Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

সিলেটের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আগামীতেও নৌকায় ভোট দিন

ডিসেম্বরে নির্বাচন, সিলেট থেকেই প্রচার শুরু * লাখো জনতা ভোট দেয়ার ওয়াদা করলেন * ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হবে

Icon

রেজাউল করিম প্লাবন, সিলেট থেকে

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চাইলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিলেটবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। আপনারা অতীতেও নৌকায় ভোট দিয়েছেন, এবারও দেবেন। আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করুন নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। তিনি বলেন, নৌকা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, সমৃদ্ধির পথ দেখিয়েছে। নৌকা মার্কার দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়। এ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য তিনি নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার বিকালে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে লক্ষাধিক জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নৌকা মার্কার নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সিলেট থেকেই আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার শুরু হল। এ জনসভায় যোগ দিতে সহস্রাধিক প্রবাসী যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, দুবাই, সৌদি আরব, কাতারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে সিলেটে এসেছেন। তারা স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জনসভায় যোগ দেন। নির্বাচনী প্রচারের শুরুতে সিলেট সফরে এসে তিন আউলিয়ার মাজার জিয়ারত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভার আগে ৩৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। আজ (মঙ্গলবার) সিলেট থেকেই ‘নির্বাচনী প্রচারণা শুরু’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সিলেট এসেছি আপনাদের উপকার করতে। আজ অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছি। সামনে আরও কিছু উন্নয়ন প্রকল্প হবে, সেগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দেন। জনসভায় বিকাল ৪টা থেকে শুরু করে ৩৯ মিনিট বক্তৃতা দেন শেখ হাসিনা। বক্তৃতায় প্রয়াত মন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদ, শাহ এএমএস কিবরিয়া, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, দেওয়ান ফরিদ গাজী, আহসান উল্লাহ মাস্টার, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ প্রয়াত জাতীয় নেতাদের স্মরণ করেন তিনি। সাবেক মেয়র বদর উদ্দীন আহমদ কামরানসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর হামলার ঘটনাও তুলে ধরেন দলীয় সভানেত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, আমরা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে জয়লাভ করে চার বছর পূর্ণ করে এখন পাঁচ বছরে পা দিয়েছি। আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা পুণ্যভূমি সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছি। বিগত নির্বাচনে নৌকায় সবাই ভোট দিয়েছিলেন। তাই আজ বাংলার সর্বত্র উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। জনসভায় নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়ার একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত নেতা-কর্মী-সমর্থক ও জনতাকে হাত তুলে অঙ্গীকার করতে বলেন। উপস্থিত লাখো জনতাও হাত তুলে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার ওয়াদা করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাছে।

জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ জনসভা ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে সিলেটে সাজ সাজ রব উঠেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জড়ো হতে শুরু করেন। দুপুরের পর মাদ্রাসা ময়দান জনসমুদ্রে রূপ নেয়। জনসভার জন্য আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আদলে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়। সেখানে পৌঁছে শেখ হাসিনা জনগণের উদ্দেশে হাত নাড়েন। উপস্থিত জনতা এ সময় ‘নৌকা’ ‘নৌকা’ স্লোগান দিয়ে জনসভাস্থল মাতিয়ে রাখেন। সেই সঙ্গে সিলেট অঞ্চলের ভাষায় মাইকে স্লোগান ওঠে ‘চলিল রে চলিল, নৌকা চলিল’।

সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, আমরা উন্নয়নের ছোঁয়া সিলেটের প্রতিটি ইউনিয়নে পৌঁছে দিয়েছি। সিলেটের উন্নয়নের জন্য আমরা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আজ একযোগে ৩৫টি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন করেছে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তাদের কারণে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। তাদের আমলে বাংলাভাইয়ের সৃষ্টি, জঙ্গিবাদের সৃষ্টি। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দেশে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল।

আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানের জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি সিলেটসহ সারা দেশে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। ২০০৪ সালে হজরত শাহজালালের মাজারে গ্রেনেড হামলা হয়। পরপর দু’বার গ্রেনেড হামলায় ৯ জন মানুষ মারা যায়। ৭ আগস্ট আমাদের সাবেক মেয়র কামরানের ওপর হামলা হয়। সে হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা ইব্রাহিম মৃত্যুবরণ করেন। একাধিকবার কামরানের ওপর হামলা হয়েছে। মহিলা আওয়ামী লীগের ওপর বোমা হামলা হয়।’ বঙ্গবন্ধুকন্যা আরও বলেন, ‘২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি সারা দেশে হত্যাযজ্ঞ চালায়। তাদের হাত থেকে মা-বোনরা রেহাই পাননি। সারাদেশে অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়, গ্রেফতার করে নির্যাতন চালানো হয়, বহু নেতাকে গুম করা হয়।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার শুরুতে সিলেট সফরে এসে তিন আউলিয়ার মাজার জিয়ারত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে বেলা পৌনে ১১টায় সিলেটে পৌঁছে সরাসরি তিনি হযরত শাহজালাল (র.) মাজারে গিয়ে জিয়ারত ও মোনাজাত করেন। এরপর শেখ হাসিনা যান শহরের প্রান্তে খাদিম নগরে, হযরত শাহপরাণের (র.) মাজারে। সেখানে জিয়ারত শেষে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সুরমা পারের কুশিঘাট এলাকায় হযরত গাজী বুরহান উদ্দীনের (র.) মাজার জিয়ারত করেন তিনি। মাজার জিয়ারত শেষে সিলেট সার্কিট হাউসে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে নামাজ ও বিরতির পর বিকালে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভাস্থলে উপস্থিত হন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি-জামায়াত। তারা ওই নির্বাচন ঠেকানোর নামে সন্ত্রাস-নাশকতা চালায়। সিলেটে শহীদ মিনারে হামলা ও ভাংচুর চালায়। ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি দেশে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালায়। আমরা গাছ লাগাই, তারা গাছ কাটে; আমরা রাস্তা বানাই, তারা রাস্তা কাটে। আমরা কঠোর হস্তে সেসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করি। বিএনপির সময় বাংলা ভাই, আবদুর রহমান তৈরি হয়, সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা হয়। বিএনপি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালায়। এতে আমাদের নেত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন নিহত হন।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ধ্বংস করতে জানে, সৃষ্টি করতে জানে না। মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করতে জানে। বিএনপি পেট্রোল বোমায় মানুষ মেরেছে। তাদের আগুন, পেট্রোলবোমায় বহু মানুষ জীবন দিয়েছে। তারা প্রায় ৫শ’ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। প্রায় তিন হাজার মানুষ তাদের আগুন সন্ত্রাসের শিকার হয়ে এখন ধুঁকছেন। তাদের অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন তিন হাজার ৩৬ জন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘দেশে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল। ২০০৯ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে পেয়েছিলাম মাত্র ১৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। আজ আমরা দেশে ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিচ্ছি। আমরা কম্পিউটারের ওপর থেকে ট্যাক্স প্রত্যাহার করে তা সহজলভ্য করেছি। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা শিক্ষার হার ৬৫.৫ ভাগে উন্নীত করেছিলাম। বিএনপি ক্ষমতায় এসে সাক্ষরতার হার কমিয়ে ৪৫ ভাগে নামিয়ে আনে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা এ হারকে ৭২ ভাগের উপরে নিয়ে গেছি। আমরা প্রতিটি এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি। বিভিন্ন বহুমুখী বিশ্ববিদ্যালয় করছি, টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করে শিক্ষাকে বহুমুখী করে দিচ্ছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, সিলেটের চা উৎপাদন যেন বৃদ্ধি পায়, তার ব্যবস্থা করছি। চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন, তাদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যবস্থা করছি। সিলেট থেকে যাতে চায়ের নিলাম হয়, তার জন্য নিলাম কেন্দ করছি। দেশের প্রত্যেক এলাকায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। সিলেটে শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। ঘরে বসে প্রবাসে থাকা স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার প্রযুক্তিগত সুযোগ আমরা দিয়েছি। ৮ হাজার ৫শ’ পোস্ট অফিসকে আমরা ডিজিটাল সেন্টারে রূপান্তর করেছি। ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনা পয়সায় স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছি, ওষুধ দিচ্ছি। সিলেটে আমরা একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের টাকায় আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পায়। প্রবাসীদের জন্য তিনটি ব্যাংক স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আ’লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের সুনাম হয়। দেশ পুরস্কার পায়। বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস হয়ে যায় তাদের মূল কাজ। দেশের উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ২০০৯ সালে আ’লীগ ক্ষমতায় না এলে দেশে এত উন্নয়ন হতো না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দেশের উন্নয়ন হয় না। নৌকায় ভোট দিয়ে দেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। আমরা কথা দিয়েছিলাম, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব। তা করেছি। জাতির জনকের খুনিদের বিচার করেছি। বাংলার মাটিতে জঙ্গিবাদের স্থান হবে না। প্রত্যেক মা, বোন, শিক্ষক, সচেতন নাগরিক, সব অভিভাবক সবাইকে নিজেদের ছেলেমেয়েদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তারা কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী বেশিদিন অনুপস্থিত কিনা, তা খেয়াল রাখতে হবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। ইসলাম জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্যের জন্য বাংলাদেশকে কারো কাছে ভিক্ষা চাইতে হবে না। আমরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি। আপনারা শুনলে অবাক হবেন, বিএনপির খালেদা জিয়া, তাদের অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বলেছিলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না। তাতে বিদেশি সাহায্য পাওয়া যাবে না। কিন্তু আমরা ভিক্ষা করতে চাই না। যারা নিজেদেরকে ভিক্ষুক হিসেবে অন্যের কাছে পরিচিত করতে চায়, তারা কীভাবে দেশের উন্নয়ন করবে। বাংলাদেশের মানুষ বিশ্ব দরবারে সম্মানের সঙ্গে এগিয়ে যাবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য।’

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, সিলেটবাসী আমাকে দু’বার নির্বাচিত করেছেন আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। সিলেটে গত ২শ’ বছরে যা হয়নি সেই উন্নয়ন শেখ হাসিনার সরকার করেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে দেশের তখন ৩০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র ছিল। বর্তমান সরকার গত ৯ বছরে দরিদ্রতার হার ৯ শতাংশে কমিয়ে এনেছে। শহর ও গ্রামের ব্যবধান কমিয়ে আনা হয়েছে। এই সরকারকে আরও একটি বার ক্ষমতায় আসার সুযোগ দিলে দরিদ্রতা ও দুঃখ থাকবে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান দুর্নীতিবাজ উল্লেখ করে বলেন, এদের হাত থেকে দেশ রক্ষা করতে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগ বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। তিনি বলেন, সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সবচেয়ে কঠিন সড়ক। এই সড়কের ৪০ ভাগ কাজ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ হবে। সিলেট-ঢাকা সড়কের কাজ বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে ঝামেলার কারণে একটু পিছিয়েছে।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ২০০৩ সালে আমি সিটি মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে সে সময় কাজ করতে দেয়া হয়নি। সে সময় সিটিকে পাশ কাটিয়ে জেলা পরিষদকে দিয়ে সিটিতে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করান হয়েছে। কামরান বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সিলেট নগরীর উন্নয়নের জন্য ৫১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি বিগত ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে আমাকে একটি টাকাও দেয়া হয়নি। বর্তমান মেয়রকে উদ্দেশ করে সাবেক মেয়র কামরান বলেন, সিলেটে গত পাঁচ বছরে ৫০০ কোটি টাকা বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ করা হয়েছে। অথচ, বিএনপি নেতা এবং বর্তমান মেয়র বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এ সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন। কামরান প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি আপনার কথা রেখেছেন। আপনি সিলেটের উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, সেটা করেছেন।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, অর্থ প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে মোমেন, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের মোতাহার হোসেন মোল্লা, স্বেচ্ছাসেবক লীগের পঙ্কজ দেবনাথ, যুব মহিলা লীগের নাজমা আকতার, যুবলীগের ফজলুল হক আতিক, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন প্রমুখ। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদের যৌথভাবে জনসভা পরিচালনা করেন।

জনসভা মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, তৌফিক-ই-ইলাহী, আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, সংসদ সদস্য শেখ হেলাল, সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপদফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবির কাওছার, গোলাম কবির রব্বানি চিনু, আনোয়ার হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম