Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

অবস্থান কর্মসূচিতে ইশরাক

দুই উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে

Icon

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দুই উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে

ইশরাক হোসেন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দুই উপদেষ্টার (মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া) পদত্যাগ দাবি করেছেন ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, যদি আমরা আমাদের পক্ষে রায় পাই, সেটি আইনের শাসনের বিজয়, এর বেশি কিছু না। এখানে মেয়র হওয়ার জন্য এই যে পুরো জিনিসটা (আন্দোলন) এভাবে এগোয়নি। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণারও দাবি জানান তিনি। বুধবার রাতে রাজধানীর কাকরাইলে তার সমর্থকদের অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে তিনি এই দাবি জানান। ইশরাক বলেন, যে দাবি নিয়ে আমরা এখানে এসেছি, সেটি হলো, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন। তিনি একটি দলের হয়ে কাজ করেছেন, এটি প্রমাণিত। তিনি আদালত, নির্বাচন কমিশন ও সরকারে হস্তক্ষেপ করেছেন। তাই তার অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। এই পদত্যাগ ছাড়া আমরা এখান থেকে যাব না। 

তিনি বলেন, আরেক ছাত্র নেতা তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, তাকেও পদত্যাগ করতে হবে। আমি উনাদের শুভকামনা করি উনারা পদত্যাগ করে যে রাজনৈতিক দলের সদস্য হয়েছেন বা হতে চান সেখানে সাংগঠনিক রাজনীতি করুন, সরকারের ওপর আর হস্তক্ষেপ চলবে না। 

ইশরাক বলেন, আমরা সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের রোডম্যাপ চাই। এতদিন আমরা নির্বাচনের কথা বললে একটা পক্ষ মনে করত আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি। আসল ব্যাপার হচ্ছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল উড়ে এসে জুড়ে বসা কোনো ছোট দল নয়। 

তিনি আরও বলেন, সরকারের ভেতর থেকে বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে রায় প্রদানের সময়, নির্বাচন কমিশনকে আজকে জিম্মি করার চেষ্টা হয়েছে, সম্পূর্ণ ব্যুরোক্রেসি তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। এই অবস্থায় আমার সঙ্গে যদি এই আচরণ করা হয়, তাহলে যখন জাতীয় নির্বাচন হবে, রাষ্ট্রক্ষমতা পরিবর্তনের প্রশ্ন আসবে, তখন কি আপনারা আশা রাখতে পারেন, তারা এ সরকারে থাকা অবস্থায় নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন হবে। 

ইশরাক বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন-সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান, নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত দেবে তা মানতে হবে। একটি নতুন দল, যাদের নিয়ে তারা আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু দল গঠন করার পর সরকারের মধ্যে এদের অংশ রয়ে গেল। কাজেই নিরপেক্ষ সরকার তারা পাননি। সরকারের মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা চক্রান্ত করছেন-যাতে আগামী নির্বাচনে বিএনপি ভালো করতে না পারে। তিনি জানান, সরকারের ভেতর থেকে বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে। তাহলে কি আশা করা যায়, এই সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে?

তিনি আরও বলেন, তারা (বিএনপি) কি আরেকটা স্বৈরাচারী সরকার তৈরি হতে দিতে পারেন? তারা (বিএনপি) হাসিনাকে যেভাবে বিদায় করেছে, সেভাবে সব স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় করবে।

মেয়রের দায়িত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেয়র বোঝেন না, এই সরকার নিরপেক্ষ নয় তা সবার সামনে উন্মোচিত করাই মুখ্য উদ্দেশ্য। আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমকে পদত্যাগ করতে হবে। তারা পদত্যাগ করে নিজেদের রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করুক। কিন্তু সরকারে থেকে এসব করা যাবে না।

তিনি জানান, পেছনে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। যতদিন দাবি মানা না হবে ততদিন তারা সেখান (সড়ক) থেকে যাবেন না। এটা শুধু মেয়রের চেয়ার বা একজন ব্যক্তির জন্য আন্দোলন নয়। এই আন্দোলনের মাধ্যমে পরিষ্কার হবে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে কিনা। ডিসেম্বরের মধ্যে মানুষ ভোটাধিকার পাবে কিনা। গত সপ্তাহের বুধবার থেকে আন্দোলন চলছে। এ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা রোদে পুড়ে, ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজেও সক্রিয় রয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ন্যায্য অধিকার ও ভোটাধিকার নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান। 

ইশরাক আরও বলেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডিএসসিসির মেয়র পদে তাকে মনোনীত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও গেজেট প্রকাশের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য ফাইল পাঠাতে বাধ্য করা হয়। এই সরকার আওয়ামী লীগ সরকারের মতো সর্বত্র অবৈধ প্রভাব বিস্তার করছে। তাদের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা যায় না। আওয়ামী লীগের মতো এই সরকারকে নতুন করে স্বৈরাচার হতে দেওয়া যাবে না। যদি তারা স্বৈরাচার হয়েও যায়। আওয়ামী লীগের মতো আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে বিএনপি।

তিনি জানান, একটি নতুন দল গঠন হয়েছে। এই দলটির ব্যাপারে আমরা আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু তাদের কার্যক্রম জনগণকে হতাশ করেছে। তাদের প্রতিনিধি সরকারে রয়েছে। এই অবস্থায় ওই সরকার দিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। এজন্য সরকারে থাকা ছাত্রদের দুই প্রতিনিধিকে সরে যেতে হবে। 

তিনি আরও জানান, বিএনপি উড়ে এসে জুড়ে বসা কোনো রাজনৈতিক দল নয়। বারবার নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিচালনা করেছে এই দল। দেশের উন্নয়নে রয়েছে বড় অবদান। এজন্য বর্তমান সরকারকে এই দলের দাবি-দাওয়াগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। কেননা এই দল এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার, উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করে থাকে।


ইশরাক হোসেন

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম