Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’

মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের নতুন পরিকল্পনা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের নতুন পরিকল্পনা

সতেরো বছর পর দেশে ফিরেই জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে বড় ধরনের এক ‘চমক’ উপহার দিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গণসংবর্ধনা মঞ্চে তার প্রথম বক্তব্যের চমক-‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’।

এ কথা বলার আগে তিনি বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামী কিংবদন্তি নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের ঐতিহাসিক সেই উক্তি উচ্চারণ করে বলেন, তিনি বলেছিলেন- ‘আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম’। আর আজ আমি আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে বলছি, ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্য শোনার পর সবার মধ্যে বিশেষ কৌতূহল ও চাঞ্চল্য দেখা যায়। তারেক রহমানের নতুন এ বার্তা নেতাকর্মীদের তাৎক্ষণিকভাবে আরও বেশি উজ্জীবিত করে তোলে। এমন বক্তব্য শোনার পর অনেকেই ধারণা করছেন, তিনি সত্যিই দেশ ও দেশের জনগণের উন্নয়নে বিশেষ কিছু করতে চান।

এ প্রসঙ্গে তারেক রহমান তার ভাষণে বলেন, ‘আমরা দেশের শান্তি চাই। আজ এই বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে জাতীয়তাবাদী দলের একজন সদস্য হিসাবে আপনাদের সামনে আমি বলতে চাই, আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান, ফর দ্য পিপল অব মাই কান্ট্রি, ফর মাই কান্ট্রি। আজ এই পরিকল্পনা দেশের মানুষের স্বার্থে।’

সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা চেয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য যদি সেই প্ল্যান, সেই কার্যক্রম ও পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করতে হয়, প্রিয় ভাইবোনেরা এই জনসমুদ্রে যত মানুষ উপস্থিত আছেন, সারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের শক্তি হিসেবে যত মানুষ উপস্থিত আছেন, প্রত্যেকটি মানুষের সহযোগিতা আমার লাগবে। আপনারা যদি আমাদের পাশে থাকেন, সহযোগিতা করেন ইনশাআল্লাহ আমরা ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাসবিষয়ক গবেষক আলতাফ পারভেজ যুগান্তরকে বলেন, এটা খুব ইন্টারেস্টিং যে তিনি (তারেক রহমান) বলেছেন, তার একটি প্ল্যান আছে। শান্তির প্রশ্নে, দেশের উন্নয়নের প্রশ্নে, আসলে মানুষ এটাই দেখতে চায় যে, তাদের একজন শক্তিশালী নেতা আছেন। সেই নেতা তাদের নিয়ে একটি পরিকল্পনা করেছেন। দেশটা এগিয়ে নিতে চান।

তিনি বলেন, সারা দেশের অধিকাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তার আগমনকে ইতিবাচকভাবে ও স্বস্তির সঙ্গে নিয়েছে। কিন্তু তাদের (জনগণ) একটি প্রত্যাশা ছিল বা আছে। এই প্রত্যাশা কিন্তু তার কাঁধে এখন একটি ভার হয়ে থাকবে। ফলে আজ থেকেই তার সামনে একটি চ্যালেঞ্জ শুরু হলো। এতদিন তিনি একটি দলের প্রধান ছিলেন, আজ থেকে তিনি জাতীয় নেতার দায়িত্ব নিলেন। ফলে এই দুটো ট্রান্সফরমেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ। সব মিলিয়ে, ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’ বক্তব্যটি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এখন দেখার বিষয়, এই পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তব রূপ পায় এবং জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। তবে নিঃসন্দেহে বলা যায়, এই বক্তব্য দেশের রাজনীতিতে নতুন এক আশার ভাষা যোগ করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমানের ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’ বক্তব্যটি শুধু একটি স্বপ্ন নয়; বরং এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত দেয়। তার ভাষণে ব্যক্তিগত বা দলীয় প্রতিশোধের ভাষা অনুপস্থিত ছিল, যা অনেকের দৃষ্টিতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন। তিনি যে অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলেছেন, সেখানে রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতা থাকলেও সহাবস্থান ও সম্মানের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার বার্তা স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।

যদিও লন্ডনে অবস্থানকালীন সময়ে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিভিন্ন বক্তব্যে দেশ ও দেশের জনগণ নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা বলেছেন। সেখানে তিনি আগামীর বাংলাদেশ কীভাবে কোথায় দেখতে চান, তার বিশদ ধারণা দেন। ফলে দলটির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণ মনে করেন, তারেক রহমান যে প্ল্যানের কথা বলেছেন, সেখানে দেশ ও জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের কথাই থাকবে। দেশ এগিয়ে যাবে।

এদিকে গণ-অভ্যুত্থানের আগে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা দেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ বাস্তবায়নে ৮টি বিশেষ খাতকে গুরুত্ব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের কাছে এসব প্রস্তাবনা বেশ প্রশংসিত হয়েছে।

ঘটনাপ্রবাহ: তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন


আরও পড়ুন

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম