Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

বিক্ষোভ সমাবেশে স্থবির সচিবালয়

আন্দোলনের মধ্যেই চাকরিচ্যুতির অধ্যাদেশ জারি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আন্দোলনের মধ্যেই চাকরিচ্যুতির অধ্যাদেশ জারি

দিনভর আন্দোলনের মধ্যেই চাকরিচ্যুতির মতো শাস্তির বিধান রেখেই সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ গেজেট প্রকাশ হয়। এরপর থেকেই অধ্যাদেশটি কার্যকর হয়ে গেছে। অথচ এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়াটি বাতিলের দাবিতে এদিনও উত্তাল ছিল বাংলাদেশ সচিবালয়। হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী এ কর্মসূচিতে যোগ দেন। তারা সচিবালয়ের প্রবেশের প্রধান গেট আটকে দিয়ে ভেতরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। কর্মচারীদের আন্দোলনে সচিবালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম কার্যত থেমে যায়। অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী দাপ্তরিক কাজে যোগদান করেননি। কর্মচারীদের সব সংগঠনের সভাপতি ও মহাসচিবকে সমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে। একপর্যায়ে তারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন। তাদের কাছে সমস্যাগুলো তুলে ধরেন। তারা এই অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন। কিন্তু সরকার তাদের দাবি আমলে না নিয়েই সন্ধ্যায় অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ করেছে। অধ্যাদেশটিতে সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। সংগঠনের সভাপতি ও সাবেক সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বে কর্মসূচিতে সাবেক সচিব ও সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি মো. অব্দুল খালেক এবং সদস্য সচিব ও সাবেক সচিব মো. মেরাজ হোসেনসহ শতাধিক সাবেক সচিব ও অতিরিক্ত সচিব অংশ নিয়েছেন।

এদিকে সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে ১০ সদস্যবিশিষ্ট স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। রোববার সকাল ১০টায় সচিবালয়ের ভেতরে বাদামতলা থেকে মিছিল শুরু করেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ওই মিছিলে অংশ নেন। এরপর কিছু সময় পরেই সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে মিছিল বের করেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের অপর অংশের সভাপতি বাদিউল কবির ও নিজামুল হক। আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনে আহ্বায়ক মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিছিলে অংশ নেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মিছিল-সমাবেশে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে। আধা ঘণ্টার বেশি প্রধান ফটক অবরোধ করে রেখে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা স্লোগান দেন-‘কর্মকর্তা-কর্মচারী এক হও লড়াই করো’, ‘অবৈধ কালো আইন, মানি না মানব না’, ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মানতে হবে’। লম্বা সময় ১নং গেট বন্ধ রেখে কর্মসূচি পালন করায় সচিবলয়ের ভেতরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সমাবেশ শেষে কর্মচারী নেতারা আবার সচিবালয়ের বাদামতলায় এসে সমাবেশ করেন। তারা সচিবালয়ের ভেতেরের প্রতিটি লেন মিছিলসহ প্রদক্ষিণ করেন। 

বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কর্মসূচিতে সংগঠনের সভাপতি সাবেক সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথমত, প্রশাসন থেকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া বিতর্কিত কর্মকর্তাদের অপসারণ করতে হবে। স্বৈরাচারের দোসর ও বিতর্কিত কর্মকর্তাদের তালিকা সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, পদোন্নতি ও পদায়নসংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি বাতিল করতে হবে। কারণ, সরকারের রুলস অব বিজিনেস উপেক্ষা এবং সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা প্রশাসনে নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। সুতরাং আমরা এ কমিটির বিলুপ্তি চাই। আর কোনো টালবাহানা চলবে না। 

তৃতীয়ত, সরকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কথা বলতে দিতে চায় না। সার্ভিস সংক্রান্ত কোনো সমস্যা থাকলে কর্মচারীরা সংগঠনের মাধ্যমে তাদের অসুবিধার কথা বলেন। ক্যাডার ও নন-ক্যাডার সব ক্ষেত্রেই এটা প্রচলিত রীতি। কিন্তু নতুন করে সরকারি চাকরি (সংশোধিত) অধ্যাদেশ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। সংশোধিত অধ্যাদেশে বিশেষ বিধান সংযোজন করে কর্মচারীর টুঁটি চেপে ধরতে চায়। কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই ২০ দিনে কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করতে চায়। এটা সংবিধানবিরোধী কাজ। তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আগুন নিয়ে খেলা করবেন না। আগুনে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন, অন্যথায় আপনাদের হাত পুড়ে যাবে। 

আব্দুস সাত্তার আরও বলেন, আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারকে সমর্থন করি এবং তাদের সফল্য কামনা করি। কিন্তু কতিপয় এজেন্ট বা ষড়যন্ত্রকারী সরকারে ঢুকে পড়েছে। তারা সরকারকে মিসগাইড করছে। কতিপয় উপদেষ্টাকে বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। তারা একেকজন বিদেশি সংস্থার একেকটা এজেন্ডা নিয়ে এসেছেন। যারা ২০/৩০ বছর ধরে এই দেশেই বসবাস করেননি। তারাই বর্তমান সরকারের সফলতার পেছনে অন্তরায়। সুতরাং আমরা ষড়যন্ত্রকারী উপদেষ্টাদের অপসারণ চাই। এসব দাবি নিয়ে আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি এবং দাবি মানা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করব। 

সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি আব্দুল খালেক বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর সচিবদের অপসারণ করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে বিতর্কিতদের চুক্তি বাতিল করতে হবে। আজকের মধ্যে তাদের অপসারণ চাই। অন্যথায় বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম একটার পর একটা কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, চুক্তিভিত্তিক আমলারা মেরুদণ্ডহীন, তারা ফ্যাসিবাদের দোসরদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। যে কারণে আজ কর্মচারীরা মিছিল-মিটিং করছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আজ জনপ্রশাসন সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব সচিবালয়ে আসেননি। পদোন্নতি ও পদায়নসংক্রান্ত কোনো কাজ করতে পারছে না বর্তমান প্রশাসন। কারণ, আইনকানুন উপেক্ষা করে পদোন্নতি ও পদায়নসংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। ফলে সব আটকে গেছে। আমরা এসবের অবসান চাই। 

এদিন মিছিল-সমাবেশের একপর্যায়ে সচিবালয়ে কর্মরত কর্মচারীদের সব সংগঠনের নেতা ও সমর্থকরা একত্রিত হয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় কর্মচারীরা উপদেষ্টাকে বলেন, চাকরি আইন সংশোধ হয়েছে; কিন্তু কর্মচারীরা কিছুই জানেন না। কেন আইন সংশোধন ও সংযোজন করা হচ্ছে, তা পরিষ্কার করে বলা দরকার। ১৯৭৯ সালের বিশেষ বিধান সরকারি চাকরি অধ্যাদেশে সংযোজন করে কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা বিশেষ বিধান মানি না। 

কর্মচারী নেতাদের বক্তব্য শুনে তাদের উদ্বেগের বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এরপর কর্মচারীরা নিচে নেমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে সমাবেশ করেন। তারা বলেন, সরকারি চাকরি (সংশোধিত) অধ্যাদেশ থেকে বিশেষ বিধান বাতিল না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। 

এরপর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সচিবালয়ের ভেতেরের প্রতিটি লেন মিছিলসহ প্রদক্ষিণ করেন। একপর্যায়ে তারা গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা মো. আদিলুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেন। উপদেষ্টা কর্মচারীদের বক্তব্য শুনে তাদের সমস্যা বা আপত্তির কথা সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে জানান। তিনি বলেন, আপনারা অসুবিধার কথা তুলে ধরেন। কালো ব্যাজ ধারণ করেন। কিন্তু সচিবালয়ের ভেতরে মিছিল-মিটিং করা অশোভন দেখায়। বাদামতলার সমাবেশ সংযুক্ত পরিষদের একাংশের নেতা বাদিউল কবির বলেন, এ অধ্যাদেশের মাধ্যমে যে অপপ্রয়াস নেওয়া হচ্ছে, আমরা তা রুখে দেব, ইনশাআল্লাহ। এটি নিবর্তনমূলক আইন। তিনি বলেন, এই অধ্যাদেশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমরা কাজে ফিরব না। আমরা সচিবালয়ে বাদামতলায় (৬ নম্বর ভবনের সামনে চত্বর) অবস্থান করব।

২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ভেটিং সাপেক্ষে অনুমোদিত অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ হয়েছে রোববার রাতে। এ অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘এমন কোনো কাজ করা, যার ফলে অনানুগত্য সৃষ্টি বা দাপ্তরিক কাজে শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয় এবং কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে, কর্তব্য কর্মসম্পাদনে বাধা দিলে, ছুটি ছাড়া যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে, কর্তব্য পালন না করার জন্য অন্য কর্মচারীকে উসকানি দিলে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে চাকরিচ্যুতির বিধান যুক্ত করা হয়েছে।’ উল্লিখিত অপরাধ করলে নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ, চাকরি থেকে অপসারণ এবং চাকরি থেকে বরখাস্তের শাস্তি আরোপ করা হবে। 

আন্দোলনের মধ্যেই সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের গেজেট জারি : সচিবালয়ে কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’র গেজেট জারি করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। রোববার সন্ধ্যায় তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হলো। কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলছেন, সাড়ে চার দশক আগের বিশেষ বিধানের কিছু ‘নিবর্তনমূলক ধারা’ সংযোজন করে এই অধ্যাদেশটি করা হয়েছে।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের (আইনানুযায়ী সবাই কর্মচারী) চারটি বিষয়কে অপরাধের আওতাভুক্ত করা হয়। সেগুলো হলো: সরকারি কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল বা যা অন্য যে কোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে; অন্যান্য কর্মচারীর সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন, অন্য যে কোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন এবং যে কোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন, তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন। এসব অপরাধের শান্তি হিসাবে বলা হয়েছিল, দোষী কর্মচারীকে নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে নামিয়ে দেওয়া, চাকরি থেকে অপসারণ বা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার দণ্ড দেওয়া যাবে।

অধ্যাদেশে সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে। বিভাগীয় মামলা রুজু ছাড়াই শাস্তি দেওয়ার সুযোগ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, অভিযোগ গঠনের সাতদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে তাকে কেন দণ্ড আরোপ করা হবে না, সে বিষয়ে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে দণ্ড আরোপ করা যাবে। এভাবে দণ্ড আরোপ করা হলে দোষী কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। যদিও আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন বা আপিলের বিধান রাখা হয়েছে। আন্দোলনকারী কর্মচারীরা অধ্যাদেশকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

দাবিদাওয়া পর্যালোচনায় কমিটি গঠন : এদিকে রোববার বিকালে সরকারি কর্মচারীদের দাবিদাওয়া পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত দিতে এক অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে দশ সদস্যের একটি স্থায়ী কমিটি গঠন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা-১), যুগ্মসচিব (বিধি-১), যুগ্মসচিব (মাঠ প্রশাসন, অভ্যন্তরীণ নিয়োগ ও নবনিয়োগ), যুগ্মসচিব (প্রশাসন অধিশাখা), মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন যুগ্মসচিব, অর্থ বিভাগের একজন যুগ্মসচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্মসচিব এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের একজন যুগ্মসচিবকে সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সচিবালয় ও কল্যাণ অধিশাখা) কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। 

কমিটির এখতিয়ারের বিষয়ে আদেশে বলা হয়, সরকারি কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবিদাওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত ও সুপারিশ দেবে। প্রতি মাসে এর সদস্যরা একবার সভায় মিলিত হবেন। কর্মচারীদের উপযুক্ত প্রতিনিধিদের সঙ্গে তারা মতবিনিময় করবেন। কমিটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য কোঅপ্ট করতে পারবে।


আন্দোলন

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম