Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

নোয়াখালীতে বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

ঢাকায় মা-মেয়েকে হত্যার অভিযোগে বাবা গ্রেফতার

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন ও নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নোয়াখালীতে বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

প্রতীকী ছবি

নোয়াখালীতে বাসায় ঢুকে মা ও মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহর মাইজদীর ৫নং ওয়ার্ডের গুপ্তাংকের বার্লিংটন মোড়সংলগ্ন কচি মিয়ার বাসার দ্বিতীয় তলায় নৃশংস এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন নূর নাহার বেগম (৩৫) ও মেয়ে স্থানীয় হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ফাতেমা আজিম প্রিয়ন্তী (১৬)। পুলিশ ঘাতককে গ্রেফতার করেছে। তার নাম আলতাফ হোসেন (২৮)। বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে। ঘাতককে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, পরকীয়ার জেরে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে রাজধানীর বাড্ডায় মা-মেয়েকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মায়ের নাম মাহমুদা হক বৃষ্টি (৩৩) ও মেয়ে সানজা মারোয়া (১০)। এ ঘটনায় বৃষ্টির স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

নোয়াখালীতে মা-মেয়ের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করেন সেখানকার পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, জোড়া খুনের পেছনে রয়েছে পরকীয়া। ভিকটিম নূর নাহার বেগমের সঙ্গে রং নম্বরে কলের সূত্র ধরে ওমান প্রবাসী আলতাফের পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর আলতাফকে ওমান থেকে দেশে এসে ব্যবসা করার জন্য বলেন নূর নাহার। ব্যবসার পুরো মূলধন এবং তার সব দেনা বহন করারও আশ্বাস দেন তিনি। আশ্বাস পেয়ে ১ সপ্তাহ আগে আলতাফ ওমান থেকে দেশে চলে আসেন। এরপর তিনি নূর নাহার বেগমের বাসায় গিয়ে ব্যবসা করার জন্য টাকা চান। কিন্তু টাকা দিতে রাজি হননি নূর নাহার। এরপর আরও কয়েকবার টাকার জন্য যান আলতাফ। সর্বশেষ বুধবার সকাল ১০টার দিকে পুনরায় টাকার জন্য আলতাফ মাইজদী শহরের বার্লিংটন মোড়ের হক মঞ্জিলে যান। সেখানে টাকা চাইলে নূর নাহার দিতে অস্বীকার করেন এবং আলতাফকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার হুমকি দেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আলতাফকে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিতে উদ্যত হন নূর নাহার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আলতাফ সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে নূর নাহারকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। মায়ের চিৎকার শুনে মেয়ে ফাতেহা আজিম প্রিয়ন্তী এগিয়ে এলে আলতাফ তাকেও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। আহত হয়ে প্রিয়ন্তী দৌড়ে নিচতলায় ভাড়াটিয়ার বাসার দরজায় ধাক্কা দিলে ভাড়াটিয়া দরজা খুলে দেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়ন্তী ডাইনিং রুমের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে। প্রিয়ন্তীর পিছু পিছু আলতাফ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে নূর নাহার ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর স্থানীয়রা প্রিয়ন্তীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে রওয়ানা দেন। কিন্তু পথেই তার মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানায়, আলতাফকে থানা হেফাজতে নিয়ে বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে ঘটনা খুলে বলে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।

জানা যায়, নিহত নূর নাহারের স্বামী ফজলে আজিম শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন। সকাল ৯টার দিকে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে যান। সাড়ে ১০টার দিকে জানতে পারেন তার বাসায় ডাকাত ঢুকেছে। তাৎক্ষণিক তিনি বাসায় গিয়ে স্ত্রীর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এর আগেই তার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যান এলাকাবাসী।

এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে প্রিয়ন্তীর শিক্ষালয় হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। তারা হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানায়।

বাড্ডায় মা-মেয়েকে হত্যার অভিযোগ : মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় মাহমুদা হক ওরফে বৃষ্টি ও তার ১০ বছর বয়সি মেয়ে সানজা মারোয়াকে হত্যার অভিযোগে পুলিশ এসএম সেলিম নামে একজনকে আটক করেছে। তিনি বৃষ্টির স্বামী।

জানা যায়, সেলিমের পৈতৃক বাড়ি মেরুল বাড্ডায়। সেখানে বৃষ্টি দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন। সেলিম বেকার। মেয়ে সানজা মেরুল বাড্ডায় একটি মাদ্রাসায় পড়ত। বৃষ্টির মামা রাসেল সিকদার জানান, ফোনে তিনি বৃষ্টির অসুস্থতার কথা জানতে পারেন। এরপর তিনি মেরুল বাড্ডায় বাসায় গিয়ে বৃষ্টি ও তার মেয়ে সানজাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এছাড়া বৃষ্টির আট মাস বয়সি একটি শিশু রয়েছে। ওই সময় শিশুটি খাটে শুয়ে ছিল। পরে তিনি ও সেলিম মিলে বৃষ্টি ও সানজাকে স্থানীয় ফরায়েজি হাসপাতালে নিয়ে যান।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাড্ডা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নূর আলম মাসুম সিদ্দিকী জানান, পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে সেলিমকে আটক করেছি। মামলা হলে গ্রেফতার দেখানো হবে। তাকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। সে বলছে, তারা কিছু খেয়ে মারা গেছে। কিন্তু লাশ দুটিতে বিষ কিংবা কিছু খেয়ে আত্মহত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আমাদের ধারণা, তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পুরো বিষয় পরিষ্কার হবে।

নোয়াখালী মা মেয়ে কুপিয়ে

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম