কটিয়াদীতে দুই এমপির উপস্থিতিতে সংঘর্ষ
সালিশ বৈঠক পণ্ড : অর্ধশতাধিক আহত
কিশোরগঞ্জ ব্যুরো ও কটিয়াদী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে সংসদ-সদস্যদের (এমপি) উপস্থিতিতে সালিশি বৈঠকে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। বৈঠকে বর্তমান সংসদ-সদস্য সোহরাব উদ্দিন, সাবেক সংসদ-সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ আফজাল হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. মুহাম্মদ মুশতাকুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লায়ন মো. আলী আকবর উপস্থিতি ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার করগাঁও হাইস্কুল মাঠে করগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও গ্রামবাসীর বিরোধ নিষ্পত্তিতে এ সালিশ ডাকা হয়। এ সময় চেয়ার ছোড়াছুড়ির পাশাপাশি লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুপক্ষের লোকজন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা যায়, করগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান নাদিম মোল্লার এক আত্মীয়ের পাওনা টাকা আদায় করতে তার ভাই সুমন মোল্লা ও ভাতিজা ফাহাদ মোল্লা লোকজন নিয়ে রমজান মাসে ভাট্টা গ্রামের আরমান মিয়ার বাড়িতে যান। এ সময় ৯নং ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) মাহবুবুর রহমান পানু বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাস দিলে তারা চলে আসেন। ঘটনার পরদিন পানু মেম্বার ইউনিয়ন পরিষদে গেলে চেয়ারম্যানের ভাই-ভাতিজা তাকে মারধর করে গাছে বেঁধে রাখেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের লোকজনের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়। তাদের মধ্যে সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে বৃহস্পতিবার সংসদ-সদস্য সোহরাব উদ্দিনের নেতৃত্বে এ সালিশ বৈঠক বসে।
বৈঠক চলাকালে করগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি লায়ন মো. সারোয়ার হোসেন বক্তব্য দেওয়ার সময় ইউপি চেয়ারম্যান নাদিম মোল্লার লোকজন উত্তেজিত হয়ে চেয়ার ছুড়ে মারতে থাকেন এবং লোকজনের ওপর হামলা চালান। ফলে সালিশ বৈঠকটি পণ্ড হয়ে যায়।
ইউপি সদস্য পানু জানান, টাকা পাওনাকে কেন্দ্রে করে সুমন ও ফাহাদের নেতৃত্বে আমার ওয়ার্ডের আরমানকে বাড়ি থেকে তুলে নিতে এলে খবর পেয়ে আমি তাদের চলে যেতে বলি এবং বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানাই। এ কারণে চেয়ারম্যানের ভাই-ভাতিজা আমাকে পরিষদে গেলে মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন।
লায়ন মো. সারওয়ার হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান নাদিম মোল্লা একজন সন্ত্রাসী। তার ভাই-ভাতিজাদের অত্যাচারে এলাকার লোকজন অতিষ্ঠ। বৈঠকে তাদের এসব অত্যাচার সম্পর্কে বলার সময় তারা উত্তেজিত হয়ে চেয়ার ছুড়ে মারেন। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আঘাত পেয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চেয়ারম্যান নাদিম মোল্লার মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করেও বন্ধ পাওয়া যায়।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ আফজাল হোসেন জানান, সালিশ বৈঠকে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা দুঃখজনক। যারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ দাউদ জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় কেউ আহত হননি। কাউকে আটকও করা হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
