টিসিবির পণ্য ক্রয়ে মানুষের দীর্ঘ লাইন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
টিসিবির পণ্য কিনতে মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুর শাহ আলী মাজারের সামনে মানুষের দীর্ঘ সারি। বাজারে নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যে নাভিশ্বাস খেটে খাওয়া মানুষের -যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানীতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে প্রতিদিন মানুষের ভিড় বাড়ছে। সকাল থেকে টিসিবির ট্রাকের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াচ্ছেন অনেক সক্ষম ক্রেতাও। উদ্দেশ্য-খাদ্যপণ্য কিনতে বাড়তি ব্যয় কমানো। নিুবিত্ত, দরিদ্র, দিনমজুর বা ভাসমান ক্রেতারা সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন কম দামে সরবরাহ করা টিসিবির পণ্য কিনতে। কিন্তু দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্যের মজুত শেষ হওয়ায় অনেকে ফিরেছেন খালি হাতে। সরেজমিন মঙ্গলবার রাজধানীর প্রেস ক্লাব, মতিঝিল, সবুজবাগ ট্রাক সেল পয়েন্ট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
এসব স্থানে স্বল্পমূল্যের পণ্য নিতে এসেছেন স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর-দূরান্তের নিু আয়ের মানুষ। তবে সহজেই এই ভর্তুকি মূল্যের পণ্য পাওয়া যায় না। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে একসময় সিরিয়াল এলেও দেখা গেছে, ডাল আছে তো তেল নেই। আবার মানুষের দীর্ঘ সারি শেষ হওয়ার আগেই বিক্রি শেষ হয়ে যায় টিসিবির দৈনিক সরবরাহকৃত পণ্য।
টিসিবি সূত্র জানায়, বাজারে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে টিসিবি অষ্টম কিস্তিতে সারা দেশে ৪০০-৪৫০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা শুক্রবার বাদে ২২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার পর্যন্ত চলবে। এ দফায় প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ৬৫ টাকা করা হয়েছে, যা আগে ৬০ টাকায় বিক্রি করা হতো। একজন ক্রেতা প্রতি কেজি চিনি ৫৫, মসুর ডাল ৬৫, সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১১০ এবং পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩০ টাকায় কিনতে পারছেন। সর্বনিু দুই থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি পেঁয়াজ, দুই কেজি মসুর ডাল, দুই কেজি চিনি ও দুই লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পারছেন একজন ভোক্তা।
টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ূন কবির যুগান্তরকে বলেন, ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি কার্যক্রমে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। তবে এবার বাজার দরের সঙ্গে দাম সমন্বয়ের জন্য ডালের দাম ৫ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে। সামনে ডালের দাম কমলে টিসিবি যেখান থেকে কিনে এনে বিক্রি করে, সেখানে কম দামে পেলে আবারও দাম কমিয়ে বিক্রি করবে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টিসিবির খোলা ট্রাক থেকে পণ্য নিতে আসা আশা আক্তার বলেন, এখানে কম দামে পণ্য পাওয়া যায়। এজন্য সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। শেষ পর্যন্ত ভাগ্য সহায় হয়েছে। সিরিয়ালে আমার পালা এলে বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে পণ্য কিনতে পেরেছি। তবে আগেভাগে মজুত শেষ হওয়ায় অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে কিনতে পারেননি। তাই সরবরাহ বাড়িয়ে বিক্রি করা উচিত। যাতে সবাই কিনতে পারেন।
মতিঝিলে টিসিবির খোলা ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে আসা হাবিবুল্লাহ জানান, কম দামে পণ্য কিনতে এসেছি। তবে অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও কিনতে পারিনি। শুনেছি কালও তারা এখানেই বসবে। তাই কাল আগেভাগেই এসে লাইনে দাঁড়াব। কারণ এখান থেকে পণ্য নিলে বাজারের চেয়ে অনেক কম দামে পাওয়া যাবে। ট্রাকে বেশি পণ্য থাকলে এমন ভোগান্তি আর পোহাতে হতো না।
একই স্থানে টিসিবির পণ্য কিনতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা মো. রাকিব বলেন, টিসিবির পণ্যে মান আগের তুলনায় ভালো হয়েছে। বিশেষ করে তেল ও ডাল খুবই মানসম্মত। আবার দামও কম। তাই সুযোগ পেয়ে কম দামে পণ্য কিনলাম। আমার মতো অনেকেই টিসিবির পণ্য কিনে নিচ্ছে।
মতিঝিলে ট্রাক সেলের দায়িত্বে থাকা টিসিবির এক পরিবেশক জানান, পর্যাপ্ত পণ্যের মজুত না থাকায় অনেক মানুষকে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছে।
