্চিন্তে যার যার ধর্ম ও সংস্কৃতি পালন করতে সক্ষম হবে। বিএনপি কখনোই ইসলামের মূলনীতি কিংবা মৌলিক বিশ্বাসের সঙ্গে আপস করেনি। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও করবে না।

তারেক রহমান বলেন, লাখ লাখ মসজিদ ও মাদ্রাসা এবং ইমাম-মুয়াজ্জিন-মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রীয় অগ্রগতিমূলক কার্যক্রমের বাইরে রেখে দেশে কখনোই টেকসই উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। এই বাস্তবতা থেকে বিএনপি আগামী দিনের কর্মসূচিতে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

সমাজের ফয়সালা মসজিদের মিম্বর থেকে আসবে-জামায়াত আমির : দেশে কুরআনের সমাজ কায়েম না হলে শান্তি ফিরবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, প্রচলিত কোনো তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে দেশে শান্তি ফেরানো যাবে না। ইমামদের নেতৃত্বে একটি সোনালি সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে। এদেশে আইন চলবে কুরআনের, নয়তো মানবিক সমাজ কায়েম হবে না। মসজিদ কমিটি হবে খতিব ও ইমামদের পরামর্শে। খতিব ও ইমামরা কারও করুণার পাত্র হতে পারেন না। আমরা যখন জন্মগ্রহণ করি, তখন আপনারা আমাদের ইমাম, আমরা যখন মারা যাই তখনও আপনারা আমাদের ইমাম। সমাজের ফয়সালা মসজিদের মিম্বর থেকে আসবে।

আ.লীগ ইসলামবিরোধী রাজনীতি করেছে-নাহিদ ইসলাম : জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে বিগত ১৬ বছর ইসলামবিরোধীদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ ইসলামবিরোধী রাজনীতি করেছে। দলটি ভারতের দালালি করেছে। তিনি বলেন, আমরা এবার কারও দালালি নয়, নিজেদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজের পায়ে বাংলাদেশ গড়ে তুলব এবং সেই বাংলাদেশ হবে ইনসাফের বাংলাদেশ, ইনশাআল্লাহ। সেই নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণের লড়াই, সেই নতুন সমাজ বিনির্মাণের লড়াই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যেভাবে আপনারা-আমরা কাঁধে কাধ মিলিয়ে করেছি, আগামী দিনে কাঁধে কাঁধ মিলে লড়াই করব। আমরা আপনাদের সঙ্গে থাকব, আপনারা জনগণের পাশে থাকবেন।

সম্মিলিত ইমাম খতিব পরিষদের আহ্বায়ক ও বায়তুল মোকাররম মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজি, হেফাজত নেতা জুনায়েদ আল হাবিব প্রমুখ।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম