Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

নারায়ণগঞ্জ আদালত চত্বর

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে কিলঘুসি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, নারায়ণগঞ্জ ও ফতুল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে কিলঘুসি

একটি হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জের আদালতে হাজিরের পর সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে কিলঘুসি মারা হয়েছে। সোমবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। আদালত চত্বরে তিনি ক্ষুব্ধ আইনজীবী ও কিছু জনতার কিলঘুসির শিকার হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মাদ্রাসাছাত্র হাফেজ সোলাইমান (১৯) হত্যা মামলায় আনিসুল হকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর শেষে আদালত থেকে বের করার সময় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রিমান্ড শুনানি শেষে আদালতের বাইরে বের করে প্রিজন ভ্যানের দিকে নেওয়ার সময় উপস্থিত ছাত্র-জনতা ও কিছু আইনজীবী আনিসুল হককে চর-থাপ্পড় ও কিলঘুসি মারেন। এ সময় তারা ‘স্বৈরাচার’ ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেন। এরপর ছাত্র-জনতা ধাওয়া করলে পুলিশ তাকে দৌড়ে নিয়ে প্রিজন ভ্যানে তোলে। এর আগে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঈনউদ্দিন কাদির শুনানি শেষে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক কাইউম খান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সিদ্ধিরগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্র সোলাইমানকে হত্যা করা হয়। সোলাইমানের ভগ্নিপতি শামীম কবির বাদী হয়ে ২২ আগস্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মন্ত্রী দীপুমনি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক এমপি শামীম ওসমানসহ ৫১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

কাইয়ুম খান জানান, এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আনিসুল হককে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে এজলাস থেকে বের করার সময় পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যে বিক্ষুব্ধ জনতা ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা কিলঘুষি দিয়ে ধাওয়া করলে পুলিশ দৌড়ে আনিসুল হককে দ্রুত প্রিজন ভ্যানে তুলে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে নিয়ে যায়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পণ্ড করার জন্য আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। তারা জনমনে আতঙ্ক তৈরি করে। সেসময় আনিসুল হকের নির্দেশ পেয়ে আসামিরা সড়কে অবস্থানরত ছাত্র-জনতার ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে। তখন মাদ্রাসাছাত্র হাফেজ সোলাইমান গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। 

মামলায় বাদীপক্ষের অপর আইনজীবী আনোয়ার প্রধান বলেন, সোলায়মানকে গুলি করে হত্যার সময় মুহুর্মুহু বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এই হত্যায় কে নির্দেশ দিয়েছে, অস্ত্র-গুলি কীভাবে এলো-সেটির প্রকৃত চিত্র খুঁজে বের করার জন্যই বিচারক আনিসুল হকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। 

সাবেক আইনমন্ত্রীকে কিলঘুষি মারার বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) তারেক আল মেহেদী বলেন, আনিসুল হককে কিলঘুষি মারার বিষয়টি আমার জানা নেই। ভিডিও দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আনিসুল হক

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম