Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

অ্যামচেমের সভায় পরিবেশ উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নিয়ে সরকার কাজ করছে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নিয়ে সরকার কাজ করছে

আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পালটা শুল্ক বসছে-বারবার এসব কথা বলে উদ্বেগ তৈরির দরকার নেই। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার তা করা হচ্ছে। এ মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তার মতে, রানা প্লাজা ধসের পর সবাই মনে করেছিল, বাংলাদেশের গার্মেন্ট খাত ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু সরকার ও ব্যবসায়ীরা একসঙ্গে কাজ করায় খাতটি ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে। একসঙ্গে কাজ করলে সব বাধা জয় করা সম্ভব।

সোমবার রাজধানীর বনানীতে একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) উদ্যোগে আয়োজিত ‘টেকসই বিনিয়োগের প্রসার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সৈয়দা রিজওয়ানা আরও বলেন, সরকার ‘শিল্পকারখানার পানি ব্যবহারের নীতিমালা’ অনুমোদনের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা শিল্প খাতে ভূগর্ভস্থ পানির উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ করবে। এই নীতিমালা কার্যকর হলে আর আগের মতো ভূগর্ভস্থ পানি ফ্রি তোলা যাবে না। অবশ্য এটা একবারে নয়, ধীরে ধীরে শিল্প খাতকে পানি ব্যবহারে মূল্য পরিশোধ করতে হবে এবং পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।

টেকসই বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করতে হলে সম্পদের পুনর্ব্যবহার, বিদ্যুৎ, পানি ও রাসায়নিক কম ব্যবহার করে উৎপাদনে যেতে হবে বলেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, যখন শিল্প খাত পানির জন্য মূল্য পরিশোধ শুরু করবে, তখন তারা পানির ব্যবহারও অধিক দায়িত্বশীলভাবে করবে। যদি সম্পদনির্ভর অর্থনীতিগুলো আনুপাতিক হারে অতিরিক্ত ভোগ করে, তাহলে বৈশ্বিক টেকসই কাঠামো টিকবে না।

বস্ত্র খাতে ওয়াটারলেস ডাইং (পানিহীন রঙ করার প্রযুক্তি) প্রযুক্তির প্রশংসা করে উপদেষ্টা বলেন, বস্ত্র খাতে কিছু ভালো উদ্ভাবন হয়েছে। যেমন ওয়াটারলেস ডাইং। এটি প্রশংসনীয়। জনস্বাস্থ্যের বিষয় মাথায় রেখে সরকার একটি বাধ্যতামূলক কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা বিধিমালা করতে যাচ্ছে। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।

জ্বালানি খাত নিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি সার্বভৌমত্বের যাত্রা এখনই শুরু হওয়া উচিত। প্রতিটি সরকারি অফিসে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার সম্প্রতি নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি গ্রহণ করেছে, যেখানে ২০৩০ সালের মধ্যে মোট জ্বালানির ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আহরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

স্বাগত বক্তব্যে অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পালটা শুল্ক নিয়ে গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে ইতিবাচক সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব। এটি শুধু আমাদের বিষয় নয়, বিশ্বের অনেক দেশই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। আমাদের সক্ষমতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনায় আমাদের অবস্থানও শক্তিশালী করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এলডিসি উত্তরণ ও জলবায়ু প্রতিশ্রুতি রক্ষার পাশাপাশি টেকসই উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও পরিবেশগত অবক্ষয় স্বাস্থ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগ আস্থার ওপর গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করছে। বেসরকারি খাতে সবুজ উদ্যোগ বাস্তবায়নে নীতিগত ফাঁকফোকর ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ‘রিকভার’-এর চিফ ট্রান্সফরমেশন অফিসার ফেহমি এম ইউকসেল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে টেকসইতা বাস্তবায়ন করতে পারলে প্রবৃদ্ধি ১০-১২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। টেকসইতা ব্র্যান্ডের মুনাফাও ৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে। এ জন্যই ৮৫ শতাংশ শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড তাদের সরবরাহ শৃঙ্খলে টেকসই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বাংলাদেশে রিসাইক্লড কটনের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য সংযোজন, আমদানি নির্ভরতা কমানো, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করা সম্ভব।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম