Logo
Logo
×

শেষ পাতা

এশিয়া কাপ

ভারত-পাকিস্তান প্রথম ফাইনাল শেষ হাসি কার?

Icon

ইশতিয়াক সজীব

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভারত-পাকিস্তান প্রথম ফাইনাল শেষ হাসি কার?

এবারের এশিয়া কাপে সবচেয়ে আকর্ষক লড়াই দেখা গেল টুর্নামেন্টের সবচেয়ে অর্থহীন ম্যাচে। গত পরশু রাতে দুবাইয়ে ৪০৪ রানের স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচে ‘টাই’ রোমাঞ্চের পর সুপার ওভারে ভারতের কাছে হার মানে সুপার ফোর থেকে সবার আগে বিদায় নেওয়া শ্রীলংকা। সেই দুবাইয়েই আজ এশিয়া কাপের স্বপ্নের ফাইনালে মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান। এশিয়া কাপের ৪১ বছরের ইতিহাসে চিরবৈরী দুই প্রতিবেশীর ফাইনাল এটাই প্রথম। ক্রিকেট রোমান্টিকদের প্রত্যাশা তাই সুপার ফোরের শেষ ম্যাচের মতো আরেকটি জিভে জল আনা লড়াইয়ের। সমস্যা হলো, ভারত-শ্রীলংকা নিয়মরক্ষার ম্যাচে প্রত্যাশার কোনো চাপ ছিল না। দুদলই খেলেছে নির্ভার হয়ে উপভোগের ক্রিকেট। কিন্তু আজকের ফাইনাল হতে যাচ্ছে মহাচাপের এক ম্যাচ। ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান মহারণের চেয়ে নখ কামড়ানো স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচ আর দ্বিতীয়টি নেই।

মাঠের লড়াই চরম একপেশে হয়ে যাওয়ায় মাঠের বাইরের বিতর্কই ইদানীং ক্রিকেটের এল ক্লাসিকোর মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। এবারের আসরে পাকিস্তানকে দুবার উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। কিন্তু দুবারই ম্যাচের ফল ছাপিয়ে শিরোনাম হয়েছে হ্যান্ডশেক-বিতর্ক, ম্যাচ রেফারিকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি, সংবাদ সম্মেলন বয়কট, আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি ও খেলায় রাজনীতি টেনে এনে জরিমানা গোনার মতো অক্রিকেটীয় সব ঘটনা। তবে ফাইনালে ফল ছাপিয়ে যাওয়ার সাধ্য নেই কিছুর। টানা ছয় জয়ের পর ফাইনালে হারলে ভারতের প্রাপ্তির খাতা শূন্য হয়ে যাবে। অন্যদিকে ভারতকে হারিয়ে ১৩ বছর পর এশিয়া কাপ জিততে পারলে পাকিস্তানের নিকট অতীতের সব ব্যর্থতা ঢাকা পড়ে যাবে।

ওয়ানডে ও টি ২০ সংস্করণ মিলিয়ে এশিয়া কাপে আজ ভারতের সামনে নবম ও পাকিস্তানের সামনে তৃতীয় শিরোপার হাতছানি। সব ভুলে দুদলই আঁকছে শুধু শিরোপার ছবি। ভারতের বোলিং কোচ মরনে মরকেল বলেছেন, ‘ছয় ম্যাচ জিতলেও আমাদের আসল কাজটা এখনো বাকি। ফাইনালে উঠে শিরোপা জিততে না পারলে আপনি ব্যর্থ। কুৎসিতভাবে জিতলেও জয় জয়ই।’

একই সুর পাকিস্তানের কোচ মাইক হেসনের কণ্ঠেও, ‘মানুষ শুধু শেষ ম্যাচটাই মনে রাখে। ফাইনালে জয় ছাড়া কিছু ভাবার সুযোগ নেই।’

টি ২০তে ভারতের বিপক্ষে ১৫ ম্যাচে পাকিস্তানের জয় মাত্র তিনটি। তাই বলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে হারকে ভবিতব্য ধরে নিচ্ছে না তারা। ভারতের বোলিংয়ের দুর্বলতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে শ্রীলংকা। ফিল্ডিংয়েও এবার নড়বড়ে ভারত। অন্যদিকে দারুণ ছন্দে আছেন পাকিস্তানের দুই পেসার শাহিন আফ্রিদি ও হারিস রউফ। তবে ব্যাটিংয়ে দুদলের বিশাল ফারাকই শেষ পর্যন্ত ব্যবধান গড়ে দিতে পারে। ফারাকটা বোঝানোর জন্য একটি উদাহরণই যথেষ্ট। এবারের আসরে ছয় ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩০৯ রান করেছেন ভারতের তরুণ ওপেনার অভিষেক শর্মা। স্ট্রাইক রেট ২০৪.৬৩। ফিফটি তিনটি। অন্যদিকে পাকিস্তানের ওপেনার সাইম আইয়ুব ছয় ম্যাচে করেছেন মাত্র ২৩ রান! শূন্য রানে আউট হয়েছেন চারবার। পাকিস্তানের অবশ্য একটি আশার জায়গা আছে। বাদ পড়তে পড়তে ফাইনালে উঠলে তারা ভয়ংকর হয়ে যায়। আনকোরা কেউ হয়ে যান ট্রাম্প কার্ড। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে যেমন বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে ভারতকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন ফখর জামান। সেই ফখর এখন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। সব সংস্করণ মিলিয়ে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর এটাই দুদলের প্রথম ফাইনাল। অনুমিত চিত্রনাট্যে টুইস্টের সম্ভাবনা তাই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম