|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মানুষ অন্যান্য মাধ্যমের মতো ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে আসক্ত। ২১ শতকের শুরু থেকে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহারের এক বিস্ফোরণ সূচিত হয়েছে। বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী শতকোটিরও বেশি মানুষ প্রত্যক্ষভাবে ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত। আজ থেকে ৪ বছর আগে তথা ২০১৪ সালের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী কেবল আমেরিকায় প্রতিটি মানুষ সারা মাসে গড়ে ২৭ ঘণ্টা ইন্টারনেট ব্রাউজিং করে সময় ব্যয় করে। আর সারা মাস হাতের মোবাইল ফোনের ওপর ব্যয় করে ৩৪ ঘণ্টা।
নিঃসন্দেহে এ কয়েক বছরে এ হার দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। ইন্টারনেটের ব্যবহার ব্যাপকহারে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর নেতিবাচক বা খারাপ প্রভাবগুলো সামনে উঠে আসছে আরও স্পষ্টভাবে। এসব নেতিবাচক প্রভাব মানুষকে দৈহিক, মানসিক এবং আবেগের দিক দিয়ে চিরস্থায়ী ক্ষতি সাধন করছে। অতিরিক্ত ইন্টারনেটের ব্যবহার কী কী নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে তা বলতে গেলে, নিচের বিষয়গুলো আগে উঠে আসবে।
সৃজনশীলতার ঘাটতি : ইন্টারনেটের শুরুর দিকে মার্ক জাকারবার্গ যেমন ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বানিয়ে চরম সৃজনশীলতার পরিচয় দিয়েছিলেন, ঠিক তেমনই তার আইডিয়া চুরি করা মানুষের অভাব নেই। এক শ্রেণীর মানুষ আছে যারা তাদের সৃজনশীলতা দিয়ে ইন্টারনেটে কনটেন্ট ডেভেলপ করছে। আবার আরেক শ্রেণীর মানুষ আছে যারা এসব কনটেন্ট চুরি করে নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছে। যা আসল কনটেন্ট ডেভেলপারকে নিরাশ করছে নতুন কিছু বানানো থেকে। ইন্টারনেটে এত বেশি তথ্য রয়েছে যে মানুষকে নতুন করে আর ভাবতেই হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের ভাবনার দরজা ইন্টারনেট পর্যন্তই থেমে যাচ্ছে, তাদের নতুন করে নিজে নিজে চিন্তা করে উত্তর আবিষ্কার করতে হচ্ছে না।
সাইবার বুলিয়িং : এখানে বুলিয়িং বলতে বোঝায় অবমাননা করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা। কোনো মানুষকে বাস্তবে বা সামনাসামনি অবমাননা ও খারাপ মন্তব্য করার চেয়ে ইন্টারনেট তথা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা অনেক সহজ। সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন তারকারা এ সাইবার বুলিয়িংয়ের সবচেয়ে বড় শিকার। অনলাইনে সাইবার বুলিয়িংয়ের শিকার একজন ব্যক্তি খারাপ মন্তব্য বা মতামতের কারণে অপমানিত-অপদস্থ বোধ করেন। সাইবার বুলিয়িংয়ের শিকারে আত্মহত্যা পর্যন্ত ঘটে থাকে।
শারীরিক অক্ষমতা : ইন্টারনেটের অত্যন্ত বেশি আসক্তি শারীরিক অক্ষমতার কারণও। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কেবল পড়াশোনা নয়, শারীরিক কর্মকাণ্ডও অন্তর্ভুক্ত থাকে। আর সে কারণেই স্কুল-কলেজে একটি নির্দিষ্ট সময়ে বিরতি বা টিফিন টাইম দেয়া হয়। তবে ইন্টারনেট এমন একটি গ্লোবাল সিস্টেম যেখানে এর ব্যবহারকারীদের কোনো শারীরিক বা কায়িক পরিশ্রম করার দরকার পড়ে না। তাই যে মানুষ বেশি সময় ইন্টারনেট ব্যবহার করে সে তুলনামূলকভাবে খেলাধুলা, ব্যায়ামের মতো শারীরিক কার্যক্রম কম করে থাকে। আর এভাবে ইন্টারনেটের অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষকে শারীরিক অক্ষমতার দিকে নিয়ে যায়। এর ফলে মানুষ শারীরিকভাবে এক সময় দুর্বল প্রাণীতে পরিণত হয়ে যাবে।
রাতে ঘুম না হওয়া : রাত্রে ঘুম না হওয়া এক প্রকার রোগ, যাকে বলা হয় ইনসমনিয়া।
ঘাড়ের ব্যথা : মাথা নিচু করে স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করার অভ্যাস এ সমস্যার অন্যতম কারণ। দীর্ঘদিন অনেক সময় ধরে মাথা নিচু করে স্মার্টফোন বা মোবাইল ব্যবহারের অভ্যাস চিরস্থায়ী ঘাড়ের সমস্যার জন্ম দিতে পারে। মাথা কাত করে, নিচু হয়ে, বাঁকা করে একদিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকার ফলে এটি মানুষের ঘাড়ের ওপর চাপের সৃষ্টি করে যা পরে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার সৃষ্টি করে।
তাই আমাদের ইন্টারনেটের নেতিবাচক দিকগুলো সম্পর্কে অবহিত হয়ে এর ব্যবহার সীমিত করতে হবে। সূত্র : প্রিয়টেক।
-আইটি ডেস্ক
