Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

খুলনায় সাবেক যুবদল নেতাকে গুলি করে রগ কেটে হত্যা

Icon

খুলনা ব্যুরো

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

খুলনায় সাবেক যুবদল নেতাকে গুলি করে রগ কেটে হত্যা

ছবি: সংগৃহীত

খুলনার দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক নেতা মোল্লা মাহবুবুর রহমানকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার দুপুরে নগরীর দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়ায় নিজ বাড়ির সামনে তাকে গুলি করা হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাকে কুপিয়ে ও পায়ের রগ কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা। হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর আতাহার আলী। মাহবুবুর রহমান মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুল করিম মোল্লার ছেলে। এ হত্যার প্রতিবাদে স্থানীয় লোকজন খুলনা-যশোর মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার দুপুরে বাড়ির সামনে নিজের প্রাইভেটকার পরিষ্কার করছিলেন মাহবুব। এ সময় মোটরসাইকেলে করে আসা তিন ব্যক্তি গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। মাহবুব গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যান। এ সময় দুর্বৃত্তরা মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে পায়ের রগ কেটে দেয়। এলাকাবাসী জানায়, ৫ আগস্টের পর এলাকায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন মাহবুব। মাদক বিক্রি নিয়ে এলাকার আরেকটি গ্রুপের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল। এর জেরে আগেও কয়েকবার মাহবুবের ওপর হামলা হয়। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর আতাহার আলী জানান, মাহবুবের বিরুদ্ধে মাদকসহ ৮টি মামলা রয়েছে। মাদক বিক্রি নিয়ে প্রতিপক্ষ গ্রুপের সঙ্গে মাহবুবের দ্বন্দ্ব চলছিল। এর জেরে হামলা কি-না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে ৭টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মাহবুব দৌলতপুর থানা যুবদলের সহসভাপতি ছিলেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় রাম দা হাতে তার ছবি ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় ওই রাতেই সংগঠন থেকে মাহবুবকে বহিষ্কার করা হয়। এরপরও তিনি নিয়মিত দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।

এদিকে তার মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরিবারের সদস্যরা শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ে। মাহবুবের স্ত্রীসহ দুই মেয়ে রয়েছে। মাহবুবের স্ত্রী বিলাপ করে বলেন, আমি গুলির শব্দ শুনেছি। আমি চেঁচিয়েছি। কেউ আসেনি ওকে ধরতে। মোটরসাইকেলে হেলমেট পরে এসেছিল সন্ত্রাসীরা। কালো চেক চেক জামা পরা একজন। যাওয়ার সময় গেটে গুলি করেছে। রাস্তায় গুলি করেছে। গালি দিয়ে বলে কে আসবি আয়। কিছুদিন ধরে ওকে মোবাইলে হুমকি দিচ্ছিল। আমি ওকে দূরে যেতে বলেছি অথবা আমাকে কথা দিতে বলেছি, কিন্তু ও বলেছে, আমি কারও ক্ষতি করিনি। আমার কেউ ক্ষতি করবে না। আর মরণ থাকলে তো হবে। আমি বলেছি এটা কোনো কথা হয় না। সবার সব থাকবে, আমার মেয়েদের কী হবে।

এদিকে তার মৃত্যুর খবরে দলীয় নেতাকর্মীরা পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে যান। নগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাহবুবের লাশ দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, শহরে একের পর এক খুন হচ্ছে। পুলিশ তার কূল কিনারা করতে পারছে না। সর্বশেষ যুবদল নেতাকে হত্যা নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের চরম ব্যর্থতা। তিনি অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম