Logo
Logo
×

শেষ পাতা

এবারের নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কে সম্ভব নয়: শিশির মনির

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

এবারের নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কে সম্ভব নয়: শিশির মনির

আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেও আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, সংসদ ভাঙার ১৫ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিধান ছিল। এখন তো সে রকম পরিস্থিতি নেই। বর্তমানে সংসদও নেই, তাই সেটি ভাঙারও সুযোগ নেই। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার প্রয়োগও এখন সম্ভব নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল সংক্রান্ত চূড়ান্ত আপিল শুনানির চতুর্থ দিনে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি শেষে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

শিশির মনির বলেন, আমরা বলেছি, আপিল মঞ্জুর করা উচিত। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল করা উচিত। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবিধানে এটি পুনরুজ্জীবিত হলেও বাস্তবে তা এখনই কার্যকর করা সম্ভব নয়। কারণ, সংবিধানের আগের ৫৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে এটিকে যে প্রক্রিয়ায় প্রয়োগ করতে হয়, সেই প্রক্রিয়া এখন আর বিদ্যমান নেই।

এ আইনজীবী মনে করেন, সংসদ না থাকলে ভাঙারও প্রশ্ন আসে না। সংসদ ভাঙার ১৫ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু সংসদ ভেঙে গেছে এক বছরেরও বেশি সময় আগে। বর্তমানে দেশ একটি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। তাদের তিনটি ম্যান্ডেট-বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। সেই ধারাবাহিকতায়ই আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর নতুন সংসদ গঠিত হলে তাদের সিদ্ধান্তে আগের তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি পুনর্বহাল বা জুলাই সনদের মেকানিজম অনুসারে নতুন কাঠামো গঠন করা যেতে পারে।

শিশির মনির বলেন, আমরা চাই, আদালতের রায়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরে আসুক। তবে কোনো পর্যবেক্ষণ নয়। আগামী নির্বাচনটি ত্রয়োদশ সংশোধনীর আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কোনো কার্যকর আইন বা সাংবিধানিক সুযোগ নেই।

এর আগে মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল ইস্যুতে শুনানি করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ড. শরীফ ভূইয়া ও ইন্টারভেনার হিসাবে আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক। বৃহস্পতিবার শিশির মনির জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন। এর আগে, ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে ১৪ বছর আগে আপিল বিভাগ রায় দিয়েছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ ছিল ক্ষমতায়, আদালতের রায়ের পর তারা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধন এনে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী এই সরকারব্যবস্থা বাদ দেয় শাসনতন্ত্র থেকে। গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি আবেদন করেন। এরপর গত বছরের অক্টোবরে আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল। তারপর ওই মাসে আরেকটি আবেদন করেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর আরেকটি আবেদন করেন। এ ছাড়া একটি সংগঠন ইন্টারভেনার (পক্ষ) হিসেবে যুক্ত হয়।

রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২৭ আগস্ট লিভ মঞ্জুর (আপিলের অনুমতি) করে আদেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তির এবং বিএনপির মহাসচিবের করা রিভিউ আবেদন থেকে উদ্ভূত আপিলের সঙ্গে রিভিউ আবেদনগুলো শুনানির জন্য যুক্ত হবে বলে উল্লেখ করা হয়।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম