নবম দিনেও বড় হামলা ইরানের
নতুন ড্রোনে হতবাক ইসরাইল
ইসরাইলি হামলায় ইরানে নিহত ৪০০, আহত ৩০৫৬ * কোনো পরিস্থিতিতে পারমাণবিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করব না : ইরানের প্রেসিডেন্ট * ইসরাইল থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ইসরাইলের রামাত গানে ইরানের হামলায় ধসে গেছে বেশ কয়েকটি ভবন। ছবি: আল-জাজিরা
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পালটা হামলায় ইসরাইলকে নিজের ক্ষেপণাস্ত্র চমক দেখানোর পর এবার ড্রোন কারিশমা দেখাচ্ছে ইরান। হামলার শুরুর দিন থেকেই ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইরান। কিন্তু শুক্রবার মধ্যরাতের পর থেকেই অত্যাধুনিক ড্রোনের অব্যর্থ হামলায় হতবাক হয়ে গেছে ইসরাইল। বেসামরিক নাগরিকরা তো বটেই, হতভম্ব হয়ে গেছে খোদ ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীও। শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ঠেকাতে পারেনি। ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এটি একটি বিরল ঘটনা। ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণাধীন গোলান মালভূমি, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, জেরুজালেম, হাইফাসহ দেশটির বেশ কয়েকটি স্থানে রাত থেকে শুরু করে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে হামলা চালায় ইরান। পালটা হামলা চালায় ইসরাইলও। খোররামবাদ শহরসহ ইসফাহানের পারমাণবিক কেন্দ্রেও নতুন করে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। দরজায় ডেকে আনা যুদ্ধব্যয়ের জোগানে প্রতিরক্ষা বাজেট ৩.৬৪২ বিলিয়ন শেকেল (প্রায় ৯৭০ মিলিয়ন ডলার) বাড়াচ্ছে ইসরাইল। ২/১ দিনের মধ্যেই বিলটি উত্থাপন হবে নসেটে। ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া এ সংঘাত বন্ধে গতি ফিরেছে আলোচনাতেও। শনিবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সম্মেলনে ইসরাইলি হামলার তীব্র নিন্দা জানান ৫৭ দেশের ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) নেতারা। শান্তি প্রক্রিয়া চলছে ইউরোপের উঠোনেও। বিশ্বনেতাদের এসব আলোচনা-সমালোচনা কোনো কিছুতেই ফায়দা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ইসরাইল। তবে কূটনৈতিক সমাধানে ইরানের বিন্দুমাত্র অনাগ্রহ নেই বলে জানিয়েছে তেহরান। এদিকে সর্বাত্মক হামলার আগে ইরানকে দুই সপ্তাহের সময়সীমা দেওয়ার পরদিনই দেশটির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার জাল ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এএফপি, বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্স।
শনিবার সকালে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী বাহিনী (আইআরজিসি) জানিয়েছে, ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩’-এর অংশ হিসাবে ইসরাইলে তারা ১৮তম দফা হামলা চালিয়েছে। এতে বলা হয়, দখল করা ফিলিস্তিনি (বর্তমানে ইসরাইল) ভূখণ্ডের কেন্দ্রস্থল, বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর, সামরিক লক্ষ্যবস্তু এবং ইসরাইলি সেনাবাহিনীর রসদ ও পরিচালনা কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানতে শাহেদ-১৩৬ নামের যুদ্ধ ও আত্মঘাতী ড্রোনের ঝাঁক এবং কঠিন ও তরল জ্বালানিচালিত নিখুঁতভাবে লক্ষ্যভেদী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। ইসরাইলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইরানের দুটি ড্রোন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে দেশটির উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে পৃথক হামলা চালিয়েছে। ড্রোনের এই সক্ষমতা তাদের বিস্মিত করেছে বলেও জানায় সেনাবাহিনী।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, শনিবার ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে জর্ডান সীমান্তসংলগ্ন বেইত শেইন শহরে একটি ড্রোন আঘাত হানে। এতে একটি দোতলা বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। উদ্ধারকর্মীরা জানান, বিস্ফোরণে বাড়িটির পাশে বড় ধরনের গর্ত সৃষ্টি হয়েছে, জানালা ও দরজা উড়ে গেছে। হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) তথ্যমতে, ইরানের দ্বিতীয় ড্রোনটি দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের একটি খোলা এলাকায় আঘাত হানে। এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আইডিএফ জানিয়েছে, ইরানের সর্বশেষ হামলায় অন্তত ছয়টি ড্রোন ছিল। এর মধ্যে কয়েকটি ড্রোন আরাভা মরুভূমি ও গোলান মালভূমিসহ অন্যান্য অঞ্চলে পৌঁছানোর আগেই ঠেকানো হয়। আইআরজিসি বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইল-অধিকৃত অঞ্চলে কয়েক ডজন ড্রোন নিক্ষেপ করা হয়েছে। বেশির ভাগই তাদের নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলতার সাথে আঘাত করেছে।
গত সপ্তাহে ইসরাইল ইরানে হামলা শুরুর পর থেকে ইরান হামলার জন্য হাজারের বেশি ড্রোন পাঠায়। যা লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই নিষ্ক্রিয় করা হয় বলেও জানিয়েছে আইডিএফ। গত রাতে ইরান থেকে ছোড়া প্রায় ৪০টি ড্রোন ইসরাইলের আকাশসীমায় পৌঁছানোর আগেই সেগুলো প্রতিহত করেছে। এ নিয়ে অভিযানের শুরু থেকে মোট ৪৭০টিরও বেশি ড্রোন প্রতিহত করা হয়েছে, যার সফলতা প্রায় ৯৯ শতাংশ।
পালটা হামলায় ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক অবকাঠামোসহ বেসামরিক স্থাপনাতেও আঘাত হেনেছে ইসরাইল।
টাইমস অব ইসরাইল বলছে, ৩০টি যুদ্ধবিমান হামলায় অংশ নিয়েছিল। ইরানের আহভাজ কয়েক ডজন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ৫০টি হামলা চালিয়েছে। খুজেস্তান প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় বলে জানিয়েছে আলজাজিরা। ইস্পাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। সেই ভিডিও ও ছবি প্রকাশ করেছে ইসরাইল। হামলায় ইরানের খোররামাবাদ শহরেও এদিন অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার খুজেস্তান প্রদেশে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ৫৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পরমাণু বিকিরণের শঙ্কা, প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান : ইসরাইলের ধারাবাহিক হামলায় পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ক্ষতি হলে সৃষ্ট বিকিরণজনিত ক্ষয়ক্ষতির শিকারদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান। শনিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন ইরানের উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী আলী জাফারিয়ান। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ইসরাইল কোন অনানুষ্ঠানিক বা অপ্রচলিত অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে কোনো প্রতিবেদন পাইনি। তবে পারমাণবিক চুল্লিগুলো যদি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় এবং সেখান থেকে কোনো ধরনের বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে তার মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি। যদিও আমরা আশাবাদী যে পরিস্থিতি সেই স্তরে পৌঁছাবে না।’ জাফারিয়ান আরও জানান, এখন পর্যন্ত তিনটি হাসপাতাল ইসরাইলি হামলার শিকার হয়েছে এবং কেরমানশাহ হাসপাতাল সম্পূর্ণরূপে খালি করে ফেলা হয়েছে। ইসরাইলি হামলায় হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে একটি হালনাগাদ তথ্যও এদিন দিয়েছেন ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসম্পর্ক বিভাগের প্রধান হোসেন কেরমানপুর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি জানান, গত ৯ দিনের হামলায় ৪০০-এর বেশি ইরানি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৫৪ জন নারী ও শিশু রয়েছে। এছাড়া আরও তিন হাজার ৫৬ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে দুই হাজার ২২০ জনকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ২৩২ জনকে ঘটনাস্থলেই বহির্বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে, ইরানজুড়ে ৪৫৭টি অস্ত্রোপচার করেছে মেডিকেল টিম।
শনিবার ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি সম্মেলনের ফাঁকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে বৈঠক করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান। বলেন, তুরস্ক এই আলোচনার পুনরায় শুরুতে একটি ‘সহযোগী ভূমিকা’ রাখতে প্রস্তুত। তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে ইসরাইলের ইরানে হামলা ছিল ইচ্ছাকৃত একটি ‘বিরোধ উসকে দেওয়া’র প্রচেষ্টা।
ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা : ইরানের আটটি প্রতিষ্ঠান, একজন ব্যক্তিকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। একটি জাহাজকে অবরুদ্ধ সম্পত্তি হিসাবে চিহ্নিত করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি এবং জাহাজ ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য চীন থেকে সংবেদনশীল যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও পরিবহণে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শুক্রবার দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
পারমাণবিক কর্মসূচিতে সহায়তা দিতে প্রস্তুত রাশিয়া-পুতিন : ইরানকে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি উন্নয়নে সহায়তা করতে প্রস্তুত রাশিয়া। শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি চালানোর অধিকার ইরানের রয়েছে। শনিবার স্কাই নিউজ আরবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বলেন, ‘রাশিয়া ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) কখনোই এমন কোনো প্রমাণ পায়নি যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য কাজ করছে। আমরা এই বিষয়টি বহুবার ইসরাইলি নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’ এদিকে শনিবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ফোনালাপে পারমাণবিক কর্মসূচিতে ইরানের আগের সেই দৃঢ়তার কথাই তুলে ধরলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। বললেন, ‘কোনো পরিস্থিতিতে পারমাণবিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করবে না ইরান। শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিতে আস্থা তৈরিতে আমরা আলোচনা এবং সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তবে আমরা কোনো অবস্থাতেই পারমাণবিক কর্মকাণ্ড শূন্যে নামিয়ে আনতে রাজি নই।’
মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য বিশ্বাস করেন না ট্রাম্প : ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড যে বলেছেন, সেটা সঠিক নয়। তিনি ভুল বলেছেন। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিউজার্সি মোরিস্টাউনের বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, গ্যাবার্ডের চলতি বছরের শুরুর দিকে করা গোয়েন্দা বিশ্লেষণ তিনি মানেন না। তিনি বলেন, তুলসী ‘ভুল’ বলেছেন। অথচ তারই পূর্বসূরি, দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন বলছেন, ‘আজীবন ক্ষমতায় থাকতেই যুদ্ধ চান নেতানিয়াহু। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় টেলিভিশন প্রোগ্রাম ‘দ্য ডেইলি শো’তে এ মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘আমার মনে হয়, গত দুই দশকের বেশির ভাগ সময়ই নেতানিয়াহু ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি অনেক আগে থেকেই ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাইছিলেন। কারণ এতে তিনি আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক কৌশলের কেন্দ বিন্দুতে আছে ‘যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে টিকে থাকা।’ শনিবার টাইমস অব ইসরাইলের খবরে বলা হয়, চলমান সংঘাতের মধ্যে ইসরাইলে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ফ্লাইট শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরাইলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি।
প্রশান্ত মহাসাগরের পথে বি-২ স্টিলথ বিমান : প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে পশ্চিম দিকে উড়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমান। স্থানীয় সময় শুক্রবার বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রণ যোগাযোগ থেকে জানা গেছে, মার্কিন মিসৌরির হোয়াইটম্যান ঘাঁটি থেকে উড়ে যাওয়া বি-২ বোমারু বিমানগুলো গুয়ামের দিকে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও এটি নিশ্চিত নয়। এই বিমানগুলো ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বাঙ্কার-ধ্বংসকারী বোমা বহনে সক্ষম, যা ইরানের ফোর্দো ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে। আলজাজিরা।
