বিক্ষোভ সমাবেশে এনসিপি নেতারা
বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে ইসি
তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) আর সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নেই। এটি এখন বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। এটা বিএনপির মুখপাত্র হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে ঢাকা মহানগর এনসিপি কর্মসূচির আয়োজন করে। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুরে ২টা পর্যন্ত কর্মসূচি চলে। এ সময়ে ইসির নিরাপত্তায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী তার বক্তব্যে বিএনপি, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে নিজেদের লোক বসিয়ে বিএনপি নিজেদের ৩১ দফার কথা ভুলে গেছে। ৩১ দফা হলো জনগণকে বোকা বানানোর কিছু কাগজপত্র।’ বিএনপি ইসিসহ সারা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখল করেছে অভিযোগ করে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘জনগণের করের টাকায় চলা এসব প্রতিষ্ঠান অন্তর্বর্তী সরকারকে দখলমুক্ত করতে হবে। আর উপদেষ্টা প্যানেলে যারা বিএনপির রয়েছেন, তাদের দ্রুত বের করে দিতে হবে। কারণ তারা এসি রুমে বসে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের বিপক্ষে ষড়যন্ত্র করছেন।’
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘বাংলাদেশে এডুকেশন ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য ওয়াহিদউদ্দিন ভাই (উপদেষ্টা) কাজ করছেন, ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য সালেহউদ্দিন ভাই (উপদেষ্টা) কাজ করছেন। আইন মন্ত্রণালয় ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য আসিফ নজরুল কাজ করছেন। এদের পদত্যাগ করতে হবে।’
বিএনপি লাশের রাজনীতি শুরু করেছে মন্তব্য করে নাসীরুদ্দীন বলেন, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। তিনি ভারতের প্রেসক্রিপশনে দেশে মুজিববাদী সংবিধান রাখার জন্য কাজ করছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু সংবিধান নিষিদ্ধ হয়নি। সংবিধান নিষিদ্ধের জন্য সংবিধান পোড়ানো কর্মসূচি দেওয়া হবে। বাংলাদেশে কোনো মুজিবীয় সংবিধান থাকবে না।’
তিনি বলেন, (জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে) আমাদের আসিফ নজরুল বলেছিলেন, ঘোষণাপত্র দেবেন। একবার মুলা দেখিয়েছিলেন ছাত্র-জনতাকে; ঘোষণাপত্র দেবেন বলেছিলেন-উনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এবার যদি হেরফের হয় আসিফ নজরুল বাংলাদেশে থাকবে কিনা জানি না। আমরা অপেক্ষা করছি, ঘোষণাপত্র হবে, ইসি পুনর্গঠন হবে, স্থানীয় নির্বাচন হবে, গণপরিষদ নির্বাচন হবে এবং সুন্দর বাংলাদেশ পাব।
সমাবেশে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষারসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা বক্তব্য দেন।
‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে কোনো মতামত দিতে চাই না’ : নির্বাচন কমিশনের সামনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচি চলাকালে নির্বাচন কমিশনের পূর্বনির্ধারিত একটি সভা চলছিল। সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। নির্বাচন কমিশন নিয়ে এনসিপির অভিযোগ সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়। এ সময় তিনি বলেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে আমরা কোনো মতামত দিতে চাই না। নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে ও করে যাবে। জাতীয় সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের দাবি প্রসঙ্গে এই কমিশনার বলেন, এ সিকুয়েন্সিং অব ইলেকশন, কোনটা আগে হবে কোনটা পরে হবে এটা ইসির হাতে নেই। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে কোন নির্বাচন আগে হবে, পরে হবে। ইসির দায়িত্ব নির্বাচন অনুষ্ঠান করা।
