Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল দাবি

বিক্ষোভ মিছিল তিন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিক্ষোভ মিছিল তিন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে রোববারও সচিবালয়ে বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন কর্মচারীরা। পরে তারা তিন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন। এরা হলেন-ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। স্মারকলিপি গ্রহণ করে উপদেষ্টা ফাওজুল বলেন, সরকারি কর্মচারী (সংশোধন) অধ্যাদেশের কিছু বিধানের অপপ্রয়োগের আশঙ্কা রয়েছে। আমি অধ্যাদেশটি দেখেছি, উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজনের নজরে এই জিনিসটা এনেছি।

রোববার বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ের বাদামতলায় কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এ সময় তারা অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবি জানান। দুপুর ১২টার দিকে তারা মিছিল নিয়ে প্রথমে ভূমি উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেন। তিনি স্মারকলিপি গ্রহণ করে সচিবালয়ের কর্মপরিবেশ নষ্ট না করার পরামর্শ দেন।

এরপর দুপুর সাড়ে ১২টায় জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানকে স্মারকলিপি দেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় উপদেষ্টা ফাওজুল উপদেষ্টা পরিষদে অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি তুলে ধরার আশ্বাস দিয়ে বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে তিনি বিষয়টি তুলে ধরবেন। তিনি অনুরোধ করেন, এই অধ্যাদেশটি বহাল রেখে কী কী সেফগার্ড করলে, তা কর্মচারীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে তা ভেবে দেখার জন্য।

এই উপদেষ্টা আরও বলেন, আপনাদের দাবিগুলো হচ্ছে অধ্যাদেশের কিছু ধারার অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে। সেই জায়গাগুলো সংশোধন হলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু অধ্যাদেশ একেবারেই বাতিলের যে দাবি করছেন তা থেকে সরে আসার চিন্তা করতে হবে। কোনো দাবির পক্ষে কঠোর অবস্থান নিলে তা আদায় করা কঠিন। ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। তবে অধ্যাদেশের কিছু ধারায় যে সমস্যা আছে আমরা সে বিষয়ে সচেতন। সরকার অসুবিধাগুলো সংশোধনের চিন্তা করবে আর আপনারা বাতিলের দাবি থেকে সরে আসার বিষয়ে চিন্তা করুন। উপদেষ্টা আরও বলেন, সচিবালয়ের কর্মপরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সে বিষয়ে আপনাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা দেখতে চাই। তবে উপস্থিত কর্মচারী নেতারা বলেন, এই অধ্যাদেশ সংবিধানবিরোধী কালো আইন অবিলম্বে এটা বাতিল দাবি করেন।

এ সময় বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম, কো-মহাসচিব মো. নজরুল ইসলামসহ কর্মচারী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর বেলা আড়াইটার দিকে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে স্মারকলিপি দেন কর্মচারী নেতারা। এ সময় উপদেষ্টা বলেন, আমরা অপনাদের দাবিগুলো নোট করে রাখলাম। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। অধ্যাদেশে কর্মচারীদের জন্য সমস্যা রয়েছে তা ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা হবে। বিষয়টি যেহেতু আমার একার বিষয় নয়, সেহেতু সম্মিলিতভাবে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনার আগে এই মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত বলা যাচ্ছে না।

এর আগে সচিবালয়ের বাদামতলায় নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ বাতিল করা না হলে সারা দেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। একই সঙ্গে অধ্যাদেশ বাতিল ছাড়াও অন্যান্য কঠিন দাবি যুক্ত করা হবে। নূরুল ইসলাম আরও বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ আমাদের সব বিষয়ে সহযোগিতা করছেন। তিনজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেওয়ার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করব, কথা বলব। তিনি বলেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা শনিবার দেশে এলে তার সঙ্গে কথা বলে তিনি আমাদের একটা ফলাফল দেবেন। রোববারের মধ্যে আমাদের একটা পজিটিভ রেজাল্ট দেওয়ার কথা। এজন্য আমরা কর্মসূচি কিছুটা শিথিল করে স্মারকলিপি দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছি। তিনি বলেন, সারা দেশের ১৮ লাখ সরকারি কর্মচারীদের জন্য আমাদের মেসেজ হলো-আমরা রোববার বিকালে যে কর্মসূচি দেব, আপনারা দেশব্যাপী সেই কর্মসূচি পালন করবেন।

এদিকে আজ একই দাবিতে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে স্মারকলিপি দেবে কর্মচারী সংগঠনগুলো।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম