Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

প্রধান উপদেষ্টা-সিইসি ওয়ান টু ওয়ান বৈঠক

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের বার্তা, ধারণা বিএনপির

আলোচনার বিষয়গুলো জনগণের সামনে স্পষ্ট করার দাবি * বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্থানীয় নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের বার্তা, ধারণা বিএনপির

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ

অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বার্তা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) দিয়েছেন-এমন ধারণা করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস একান্ত বৈঠক করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে। সরকার বা নির্বাচন কমিশনের দিক থেকে এ বৈঠক নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য জানানো হয়নি। তবে এ নিয়ে শুক্রবার রাজধানীর গুলশানের বাসায় বিএনপির পক্ষে সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া দেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এ সময় তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাতে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি আলাপ হয়েছে কি না, তা জনগণের সামনে স্পষ্ট করার দাবি জানান।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাক্ষাৎ হয়েছে-এটা গণমাধ্যমে দেখলাম। লন্ডন বৈঠকের (ড. ইউনূস ও তারেক রহমান) পর আমরা আহ্বান করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে সেখানে যেটা সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২০২৬-এর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য, সেই মেসেজটি তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) অফিশিয়ালি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে অথবা নির্বাচন কমিশনকে জানাবেন। সেজন্য আমরা অপেক্ষা করছিলাম। তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ হয়েছে-এটা প্রকাশিত হওয়ার পর আশা করেছিলাম বৈঠকে কী বিষয়ে আলাপ হলো, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে অথবা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পক্ষ থেকে প্রেসকে কিছু জানানো হবে। আমরা সবাই এখন ধারণা করে নিচ্ছি, প্রধান উপদেষ্টা তার মেসেজটি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে জানিয়েছেন। আর তা হলো ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রমজান শুরুর আগের সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের বিষয়ে। এটা আমাদের ধারণা।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা জানি না সত্যি সত্যি উনি এটা কমিউনিকেট করেছেন কি না, এই পরামর্শ দিয়েছেন কি না বা ইনস্ট্রাকশন দিয়েছেন কি না। যদি উভয়পক্ষ থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয় জাতির সামনে, তাহলে আমরা আশ্বস্ত হব।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কয়েকবারই বলা হয়েছে তাদের সব প্রস্তুতি চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমাপ্তি হয়ে যাবে। এছাড়া কেনাকাটার যাবতীয় কার্যক্রম সেপ্টেম্বরের ভেতরে সমাপ্ত করতে পারবে-এরকম অনেক বক্তব্য আমরা শুনেছি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। ইতঃপূর্বে জুলাইয়ের মধ্যে তারা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবেন-এরকম কথাও আমরা শুনেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু কেনাকাটার প্রক্রিয়া অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে এবং সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য তারা সব কার্যক্রম গুছিয়ে এনেছেন, সেই হিসাবে বলা যায়-সেপ্টেম্বর যথেষ্ট সময়। নির্বাচনের জন্য যেসব জিনিস প্রয়োজন সেটা হচ্ছে-ভোটার তালিকা প্রণয়ন-হালনাগাদ করা, সেটা হয়ে গেছে। অন্য যে বিষয়াদি আছে-নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয়, সেটাও তারা করে ফেলেছেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, আর বাদ বাকি যেটা আছে ডিলিটেশন, সেটা তিন মাসের মধ্যে সমাপ্ত করা যায়। এরপর তফশিল ঘোষণার পর অনেক কার্যক্রম থাকবে পোলিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগসহ ভোটকেন্দ্র ঠিক করা, ট্রেনিং করা। এগুলো চলমান প্রক্রিয়া। এগুলোর জন্য প্রস্তুতি লাগে না।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সুযোগ নেই : জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাজনৈতিক দল নির্বাচনি কৌশল হিসাবে অনেক কথাই বলতে পারে। কিন্তু এটা সম্মত হয়েছে যে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মোটামুটি সব দলই একমত। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত অথবা ঘোষিত না বললেও সম্মত বলা যায় যে, সেই সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সব পক্ষ এবং সব রাজনৈতিক দল একমত। দ্বিমত তো হতে দেখিনি কাউকে। যদি তাই হয়, এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা বা আয়োজন করা, এটা একপ্রকার অসম্ভব। কারণ, প্রতিটি স্তরে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে গেলে ৬ মাসের বেশি সময় লাগে-সেটা ইউনিয়ন পরিষদ হোক, পৌরসভা হোক, উপজেলা পরিষদ হোক, সিটি করপোরেশন হোক। এটা একটা মহা কর্মযজ্ঞ।

সালাহউদ্দিন বলেন, সেজন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আগেও বলা হয়েছিল যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে গেলে আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাসময়ে করতে হয়তো পারব না।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপির এবং আরও বহু রাজনৈতিক দলের অবস্থান হচ্ছে আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্যই এতদিন সংগ্রাম করেছি, ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য এতদিন সংগ্রাম করেছি। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করেছি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য আমরা গণ-অভ্যুত্থান করিনি। জাতির আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচন করাই এখন নির্বাচন কমিশন, প্রধান উপদেষ্টা এবং এই সরকারের প্রধান কাজ।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম