তলে তলে আপস হয়ে গেছে বক্তব্য ভুল ছিল না: ওবায়দুল কাদের
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
তলে তলে আপস হয়ে গেছে বলে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেটি ভুল বলেননি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
রাজধানীর আমিনবাজারে মঙ্গলবার ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, তলে তলে আপস হয়ে গেছে। আমেরিকার দিল্লিকে দরকার। দিল্লি আছে, আমরাও আছি। শেখ হাসিনা সবার সঙ্গে ভারসাম্য করে ফেলেছেন। আর কোনো চিন্তা নেই। যথাসময়ে নির্বাচন হবে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এ বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গতকাল সেই বক্তব্য সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিলেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ২৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সাক্ষাতের প্রসঙ্গ তোলেন।
কাদের সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আমি কথাটা যা বলেছি, সেটি কি আপনারা অনুধাবন করছেন না? নিরাপত্তা উপদেষ্টার (মার্কিন) সঙ্গে যে বৈঠকটি, এ বৈঠকের বিষয়ে এক সপ্তাহ পর্যন্ত কেউ জানে না। তাহলে তলে তলে অনেক কিছু হচ্ছে, আমি যে কথা বলেছি, আমি তো ভুল বলিনি।
ওবায়দুল কাদের দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, জো বাইডেনের (যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট) সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে (সায়মা ওয়াজেদ পুতুল) যে সেলফি তুলেছেন, সেটা তো এখন বলাবলি হচ্ছে। তখনো তো কিছু কথা হয়েছে। এটা তো আর প্রকাশ্যে হয়নি। এটা কোনো কাগজেও আসেনি, মিডিয়ায়ও আসেনি। মঙ্গলবার আমিনবাজারের সমাবেশে তার আলোচিত বক্তব্য সম্পর্কে আত্মপক্ষ সমর্থন করে সেতুমন্ত্রী বলেন, তলে তলে আপস মানে দুদেশের সম্পর্কোন্নয়ন বা সম্পর্ক ভালো আছে, সেটা বোঝাতে চেয়েছি।
ভারত সম্পর্কে দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের সহযোগিতায় ক্ষমতায় থাকার উদ্ভট চিন্তা কখনো মাথায় আসেনি।
বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবরা আগ বাড়িয়ে অনেক কথা বলেন। সেটির সঙ্গে আমাদের যে উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য, তার কোনো মিল নেই। আপনারাই বলুন, ভারত কখনো আমাদের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রে হস্তক্ষেপ করেছে? কিংবা কোনো নির্বাচনে? তাহলে এখানে আমরা ভারতের সহযোগিতায় ক্ষমতায় থাকব, এরকম উদ্ভট চিন্তা, আজব চিন্তা আমাদের মাথায় আসেনি। আমরা বুঝি সম্পর্কটা ভালো হলে অনেক দিক থেকেই ভালো।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দিল্লির সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব পরীক্ষিত। ১৯৭১ সাল থেকে আমাদের এ সম্পর্ক আছে। স্ট্র্যাটেজিক পলিসিতে আমাদের দিল্লিকে দরকার, আবার দিল্লিরও আমাদেরকে দরকার। মাঝখানে ২১ বছর সম্পর্কের অবনতি আমাদের কারও জন্য ভালো হয়নি। বিশেষ করে ভারত অনেক বড় দেশ। তাদের ক্ষতি অতটা নেই যতটা ক্ষতি আমাদের হয়েছে। তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকলে আমাদের আরও অনেক ভালো হতো। যেমন ধরুন বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার বাণিজ্য বহুগুণ বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকা এটা আমাদের জন্য ভালো। তবে এই নয় যে আমরা অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করব। একটা দিক হচ্ছে যে, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো থাকলে আমরা কতটা লাভবান হই এটা কিন্তু গত কয়েক বছরে পরিষ্কার হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এর অর্থ এই নয় যে আমরা অন্যদের সঙ্গে বৈরী করব তাও নয়। যেমন আজ আমরা পরমাণু ক্লাবের সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করছি। এখানে তো রাশিয়া সহযোগিতা রয়েছে। এরপর ২৩ অক্টোবর আমাদের মেট্রোরেল আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এটাও জাপানের সহযোগিতায়। এখানে তাদের আর্থিক সহযোগিতাও রয়েছে। চট্টগ্রামে আমাদের আরেকটা মেগা প্রজেক্ট নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব টানেল ... এখানেও চীনের সহযোগিতা ও সাহায্য রয়েছে। কাজেই আমাদের নীতিটাই হলো সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখা এবং কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়।
