Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

সাবেক সিইসি নূরুল হুদা ফের ৪ দিনের রিমান্ডে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাবেক সিইসি নূরুল হুদা ফের ৪ দিনের রিমান্ডে

ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদাকে আবারও ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। শুক্রবার শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদ এ আদেশ দেন।

৪ দিনের রিমান্ড শেষে এদিন আদালতে তোলার পর নূরুল হুদাকে আরও ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, মামলাটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ। সাবেক তিন সিইসির কারণে বাংলাদেশে ফ্যাসিস্টের জন্ম হয়। হাজার হাজার লোকের প্রাণ গেছে। আসামি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে চায় না। এজন্য বারবার রিমান্ড প্রয়োজন হবে।

পিপি ওমর ফারুক ফারুকী আরও বলেন, ২০১৮ সালে প্রহসনের ভোট করা হয়। রাত ৩টার মধ্যে ২০০ প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। রাতের ভোট করার বিষয়ে প্রিসাইডিং অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কাদের সহযোগিতায় রাতের ভোট সম্পন্ন হয়েছে-সেটা জানা প্রয়োজন। পাতানো নির্বাচনের নির্দেশগুলো কিভাবে পরিচালিত হয়েছিল সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। নির্বাচনের সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করার বিষয় জানা দরকার। হাজার কোটি টাকা কিভাবে খরচ করেছেন সেই হিসাব নেওয়া প্রয়োজন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আরও যারা জড়িত ছিলেন তাদের তথ্য বের করা প্রয়োজন।

এ সময় বিচারক জানতে চান-তখন ইসি সচিব কে ছিলেন? ওই নির্বাচনে নূরুল হুদার পরিবারের কেউ ছিলেন? বিচারকের এমন প্রশ্নে পিপি জানান, সচিব ছিলেন হেলালুদ্দীন আহমেদ। আর পটুয়াখালী-৩ আসনে ভাগনে শাহাজাদাকে মনোনয়ন পেতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সহায়তা করেন নূরুল হুদা।

নূরুল হুদার পক্ষে অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম সজিব রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ২৩ জুনের রিমান্ড আবেদন এবং এ রিমান্ড আবেদনের ওপর মৌলিক তেমন পার্থক্য নেই। তাকে তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ডে নেন। রিমান্ডে কি পেলেন, ১০০ তে কত পেলেন আবেদনে জানাতে হবে। আদালতকে সন্তুষ্ট করতে হবে, কত পার্সেন্ট তথ্য পেলেন। কিন্তু আবেদনে দেখা গেল মৌলিক তেমন পার্থক্য নেই। তিনি বলেন, সব জামিনযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে। ২৩ জুন আদালতে জামিন দেন। কিন্তু পরে ধারা সংযোজনের আবেদন করায় জামিন বাতিল করা হয়। আমাদের কথা বলতেও ভয় লাগে। রেকটিফাই করে যদি আবার ধারা সংযোজনের আবেদন করা হয়। তিনি আরও বলেন, যে অভিযোগের ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে, তাতে আইনগত বাধা আছে। মামলা প্রশ্নবিদ্ধ। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার আগে সরকারের অনুমতি নিতে হয়। এখানে তা করা হয়নি। মামলাটা ত্রুটিপূর্ণ, আইনগতভাবে চলার সুযোগ নেই। সুনির্দিষ্ট, সুস্পষ্ট, দায় সৃষ্টিকারী এমন কিছু মামলায় নেই।

অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম সজিব বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করবে সরকার। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ব্যক্তি করেছেন এমনটা বিরল। ব্যক্তি মামলা করলে তা ত্রুটিপূর্ণ হয়। আর নির্বাচনসংক্রান্ত অর্থ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা একজন এসআই তদন্ত করবেন? এ তদন্ত তো করবে এনবিআর। নুরুল হুদা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি গেরিলা যুদ্ধ করেছেন। স্বাধীনতা ও অস্তিত্বের সঙ্গে বিষয়টা জড়িত। সবকিছু মিলিয়ে রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা করেন আইনজীবী। আসামিপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে আদালত বলেন, সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন। রাতের ভোট নিয়ে কিছু বললেন না। তখন নূরুল হুদার আরেক আইনজীবী বলেন, এ বিষয়ে মিডিয়া কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি। পরে আদালত ৪ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

২২ জুন নূরুল হুদাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন ২৩ জুন তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ওইদিন আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ মামলায় গ্রেফতার সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের বৃহস্পতিবার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম