সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা
ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গচ্চা ৩২ হাজার কোটি টাকা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
গেল ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অলস বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে সরকারের গচ্ছা গেছে সাড়ে ৩২ হাজার কোটি টাকা। তাছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন এক বছর পিছিয়ে যাওয়ায় সরকারের আরও ৬ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘তৃতীয় বাংলাদেশ জ্বালানি সম্মেলন-২০২৫’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন।
এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ক্লিনের পলিসি অ্যাডভাইজার বেনজীর আহমেদ, বিশেষ আলোচক হিসাবে বক্তব্য দেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নেওয়াজুল মৌলা, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের হামিদুল ইসলাম, ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশের শরীফ জামিল, জ্বালানি গবেষণা কেন্দ্রের (ইউআইইউ) পরিচালক ড. শাহারিয়ার আহমেদ চৌধুরী, সেফটি অ্যান্ড রাইটসের সিকান্দার আলী মিনা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২২২০ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর অনুমোদনের ফলে অলস সম্পদের পরিমাণ আরও বেড়েছে এবং শুধু ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে সরকারকে ৩২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। অন্যদিকে, এলএনজি আমদানি ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা, যা দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুতর ঝুঁকির সৃষ্টি করছে।
সংবাদ সম্মেলনে মাতারবাড়িতে নতুন ১২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এতে আরও জানানো হয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি ২০০৮ অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়নের লক্ষ্য থাকলেও বাস্তবে তা মাত্র ৫.১ শতাংশে সীমাবদ্ধ রয়েছে। অথচ ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের বাস্তব সম্ভাবনা বাংলাদেশের রয়েছে। বক্তারা বলেন, এই জ্বালানি রূপান্তর প্রক্রিয়ায় নারী, তরুণ, আদিবাসী, শ্রমজীবী ও স্বল্প আয়ের মানুষদের যথাযথ অন্তর্ভুক্তি না হলে ন্যায্য রূপান্তর সম্ভব নয়। ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের সাম্প্রতিক অগ্রগতির উদাহরণ টেনে তারা প্রশ্ন তোলেন, বাংলাদেশ কেন সেই গতিতে এগোতে পারছে না?
ড. শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ক্যাপাসিটি চার্জের নামে পরিশোধ করা সমুদয় অর্থই গচ্ছা গেছে। তাছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন এক বছর পিছিয়ে দেওয়ায় লোকসান হবে আরও ছয় হাজার কোটি টাকা। তাছাড়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ সঞ্চালনের গ্রিড এখনো তৈরি হয়নি।
তিন দিনব্যাপী তৃতীয় জ্বালানি সম্মেলন বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার তৃতীয় বাংলাদেশ জ্বালানি সম্মেলন আগামীকাল থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরে অনুষ্ঠিত হবে। এর আয়োজন করছে বাংলাদেশের প্রতিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক কর্মজোট (বিডব্লিউজিইডি) এর সঙ্গে বাংলাদেশের স্বনামধন্য ১৬টি সহ-আয়োজক সংগঠন। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
