মেটাভার্সে শিশু ও নারীদের জন্য ‘নতুন হুমকি’
আইটি ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাস্তব জগতে যেমন, তেমনি মেটাভার্স নামের ভার্চুয়াল বাস্তবতাতেও নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। প্রযুক্তির আধুনিক শাখা হিসাবে বিবেচিত এ ভার্চুয়াল জগতে এমন নিপীড়ন এতটাই সাধারণ হয়ে উঠেছে যে, অনেক ব্যবহারকারী এটিকে ‘নিত্যদিনের ঘটনা’ হিসাবে মেনে নিচ্ছেন।
এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বলছে, মেটাভার্সে প্রবেশের মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যেই ব্রিটিশ লেখিকা ও গবেষক লরা বেটস একজন নারী ব্যবহারকারীর অ্যাভাটারকে যৌন নিপীড়নের শিকার হতে দেখেছেন। আশপাশের নারী ব্যবহারকারীরাও জানান, এমন ঘটনা তারা নিয়মিতই দেখেন। দ্য গার্ডিয়ান। মেটার তৈরি এ ভার্চুয়াল জগতে থ্রিডি অডিও, হ্যাপটিক ফিডব্যাক ও মোশন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অভিজ্ঞতাকে বাস্তবের মতো করে তোলা হয়। ফলে নিপীড়নের ঘটনাগুলোও ব্যবহারকারীর মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব ফেলছে। ভয়াবহ বিষয় হলো, শুধু নারীরাই নয়, শিশু-কিশোরীরাও এ নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মেটাভার্সে কিশোরী অ্যাভাটারদের লক্ষ্য করে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীরা প্রায়ই অশোভন আচরণ করছেন। এমনকি ভার্চুয়াল ক্লাবে ৯-১০ বছরের শিশুদের গান গাওয়ার সময়ও তারা আপত্তিকর মন্তব্যের শিকার হচ্ছে।
২০২২ সালে টেকক্রাঞ্চের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, মেটার নিয়োজিত মডারেটররা এ ধরনের হয়রানি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছেন না। বরং অভিযোগকারীদের দোষারোপ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, যা মেটার নীতিগত দুর্বলতাকেই তুলে ধরে। যুক্তরাজ্যের পুলিশ এমনকি ১৬ বছরের এক কিশোরীর মেটাভার্সে ‘ভার্চুয়াল গ্যাং রেপ’-এর অভিযোগ তদন্ত করেছে, যার মানসিক প্রভাব বাস্তব ধর্ষণের ট্রমার মতোই ভয়াবহ ছিল। ‘কাউন্টারিং ডিজিটাল হেইট’ গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি ৭ মিনিটে একজন ব্যবহারকারী মেটাভার্সে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অথচ শতাধিক নিয়ম ভঙ্গের রিপোর্টের পরও মেটা কোনো জবাব দেয়নি। লরা বেটস প্রশ্ন তুলেছেন-যদি এ ভার্চুয়াল জগতে নারীরা নিরাপদ না হন, তবে ভবিষ্যতের ভার্চুয়াল অফিস, ক্লাসরুম বা হাসপাতালেও কি তাদের নিরাপত্তা থাকবে না? ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এভাবে চলতে থাকলে মেটাভার্সের মাধ্যমে জেন্ডার বৈষম্য চিরস্থায়ী রূপ পেতে পারে। মেটার পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য আসেনি।
