আইএমএফের মিশন আসছে আজ
কিস্তি পেতে শর্ত মানবে না বাংলাদেশ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের ষষ্ঠ কিস্তি পেতে কঠিন কোনো শর্ত মেনে নেবে না বাংলাদেশ। সংস্থাটির কোনো শর্ত বাস্তবায়ন করতে গেলে যদি মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে তা করা হবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে এখন মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণই বড় চ্যালেঞ্জ। এটি এখন নিম্নমুখী, এই হার বাড়তে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। টাকার মান কমাবে না, বাড়াবে না ডলারের দাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে নতুন করে বাড়তি কোনো শুল্ক আরোপ করবে না। আইএমএফ মিশনের সঙ্গে বৈঠক উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার তৈরি প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের ষষ্ঠ কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে আইএমএফের একটি মিশন আজ বুধবার ঢাকায় আসছে। ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত তারা অবস্থান করবে। তারা এবার অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অন্যান্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবে। ১৩ নভেম্বর বিকালে সংবাদ সম্মেলন করার কথা বলেছে।
সূত্র জানায়, এবারের বৈঠকে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার, খেলাপি ঋণ কমানো, বাজেট ব্যবস্থাপনা, সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনা, কর্মসংস্থান বাড়ানো, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে সরকারের খরচ, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। সূত্র জানায়, এবারও আইএমএফ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কেনাবেচা বন্ধ করতে চাপ দেবে। তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে টাকার মান কমানো ও ডলারের দাম বাড়ানো। বর্তমানে ডলারের দাম ১২২ থেকে ১২৩ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে এটি হলে আবার মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে। মূল্যস্ফীতির হার ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৮ শতাংশের নিচে নামানো হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রেখে মূল্যস্ফীতির হার কমাতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ জন্য তারা ডলারের দাম বাড়বে-এমন কোনো পদক্ষেপে যাবে না। কিংবা আইএমএফের এমন কোনো শর্ত মেনে নেবে না।
পাশাপাশি পণ্য মূল্য বাড়তে পারে এমন কোনো পদক্ষেপেও যাবে না সরকার। কারণ পণ্য মূল্য বাড়লেই দেশে মূল্যস্ফীতির হার আবার ঊর্ধ্বমুখী হবে। এ জন্য রাজস্ব বাড়ানোর কোনো পদক্ষেপে নিত্যপণ্য আমদানি বা উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতের ক্ষেত্রে বা অভ্যন্তরীণভাবে বাড়তি কোনো শুল্ক আরোপ করা হবে না। আইএমএফ রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য বরাবরই চাপ দিয়ে আসছে। এবারও এ বিষয়টি আইএমএফ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কার্যসূচিতে রেখেছে।
সংস্থাটি কর্মসংস্থান বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর আগে আইএমএফ এমন বিষয়ে আলোচনায় আগ্রহ দেখায়নি। সম্প্রতি শেষ হওয়া আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায়ও বৈশ্বিকভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেওয়া হয়। এর আলোকে এবারের মিশনও কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে জানতে একাধিক বৈঠক করবে। এর মধ্যে কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হবে।
