সাক্ষাৎকার : মনিকা নাজনীন ইসলাম
যমুনা ইলেকট্রনিক্স মানের প্রশ্নে আপসহীন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
২০১৪ সালে যাত্রা শুরু, সেই থেকে আজ অবধি মানের প্রশ্নে আপসহীন যমুনা ইলেকট্রনিক্স। সাশ্রয়ী দামে সর্বোচ্চ মানের ইলেকট্রনিক্স পণ্য ক্রেতার হাতে পৌঁছে দিতে কাজ করেছি। ক্রেতার ভালোবাসায় তাতে সুফলও পেয়েছি। দীর্ঘ এই যাত্রায় যমুনা ইলেট্রনিক্স এখন দেশের নাম্বার ওয়ান ব্র্যান্ড। দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে যমুনার ডিলার শোরুম এবং নিজস্ব শোরুম। ভবিষ্যতে যমুনাকে বৈশ্বিক ব্র্যান্ডে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি। ইলেকট্রনিক্স শিল্পের সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে যুগান্তরকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন যমুনা গ্রুপের গ্রুপ পরিচালক মনিকা নাজনীন ইসলাম।
যুগান্তর : ঈদ উপলক্ষ্যে আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতি কেমন?
মনিকা ইসলাম : ঈদকে কেন্দ্র করে সারা দেশের অর্থনীতি চাঙা থাকে। পোশাক-পরিচ্ছদের সঙ্গে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের চাহিদা ও বিক্রি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। এ বর্ধিত চাহিদা পূরণে এগিয়ে রয়েছে দেশীয় কোম্পানিগুলো। তাদের মধ্যে যমুনা ইলেকট্রনিক্স অন্যতম। সময়ের পথপরিক্রমায় বিদেশি ব্র্যান্ডের পণ্যকে পেছনে ফেলে ‘যমুনা’ ক্রেতাদের কাছে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে। রোজা এবং ঈদে সাধারণত গ্রাইন্ডার, ব্লেন্ডার, রাইস কুকার, মাইক্রোওয়েভ ওভেনসহ নানাবিধ হোম অ্যাপ্লায়েন্সের চাহিদা বাড়ে। এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে ফ্রিজ, টিভি, এসিসহ ইলেকট্রনিক্স পণ্যের চাহিদা এ সময় বৃদ্ধি পায়। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো নানারকম অফার আর বিক্রয় কৌশল অবলম্বন করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে।
যুগান্তর : গত এক বছরে এসিসহ হোম অ্যাপ্লায়েন্সের ব্যবহার কেমন বেড়েছে? ব্যবহার বৃদ্ধির পেছনে কী কী বিষয় কাজ করেছে?
মনিকা ইসলাম : অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দেশব্যাপী বিদ্যুৎ সংযোগ এবং মানুষের জীবনযাপনে পরিবর্তনের ফলে প্রতিনিয়ত গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের হোম অ্যাপ্লায়েন্স। এক সময়ে যেটি ছিল নিতান্ত শখের জিনিস, বর্তমানে ব্যস্ত জীবনে সেটি প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। ফলে প্রাত্যহিক জীবনে এসব হোম অ্যাপ্লায়েন্সের ব্যবহার দিন দিন এ শিল্পকে বিকশিত করছে।
তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। জীবনযাত্রার মানের উন্নতি এবং মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ার ফলে শহর থেকে গ্রাম অঞ্চলেও এসির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার টেকনোলজি হওয়ার কারণে মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নমধ্যবিত্ত অনেকেই এখন এসি ব্যবহার করছেন।
যুগান্তর : যমুনা পণ্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য এবং কী কী সুযোগ-সুবিধা রয়েছে?
মনিকা ইসলাম : ইলেকট্রনিক্স হোম অ্যাপ্লায়েন্স জগতে যমুনা ইলেকট্রনিক্সের পথচলা শুরু ২০১৪ সালে। যদিও দেশীয় বাজারে রেফ্রিজারেটর ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবসায় আমাদের কোম্পানিগুলো দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছে। কিন্তু ভালো মানের পণ্যের সরবরাহের ঘাটতি থেকেই বাংলাদেশের কিংবদন্তি শিল্প উদ্যোক্তা, যমুনা গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনে করলেন যে, ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে গ্রাহকের কাছে সেরা পণ্যটি পৌঁছে দিতে হবে। সে লক্ষ্যে যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইলস বৃহৎ পরিসরে ইলেকট্রনিক্স হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদন শুরু করে। আধুনিক যন্ত্রপাতি, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, উন্নত কাঁচামাল ও প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনী উৎকর্ষ সাধনের ফলে যমুনা আজ দেশের ১ নম্বর কোয়ালিটি ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড। আমাদের উৎপাদিত হোম অ্যাপ্লায়েন্সের মধ্যে রয়েছে-রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, স্মার্ট টিভি, এসি, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, রাইস কুকার, ব্লেন্ডার, গ্রাইন্ডার, ইলেকট্রিক কেটলি, আয়রন, গ্যাস স্টোভসহ অন্যান্য স্মল অ্যাপ্লায়েন্সেস।
যুগান্তর : পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে ভোক্তাদের কী সুবিধা দিচ্ছেন?
