Logo
Logo
×

শেষ পাতা

জন্ম দিলেন ছেলে মায়ের হাতে দেওয়া হলো মেয়ে

মামলা, ওসিকে শোকজ

Icon

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জন্ম দিলেন ছেলে মায়ের হাতে দেওয়া হলো মেয়ে

চট্টগ্রামের পটিয়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে জন্ম নেওয়া ছেলেসন্তান পালটে মেয়েসন্তান দেওয়ার অভিযোগে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছে। চন্দনাইশ উপজেলার দক্ষিণ কাঞ্চননগরের দিলীপ শীলের ছেলে সুমন শীল এ মামলা করেন। এতে চারজনকে আসামি করা হয়েছে। এরা হলেন- ডা. নওসীন, নার্স থিম চাকমা, ওয়ার্ড বয় চন্দন ও মাসি কাকলি। কন্যা শিশুর প্রকৃত পিতৃত্ব নির্ধারণে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতের কাছে আদেশ চেয়েছেন বাদী।

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহীনা আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শুনানি শেষে বিচারক তাররাহুম আহমেদ মামলা কেন নেওয়া হয়নি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতকে জানাতে পটিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। ওসির বক্তব্য পাওয়ার পর আজ সোমবার নতুন করে আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এজাহারে বলা হয়েছে, পটিয়া উপজেলা পরিষদের সামনের নিউরন নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৩ সেপ্টেম্বর রাত ১১টায় তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে ভর্তি করা হয়। ভোর সাড়ে ৫টায় বাদীর স্ত্রীকে কেবিন থেকে ডেলিভারির জন্য লেবার রুমে নেওয়া হয়। এ সময় বাদী ও তার স্ত্রী তাদের পক্ষ থেকে দাদি বা কোনো একজন নারী অভিভাবক সঙ্গে নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু আসামিরা তা শোনেননি। বরং উলটো নার্সরা তাদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেন। অথচ লেবার রুমে মুখে মাস্ক পরা অজ্ঞাতনামা এক পুরুষ আগে থেকে ছিলেন। ভোর ৬টার দিকে নরমাল ডেলিভারিতে একটি ছেলেসন্তান জন্ম হয়। সে সময় বাদীর স্ত্রী সজাগ ছিলেন এবং স্বাস্থ্যবান ও ফর্সা ছেলেসন্তান দেখতে পান। বাদীর স্ত্রী নবজাতককে তার বুকে দেওয়ার জন্য আসামিদের অনুরোধ করেন। কিন্তু আসামিরা তাকে চুপ থাকতে বলেন। মাকে নবজাতকের মুখ না দেখিয়ে মাক্স পরা সেই পুরুষের হাতে নবজাতককে তুলে দেন। শিশুর জন্মের এক ঘণ্টা পর সকাল ৭টায় ওয়েটিং রুম থেকে বাদীকে ডেকে একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ার কথা জানান। এ সময় বাদী ওই সন্তানের মুখ দেখার পর তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলে স্ত্রী পুত্রসন্তান জন্ম নেওয়ার কথা বাদীকে জানান, ওই সন্তান ফর্সা ও সুঠাম দেহের অধিকারী ছিল। বিষয়টি জানার পর বাদী হাসপাতালে ওই সময় কর্মরতদের চ্যালেঞ্জ করেন এবং তাদের হাতে দেওয়া কন্যাশিশুর ওজন পরিমাপ করে দেখেন ওজন ২ কেজি ৫০০ গ্রাম। কিন্তু বাদীর স্ত্রীর মাতৃত্বকালীন সময়ে সর্বশেষ সন্তান জন্মদানের ১৬ ঘণ্টা আগে করানো আলট্রাসনোপ্রাফির প্রতিবেদনে জানানো হয় ওই শিশুর ওজন ৩ কেজি ১০০ গ্রাম।

এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা না পেয়ে বাদী পটিয়া থানায় যান। কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার অভিযোগ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। পরে রোববার পটিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। মামলায় বাদী তার স্ত্রীর সন্তান প্রসবকালের আগে ও পরে হাসপাতালের সিসিটিভির রেকর্ড, ঘটনার কয়েক দিন আগ থেকে জন্ম নেওয়া সব নবজাতকের নথি জব্দ এবং বাদীর হাতে দেওয়া কন্যাসন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ চান।

সুমন শীল জানান, তিনি ওই ঘটনার পর প্রথমে ৯ সেপ্টেম্বর ও পরে ১৬ অক্টোবর দুই দফায় থানায় অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ডিউটি অফিসার তা গ্রহণ করেননি। পরে ওসিকে জানানো হলে তিনি আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে জানতে দুপুরে পটিয়া থানায় গিয়ে ওসিকে পাওয়া যায়নি। পরে একাধিকবার তাকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। নিউরন হাসপাতালের এমডি মো. শাহাদাতকে ফোন দিলে তিনি ফোনে কথা বলা যাবে না জানিয়ে হাসপাতালে যেতে বলেন। সেখানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম