Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ফরিদপুর আ.লীগ সভাপতির স্বীকারোক্তি

‘লকডাউন’ সফলে টাকা দিয়েছেন নিক্সন চৌধুরী

জাহিদ রিপন

জাহিদ রিপন

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

‘লকডাউন’ সফলে টাকা দিয়েছেন নিক্সন চৌধুরী

যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কথিত ‘ঢাকা লকডাউন’ সফলের লক্ষ্যে নাশকতা করতে টাকা দিয়েছেন ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য দিয়েছেন গ্রেফতার ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ফারুক হোসেন ওরফে বোম ফারুক। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল এসব তথ্য জানান। ১৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগ ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি দিয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে ফারুক হোসেনকে আদালতে পাঠায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এর আগে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী এলাকার নুরজাহান টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ওই বাসা থেকে যুব মহিলা লীগের সদস্য নাসরিন আক্তারকেও গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশ সুপার জানান, সারা বাংলাদেশকে অচল করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলা লীগের কর্মীরা রোববার ফরিদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি ফারুক হোসেনের মদদে হয়। বর্তমান সরকারকে উৎখাত, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরসহ সরকারের বিপক্ষে নানা ধরনের উসকানিমূলক স্লোগান দেওয়া হয় সেই মিছিল থেকে। এরপর বিষয়টি নিয়ে মাঠে নামে পুলিশ। বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার সন্ধ্যায় শহরের ঝিলটুলী এলাকার নুরজাহান টাওয়ারের ১০ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করা হয় ফারুক হোসেন ও নাসরিন আক্তারকে।

পুলিশ সুপার জানান, আওয়ামী লীগের ডাকা ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিকে সফল করার জন্য ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক এমপি নিক্সন চৌধুরী তার কাছের মানুষ ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফারুক হোসেনকে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছেন। সেই টাকা থেকে চার লাখ টাকা ফারুক এক ব্যক্তিকে দিয়েছেন বলে জানান। সেই ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়া ফারুক বিভিন্ন সময় প্রোগ্রাম করার জন্য বিকাশে তার দলীয় লোকজনকে অর্থ পাঠান বলে জানিয়েছেন। ফারুক হোসেনের মোবাইল ফোন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ঢাকা লকডাউন সফল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করেছেন তিনি।

ফারুক হোসেনের নামের সঙ্গে ‘বোম’ শব্দ যোগ হওয়া প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, ১৯৮১ সালে তিনি শহরের টেপাখোলা এলাকায় অবস্থিত ইয়াসিন কলেজের ভিপি ছিলেন। ওই সময়ে ছাত্রদলের ওপর হাতবোমা নিক্ষেপের সময় বোমাটি ফারুক হোসেনের হাতে বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে তার বাম হাতের একটি আঙুল উড়ে যায়। এরপর থেকে ফারুক হোসেনের নামের সঙ্গে ‘বোম’ শব্দ যোগ হয়ে যায়। ফারুকের নামে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থাকায় চারটি এবং রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় দুটিসহ মোট ছয়টি মামলা রয়েছে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, এ ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হবে ফারুকের বিরুদ্ধে। ১৩ নভেম্বর ‘ঢাকা লকডাউনে’ নাশকতা রোধে ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে গত তিন দিনে ৬০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেক যুবলীগ নেতা রয়েছেন। গ্রেফতার অভিযান চলমান রয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম