Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

ওয়েবসাইট থেকে সরল নৌকা, যুক্ত হলো দাঁড়িপাল্লা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ওয়েবসাইট থেকে সরল নৌকা, যুক্ত হলো দাঁড়িপাল্লা

নিবন্ধন স্থগিত থাকা আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক ওয়েবসাইট থেকে হঠাৎ করেই সরিয়ে ফেলেছে নির্বাচন কমিশন। বুধবার সকালের দিকে ইসির শীর্ষ কর্মকর্তাদের মৌখিক নির্দেশে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক সরিয়ে ফেলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অনুবিভাগের কর্মকর্তারা। একইদিন দুপুরে ইসির ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নাম ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক প্রকাশ করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ সংক্রান্ত ফাইল অনুমোদনের আগেই তড়িঘড়ি করে ওয়েবসাইট থেকে নৌকা সরানো এবং দাঁড়িপাল্লা প্রতীক যুক্ত করা হয়। পরে ফাইল অনুমোদন করা হয়। ‘রাজনৈতিক চাপ’ থেকে এ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করছেন ইসির কয়েকজন কর্মকর্তা।

যদিও নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ যুগান্তরকে জানিয়েছেন, কোনো চাপে নৌকা প্রতীক ওয়েবসাইট থেকে সরানো হয়নি। তিনি বলেন, কমিশন মনে করেছে বিভ্রান্তি এড়াতে প্রতীকটি ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে রাখাই ভালো। তবে নির্বাচন বিধিমালায় প্রতীকের তালিকায় এটি সংরক্ষিত থাকবে। হঠাৎ দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ওয়েবসাইটে প্রকাশের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার গেজেট প্রকাশের পরই এটি ওয়েবসাইটে দেওয়া উচিত ছিল। ভুলে এতদিন সেই কাজটি করা হয়নি। এখন ওয়েবসাইটে তোলা হয়েছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, শাপলা প্রতীক তফশিলভুক্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। ভবিষ্যতে হবে কিনা সেটি কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।

জানা গেছে, গত ২৬ জুন জামায়াতে ইসলামীর দলীয় প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে ইসি। ওই প্রজ্ঞাপন জারির ১৯ দিন পর ইসির ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের তালিকায় নাম উঠল জামায়াতে ইসলামীর। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১১৫টি প্রতীকের তালিকা করেছে ইসি। ওই তালিকা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফশিলে যুক্ত করে এসআরও জারি করার জন্য সম্প্রতি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রস্তাবে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকও রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড পেইজে দেওয়া এক পোস্টে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকাকে কেন আবার শিডিউলভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

পোস্টে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া লেখেন, “অভিশপ্ত ‘নৌকা’ মার্কাটাকে আপনারা কোন বিবেচনায় আবার শিডিউলভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠালেন? সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে এই গণ-অভ্যুত্থানকে আপনারা জাস্ট বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন। কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এবং কাদের দেওয়ার জন্য এই মার্কা রাখছেন আপনারা? পরাজিতদের স্বপ্নের রিফাইন্ড আওয়ামী লীগকে তাদের মার্কা ফিরিয়ে দিতে চান? বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসাবে নির্বাচন কমিশনের প্রতি প্রশ্ন রইল।” এরপরই গতকাল সকালে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ‘নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের’ তালিকায় আওয়ামী লীগের নাম থাকলেও নৌকা প্রতীক সরিয়ে ফেলা হয়।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, ইসি সচিবের নির্দেশনায় তারা ওয়েবসাইট থেকে প্রতীক সরিয়ে ফেলেন। বর্তমানে ওয়েবসাইটে আওয়ামী লীগের নামের পাশে স্থগিত শব্দ লেখা রয়েছে। দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নাম ও ছবিসহ অন্য কোনো তথ্য নেই। গত ১২ মে আওয়ামী লীগের রাজনীতি স্থগিত করে সরকার। এরপর নির্বাচন কমিশনও দলটির নিবন্ধন স্থগিত করে।

তবে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফশিলে নৌকা প্রতীক থাকছে বলে জানিয়েছেন ইসির সিনিয়র সচিব। তিনি বলেন, প্রতীকের তালিকায় নৌকা সংরক্ষিত থাকবে। নৌকা প্রতীক অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে না।

এদিকে দীর্ঘ নয় বছর পর ইসির ওয়েবসাইটে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নাম ও দলটির প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ওয়েবসাইটে যুক্ত করা হয়েছে। গত ২৬ জুন দলটির নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে ইসি। কিন্তু ওয়েবসাইটে দলটির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি। জানা গেছে, দলটির সর্বশেষ কমিটি ও কাউন্সিলের তারিখ, স্থান এবং ওই কাউন্সিলে উপস্থিত নেতাকর্মীদের নামের তালিকা চেয়ে চিঠি দেয় ইসি। এ সংক্রান্ত চিঠি চালাচালির প্রক্রিয়া শেষ করতে এই সময় নেওয়া হয়।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম