২০২৫ সালের মধ্যে মোটরসাইকেলের বাজার বহুগুণ বেড়ে যাবে
যুগান্তর : সাক্ষাৎকার
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে উপনীত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের উন্নয়নের লক্ষ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে মোটরসাইকেল। গত বছর বাংলাদেশে ৫ লাখের বেশি মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে; যার মধ্যে রানারের শেয়ার প্রায় ৫ শতাংশ। রানার অটোমোবাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও রিয়াজুল হক চৌধুরী যুগান্তরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটিই জানিয়েছেন
যুগান্তর: বাংলাদেশের যাতায়াতব্যবস্থায় মোটরসাইকেল গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছে। এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে কিছু বলুন।
অমিত সম্ভাবনার দেশ বাংলাদেশ। যাতায়াতব্যবস্থা যে কোনো দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে উপনীত হয়েছে। সেক্ষেত্রে গ্রাম এবং শহরের উন্নয়নের লক্ষ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে মোটরসাইকেল। গত বছর বাংলাদেশে ৫ লাখের বেশি মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে; যার মধ্যে রানারের শেয়ার প্রায় ৫ শতাংশ। বৈশ্বিক অর্থনীতি ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিক ধারায় ফিরে এলে ২০২৫ সালের মধ্যে মোটরসাইকেলের বাজার বহুগুণ বেড়ে যাবে।
যুগান্তর: মোটরসাইকেল শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে কী কী সমস্যা মোকাবিলা করছে?
বাংলাদেশ সরকার মোটরসাইকেল শিল্প বিস্তারের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ৫০০ সিসি পর্যন্ত উৎপাদনের অনুমোদন দিয়েছে। মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা বা (ইধপশধিৎফ ষরহশধমব) এখনো সেভাবে গড়ে ওঠেনি; যা মোটরসাইকেল শিল্পের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া দক্ষ লোকবলের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। যেহেতু এ শিল্পের কাঁচামাল আমদানিনির্ভর; বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা আমাদের শিল্পকে বিভিন্ন চ্যালেজের সম্মুখীন করেছে।
যুগান্তর: দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে মোটরসাইকেল খাতের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আপনার মতামত দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
খুচরা যন্ত্রাংশ উৎপাদনের কারখানা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পলিসি প্রণয়ন ও প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্বল্পসুদে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মোটরসাইকেল শিল্প প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও দক্ষ লোকবল গড়ে তোলার জন্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।
যুগান্তর: মোটরসাইকেলচালক এবং আরোহীরা বর্তমানে নানাবিধ সমস্যার মোকাবিলা করছে। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় কী কী?
অসাবধানতাবশত মোটরসাইকেল চালানোর কারণে দুর্ঘটনার হার বেড়েছে। যার ফলে সরকার আইনের বিধিনিষেধের সঠিক অনুসরণ না করলে এবং সেই ব্যবস্থাগুলো না মেনে চললে যে কোনো যানবাহনের ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার হার বেড়ে যায়। সব ক্ষেত্রে মোটরসাইকেল চালকদের দোষ, তা ঢালাওভাবে বলা যায় না। চালকদের বেপরোয়া গতিতে চালানো এবং ড্রাইভিংসংক্রান্ত সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণেও দুর্ঘটনা বাড়ছে। সেক্ষেত্রে রানার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, রানারই একমাত্র কোম্পানি 4s-এর ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে- SALES, SERVICE,SPARE ও SAFETY কে গুরুত্ব দিয়ে আমরা বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছি।
যুগান্তর: মোটসাইকেল চালকদের প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে কিছু বলুন।
আমরা নিজস্ব উদ্যোগে বিভিন্ন জেলায় ড্রাইভার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকি। রানার মহিলাদের জন্যও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে দীর্ঘদিন থেকেই। ঢাকার লিলি রাইডস এবং চট্টগ্রামে স্বস্তির সঙ্গে যৌথভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সবাই এগিয়ে এলে এ ক্ষেত্রে আরও ভালো হবে বলে মনে করি।
যুগান্তর: ওভার স্পিড এবং সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবে চালকরা দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে?
দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভ‚মিকা রাখে সচেতনা। সচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা অব্যাহত রেখেছি। আমরা প্রতিটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে সচেতনামূলক বকুলেট সরবরাহ করে থাকি।
এ ছাড়া বাইকারদের অনুরোধ করব, মানসম্পন্ন হেলমেট এবং সেলফ্টি গার্ড পরিধান করার জন্য। আপনারা সবাই জানেন ‘রানার’ অটোমোবাইলস্ বিশ্বের নাম্বার ১ (ঙহব) হেলমেট অঠে আমদানি ও বাজারজাত করছে। সব চালককে অনুরোধ করছি, মানসম্মত ঝধভবঃু মঁধৎফ পরিধান করে বাইক চালান।
যুগান্তর: দেশের পলি এলাকায় যেখানে কোনো যানবাহন যেতে পারে না, সেসব এলাকায় মোটরসাইকেল সাধারণ মানুষের যাতায়াতে সহায়ক হতে পারে। এ বিষয়ে মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণ মানুষের আর কী সুবিধা দিতে পারে?
পলি এলাকায় মোটরসাইকেল সহজলভ্য করার জন্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সারা বাংলাদেশে ২৬৮টি সেলস্ পয়েন্ট রয়েছে রানারের। রানারই একমাত্র ২৪ মাসের সহজ কিস্তিতে মোটরসাইকেল বিক্রি করছে আরও বেশি সহজলভ্য করার জন্য। আমরা চাই যোগাযোগব্যবস্থার সুফলতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।