মনিকা ইসলাম : আমাদের রয়েছে ২০ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে সহজ কিস্তি সুবিধা। ভোক্তারা আমাদের যমুনা প্লাজা শোরুম থেকে ৬ মাস, ৯ মাস, ১২ মাস মেয়াদি কিস্তিতে যমুনার সব ইলেকট্রনিক্স পণ্য ক্রয় করতে পারছেন। এছাড়া ক্রেডিট কার্ডে ব্যাংক ইএমআই সুবিধাও রয়েছে।
যুগান্তর : আমদানি বিকল্প শিল্প হিসাবে স্থানীয় প্রস্তুতকারকরা কেমন করছে?
মনিকা ইসলাম : এক সময়ের পুরোপুরি আমদানিনির্ভর এই শিল্পে বর্তমানে দেশীয় কোম্পানিগুলো আধিপত্য বিস্তার করে আছে। তাদের মধ্যে যমুনা ইলেকট্রনিক্স অন্যতম। নিত্যনতুন চাহিদা ও ক্রেতা সন্তুষ্টির কথা মাথায় রেখে যমুনা ইলেকট্রনিক্স অবিরত কাজ করছে। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় আমরা যেসব কাঁচামাল, উদ্ভাবন ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করি, সেটি দেশের আর কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই। যমুনা ইলেকট্রনিক্স তার সেরা পণ্যটি যুক্তিসঙ্গত মূল্যে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। ঈদ উপলক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ক্রেতাসাধারণ তাদের প্রয়োজন অনুসারে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা আমাদের প্লাজা, ডিলার কিংবা অনলাইনে তাদের কাঙ্ক্ষিত পণ্যটি ক্রয় করতে পারবেন।
যুগান্তর : ঈদে বিশেষ অফার থাকছে কি না?
মনিকা ইসলাম : ঈদের খুশি বেশি বেশি করতে যমুনা ইলেকট্রনিক্স নিয়ে এসেছে ডাবল খুশি অফার। এ ঈদে যমুনা ইলেকট্রনিক্সের পণ্য ক্যাশে কিংবা সহজ কিস্তিতে ক্রয় করে রেজিস্ট্রেশন করলেই প্রতি সপ্তাহে ভোক্তারা পাবেন মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, এসি, স্মার্ট টিভি, ওভেনসহ অসংখ্য হোম অ্যাপ্লায়েন্স। এছাড়া সর্বোচ্চ ৩০% নগদ ডিসকাউন্ট তো থাকছেই কাস্টমারদের জন্য।
যুগান্তর : যমুনা ইলেকট্রনিক্সের পণ্যের বর্তমান মূল্য, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ও পণ্য পরিচিতি সম্পর্কে কিছু তথ্য দিন।
মনিকা ইসলাম : ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় যমুনা ইলেকট্রনিক্স সদাতৎপর। ক্রেতাদের চাহিদা অনুসারে বিভিন্ন সাইজ, রং, ধারণ ক্ষমতা ও মূল্য নির্ধারণ করা হয়। আমাদের ভিসিএম, গ্লাস ডোর ও স্মার্ট নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটরগুলোর মূল্য ২৬ হাজার ৮০০ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার ৯৬০ টাকা; নন-ইনভার্টার, ইনভার্টার, ডুয়াল ইনভার্টার এসির মূল্য ৪৫ হাজার ৮০০ থেকে ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা; ২৪ ইঞ্চি থেকে ৫৫ ইঞ্চি এলইডি টিভির মূল্য ১৩ হাজার ৮০০ থেকে ৭৯ হাজার ৮০০ টাকা; মাইক্রোওয়েভ ওভেন ১০ হাজার থেকে ২১ হাজার ২০০ টাকা, গ্যাস স্টোভ, রাইস কুকার, ইন্ডাকশন কুকার, গ্রাইন্ডারসহ হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য এক হাজার ৮০০ থেকে ৫ হাজার ২৫০ টাকা পর্যন্ত।
যুগান্তর : যমুনার বিক্রয়-পরবর্তী সেবা সম্পর্কে কিছু জানান।
মনিকা ইসলাম : যমুনা ইলেকট্রনিক্স গুণে-মানে আজ দেশসেরা ব্র্যান্ড। সাধারণত হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ৭-১০ শতাংশ ত্রুটি থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের একমাত্র ব্র্যান্ড যমুনা যার উৎপাদন ত্রুটি এক শতাংশের নিচে। সুতরাং সর্বোচ্চ গুণগত মানের পণ্যটি আমরা গ্রাহকের হাতে তুলে দিচ্ছি। তারপরও বিক্রয়-পরবর্তী সেবা ইলেকট্রনিক্স পণ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশব্যাপী আমাদের সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। সেখানে ক্রেতা সহজে বিক্রয়-পরবর্তী সেবা নিতে পারবেন। তাছাড়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোতে আমাদের বিক্রয়-পরবর্তী সেবা দ্রুত ও সহজলভ্য করার জন্য ডেডিকেটেড কল সেন্টার রয়েছে, যেটির মাধ্যমে ক্রেতা সহজে সেবা পেতে পারেন।
