পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে আজ
লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ), শিবচর ও টেকেরহাট (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পর্যন্ত সাড়ে ৪১ কিলোমিটার রেলপথ। পদ্মা সেতু হয়ে এ রেলপথে আজ মঙ্গলবার পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে। দুপুর ১২টার দিকে ভাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে একটি গ্যাংকার ট্রেন এবং সাত বগিবিশিষ্ট একটি যাত্রীবাহী স্পেশাল ট্রেন মাওয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। পদ্মা সেতু হয়ে বেলা ২টার দিকে মাওয়া স্টেশনে ট্রেন দুটি পৌঁছবে। এজন্য রেল মন্ত্রণালয় সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে। এ নিয়ে পদ্মার দুই পারের মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাস বইছে। নয় মাস আগে গত বছর ২৬ জুন পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহম্মেদ জানান, গ্যাংকার ট্রেনটির মাধ্যমে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত সাড়ে ৪১ কিলোমিটার রেলপথ পরীক্ষা করা হবে। এ পথের ডিজাইন স্পিড ১২০ কিলোমিটার থাকলেও ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে পরীক্ষামূলক টেস্ট রান চালানো হবে। পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাংকার ট্রেনটি ভাঙ্গা থেকে রওনা হয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে মাওয়া আসবে। এ ট্রেন মূলত রেলপথ পর্যবেক্ষণের কাজে ব্যবহার করা হয়। এ ট্রেনে ভ্রমণ করবেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। নির্মিত রেলপথসহ প্রকল্পের সার্বিক কাজ তিনি পরিদর্শন করবেন। তিনি আরও জানান, আগামী আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। ২০২৪ সালের মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে যশোর পর্যন্ত পুরো রেলপথ চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
ভাঙ্গা স্টেশন মাস্টার মো. শাহজাহান জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ভাঙ্গা স্টেশন থেকে একটি গ্যাংকার ট্রেন এবং সাত বগিবিশিষ্ট যাত্রীবাহী একটি স্পেশাল ট্রেন মাওয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। আগে গ্যাংকার ট্রেন ছাড়া হবে, এরপর স্পেশাল ট্রেন যাত্রা করবে। স্পেশাল ট্রেনে রেলমন্ত্রী, রেল লিংক প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা এবং বিশেষ অতিথিরা থাকবেন। মাওয়া পৌঁছানোর পর সেখান থেকে সড়কপথে তারা ঢাকায় ফিরে যাবেন। তিনি আরও জানান, মাওয়া স্টেশনে পৌঁছানোর পর গ্যাংকার ট্রেন সেখানে থেকে যাবে। আর স্পেশাল ট্রেনটি মাওয়া থেকে ভাঙ্গা স্টেশনে ফিরে আসবে।
পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের খবর শুনে খুশি পদ্মাপারসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব সহজ হয়ে গেছে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এখন সকালে ঢাকায় গিয়ে বিকালে ফিরে আসেন। ট্রেন চালু হলে কম সময়ে আরও সহজে ও কম টাকায় ঢাকা ঘুরে আসা যাবে।
শিবচর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আতাহার হোসেন ব্যাপারী জানান, পদ্মা সেতু ও রেল প্রকল্পের জন্য এলাকার মানুষ জমি দিয়েছে। অনেকের ভিটাবাড়ি পর্যন্ত দিতে হয়েছে। কিন্তু এতে এলাকার মানুষের কোনো কষ্ট নেই। পদ্মা সেতু নির্মাণ ও রেললাইন স্থাপনের মধ্য দিয়ে দেশের প্রতিটি এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সহজ হয়েছে।
