Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

দ্রুত যাতায়াতের জন্য

রাইড শেয়ারিং অ্যাপস

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২২, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং ২০১৬ সালের ৭ মে ‘ঝযধৎব অ গড়ঃড়ৎপুপষব’ বা ঝঅগ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। একই বছরের অক্টোবরে উবার বাংলাদেশে এবং নভেম্বর পাঠাও কার্যক্রম শুরু করে তাদের রাইড শেয়ারিং সেবা। বাংলাদেশে মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং-এর জনপ্রিয়তা দেখে, উবার তাদের বাইক রাইডশেয়ারিং সার্ভিস টনবৎ গড়ঃড় চালু করেছে ২০১৭ সালের শেষদিকে। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (চজও)-এর একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৮ সালে দেশের পরিবহণ খাতের ২৩ শতাংশ দখল করেছিল রাইড শেয়ারিং শিল্প। প্রতি সপ্তাহে ২ হাজার ৫০০ জন রাইডার নিবন্ধন করার মাধ্যমে শুধু ২০১৮ সালে প্রায় ১ লাখ রাইডার উবারের সঙ্গে অংশীদারত্ব করেছেন। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং স্টার্টআপগুলো ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম এবং সিলেটের মতো বিভিন্ন শহরে তাদের কার্যক্রম বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণ করছিল। লকডাউনের কারণে রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফরমগুলো সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দীর্ঘ সময় তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছিল। লকডাউন তুলে নেওয়ার পর এবং নতুন নিরাপত্তা নীতি ঘোষণার পর এ প্ল্যাটফরমগুলো তাদের কার্যক্রম আবার শুরু করেছে। সেসময় অনেক যাত্রী ও রাইডারকে অ্যাপ ব্যবহার না করে রাইড শেয়ার করতে দেখা গেছে।

লকডাউনের আগেও প্রায়ই দেখা যেত রাইডাররা কোনো অ্যাপ ব্যবহার না করেই ট্রিপ দিচ্ছেন। কিন্তু লকডাউনের পুরো সময়কালে, যে রাইডাররা রাইড শেয়ারিংয়ের ওপর নির্ভর করে তারা অ্যাপ ব্যবহার না করেই যাত্রীদের রাইড শেয়ারিং সেবা দিয়েছেন।

লকডাউন তুলে নেওয়ার পরও এভাবে রাইড শেয়ার করার প্রবণতা কমেনি এবং এ হার ক্রমাগত বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, কিছু রাইডার অ্যাপের বাইরে রাইড দিচ্ছেন; কিন্তু অ্যাপের ব্যবহার পুরোপুরি ত্যাগ করছেন না। অনেকেই এমন পরিস্থিতিকে দেশের রাইড শেয়ারিং শিল্পের টেকসইয়ের জন্য হুমকি হিসাবে দেখছেন। এ কারণেই দেশের অন্যতম মূল্যবান স্টার্টআপ পাঠাও তাদের নতুন ক্যাম্পেইন চালু করেছে। ২০১৮ সালে প্রকাশিত ‘রাইড শেয়ারিং সার্ভিস পলিসি’ অনুসারে, একজন গাড়ির মালিক শুধু একটি রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফরমে নিবন্ধন করতে পারেন, যা তাদের শুধু সেই নির্দিষ্ট প্ল্যাটফরমের মাধ্যমেই বৈধভাবে রাইড শেয়ার করতে দেয়। অন্য একটি নিয়ম অনুযায়ী গাড়ির মালিক অন্তত এক বছরের জন্য নিবন্ধিত না হলে রাইড শেয়ারিং শুরু করতে পারবেন না।

বাংলাদেশে ব্যক্তিগত গাড়ি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা বেআইনি। কিন্তু একদিকে অনেকের পক্ষে এ বিধিবিধানগুলো অনুসরণ করা অসম্ভব, অন্যদিকে, নিয়ম এবং নীতিগুলোর প্রয়োগ প্রায় অস্তিত্বহীন। ফলস্বরূপ, রাইডারদের বিভিন্ন প্ল্যাটফরমে সেবা প্রদানের বিকল্প রয়েছে, সেই সঙ্গে কোনো প্ল্যাটফরম ব্যবহার না করেই পরিষেবা প্রদানের বিকল্প রয়েছে। নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ যদি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্য সুবিধাজনক উপায়ে রাইডশেয়ারিং নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় এবং সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রয়োগ করে তবে অনেক সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, রাইডশেয়ার করা আমার অনেক সময় বাঁচায়, আমি সময়মতো যে কোনো জায়গায় পৌঁছাতে পারি।

বেশির ভাগ রাইডার অভিযোগ করেন যে অ্যাপগুলো অত্যন্ত উচ্চ হারে কমিশন নেয়। রাইডাররা এ চার্জ কমিয়ে ৫-১০ শতাংশ করার দাবি জানিয়ে আসছে। যদিও, উবারের ক্ষেত্রে কমিশন কাঠামো বিশ্বব্যাপী একই। Uber, Lyft এবং OLA ছাড়াও অন্যান্য রাইড শেয়ারিং অ্যাপগুলোর মধ্যে ২০ শতাংশ কমিশন চার্জ করে। কিছু অঞ্চলে OLA ১৮ শতাংশ কমিশন চার্জ করে।

রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফরমগুলো সাধারণত ব্যবহারকারীর পিকআপ অবস্থানের ১-১.৫ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা রাইডারদের পিকআপের অনুরোধ পাঠায়। কখনো কখনো রাস্তার বিপরীত দিক থেকে রাইডাররা অনুরোধ গ্রহণ করে। যদিও কয়েক কিলোমিটারের দূরত্ব খুব বেশি নয়, ঢাকা বা চট্টগ্রামের মতো যানজটপ্রবণ শহরগুলোয় ব্যবহারকারীর পিকআপের অবস্থানে পৌঁছাতে রাইডারদের অনেক সময় লাগে। এ কারণেই যে রাইডাররা বাসস্ট্যান্ড এবং শপিংমলের মতো ব্যস্ত জায়গায় যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করছেন তারা কোনো অ্যাপ ব্যবহার না করেই সরাসরি যাত্রীদের তুলে নেয়।

একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, রাইড শেয়ার করা আমার অনেক সময় বাঁচায়, আমি সময়মতো যে কোনো জায়গায় পৌঁছাতে পারি। অদক্ষ বাইকচালক এবং বেপরোয়া ড্রাইভিংকে প্রায়ই বাংলাদেশে ট্রাফিক দুর্ঘটনার সাম্প্রতিক বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে উলে­খ করা হয়। প্রতিবছর ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ হারগুলোর মধ্যে একটি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম