Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

রাজনৈতিক দলগুলোকে ড. ইউনূস

আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের পর যুদ্ধ পরিস্থিতি হয়েছে

৩০ জুনের পর একদিনও দায়িত্বে থাকব না

Icon

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের পর যুদ্ধ পরিস্থিতি হয়েছে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা বড় যুদ্ধাবস্থার ভেতরে আছি। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পরে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির জন্য যতরকম পারে, সব চেষ্টা চলছে। এটা থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। তারা কিছুতেই (আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা) মেনে নিতে পারছে না। বিভাজন থেকে আমাদের উদ্ধার পেতে হবে। ঐকমত্য থাকতে হবে। আত্মমর্যাদাপূর্ণ জাতি হিসাবে আমরা যতটুকু দাঁড়াতে পেরেছি, এটা যেন সামনের দিকে যায়। সবাই একসঙ্গে বসাতে আমি মনে সাহস পেলাম। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে আমি অপরাধী অনুভব করব। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলের নেতাদের বলেন, অভ্যুত্থানের কারণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া দেশকে টেনে তোলার মহা সুযোগ পেয়েছি। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে দেশের ভেতরে ও বাইরে আরেকটি যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছে, যাতে আমরা সামনে এগোতে না পারি। যাতে সবকিছু কলাপস হয়ে যায়। আবার যাতে গোলামিতে ফিরে যাই। 

রোববার প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় দুদফায় ২০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন আয়োজনে তার আগের প্রতিশ্রুতি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ৩০ জুনের পর তিনি একদিনও দায়িত্বে থাকবেন না। তিনি আরও বলেন, আমি যতদিন (দায়িত্বে) আছি দেশের অনিষ্ট হয় এমন কোনো কাজ আমাকে দিয়ে হবে না, এটা নিশ্চিত থাকেন। তিনি বলেন, সবাই (রাজনৈতিক দলের নেতারা) একসঙ্গে বসাতে আমি মনে সাহস পেলাম। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে আমি নিজেকে অপরাধী অনুভব করব। 

এদিন বিকালে দুদফায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দলগুলোর নেতা বৈঠক করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীরপ্রতীক ও ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। পরে বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম। এর আগে শনিবার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। 

মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেন, দ্বিতীয় দিনের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়। দলগুলোর নেতারা স্যারকে (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) সমর্থন জানিয়েছেন। সরকার রিফর্ম করছে, বিচার কার্যক্রম শুরু করেছে এবং নির্বাচনের জন্য কাজ করছে। এসব কাজের জন্য তাদের সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকবেন। এটাই ছিল মূল মেসেজ। তিনি বলেন, আরও অনেক বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে। সংস্কারের অগ্রগতি নিয়ে কথা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা তাদের আবারও জানিয়েছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করবেন। নির্বাচন ৩০ জুনের পরে যাবে না। ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। এতে সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ শফিকুল আলম বৈঠকে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার উল্লিখিত বক্তব্যের কিছু অংশ হুবহু তুলে ধরেন। প্রেস সচিব আরও জানান, বৈঠকে স্যার (ড. ইউনূস) তার ভাষণে বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে বিএনপির দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) এক কথার মানুষ। তিনি বারবার বলছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে জুনের ৩০ তারিখের মধ্যে নির্বাচন হবে। নির্বাচন জুলাই মাসের এক তারিখ যাবে না। নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, যখন সময় আসবে তিনি রোডম্যাপ বা শিডিউল ঘোষণা করবেন। 

কোনো কোনো রাজনীতিক বলেছেন, প্রশাসনের ওপর সরকার পূর্ণ আস্থা না পাওয়ায় রোডম্যাপ দেওয়া হচ্ছে না-এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেন, সরকারের তিনটি বড় কাজ। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। সংস্কারের কাজগুলো হোক। পূর্ণ সংস্কার হোক। দেখতে পাবেন নির্বাচনের বিষয়ে মানুষের আস্থা পাব। বৈঠকে কোনো রাজনৈতিক দল উপদেষ্টাদের পদত্যাগ চেয়েছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার জানা মতে, আজকে কেউ কোনো উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন বলে শুনিনি। কেউ কেউ রদবদলের কথা বলেছেন কিন্তু পদত্যাগের কথা বলেননি। 

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।


ড. মুহাম্মদ ইউনূস

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম