ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা
বরগুনায় শোকের ছায়া, স্বজনদের আহাজারি
বরগুনা (দক্ষিণ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বরগুনায় শোকের ছায়া, স্বজনদের আহাজারি। ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঢাকার মিটফোর্ডে পৈশাচিক কায়দায় হত্যার শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) বরগুনার সন্তান। নিহত সোহাগের নানাবাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে। শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে সোহাগের লাশ বরগুনায় নিয়ে আসেন স্বজনরা। পরে নানাবাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া, চলছে স্বজনদের আহাজারি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাত্র সাত মাস বয়সে বজ পাতে সোহাগের বাবা আইউব আলী মারা যান। এরপর তার মা আলেয়া বেগম জীবিকার তাগিদে সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় চলে যান। পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় সোহাগ মেসার্স সোহানা মেটাল নামের একটি দোকান পরিচালনা করতেন। দীর্ঘদিন দোকান থেকে চাঁদা দাবি করছিল একটি সন্ত্রাসী চক্র। না দেওয়ায় বুধবার বিকালে সোহাগকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে আটকে রাখে তারা। পরে নিষ্ঠুরভাবে পাথর মেরে তাকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও সোহাগের স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশ জড়িতদের বাঁচাতে কারসাজি করছে। তারা বলেন, প্রকৃত অপরাধীদের বাদ দিয়ে মামলায় নিরীহদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোহাগের লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
সোহাগের খালা সাজেদা বেগম বলেন, আমার ভাই প্রায় ১০-১৫ বছর ধরে ব্যবসা করছিল। তার ব্যবসাটা নিয়ে নিতে চেয়েছে অভিযুক্তরা। তারা আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে পাথর মেরে হত্যা করে।
সোহাগের মামা মো. মন্টু মিয়া বলেন, সোহাগ অনেক ভালো ছেলে ছিল। তাকে যেভাবে মারা হয়েছে, কোনো পশুর সঙ্গেও কেউ এমন আচরণ করে না। আমরা অপরাধীদের ফাঁসি চাই। সোহাগের ছেলে সোহান (১০) ও মেয়ে সোহানা (১৪) বলে, আমরা এখন এতিম হয়ে গেছি। যারা বাবাকে মেরেছে, আমরা তাদের ফাঁসি চাই। নিহতের স্ত্রী লাকি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামীর ব্যবসা সহ্য হচ্ছিল না ওদের। শেষমেশ আমার স্বামীকে মেরে ফেলছে। দীর্ঘদিন ধরেই আমার স্বামীর দোকান থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিল হত্যাকারীরা। আমার স্বামী তা দিতে চায়নি।
