Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ফয়েজ তৈয়্যবের পদত্যাগ দাবি

মোবাইল ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সড়ক অবরোধ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মোবাইল ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সড়ক অবরোধ

বিভিন্ন দাবিতে বুধবার রাতে রাজধানীর প্রগতি সরণি অবরোধ করেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা -যুগান্তর

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের পদত্যাগের দাবিতে বুধবার বিকালে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক। কাওরান বাজার, প্রগতি সরণিসহ বিভিন্ন সড়কে আন্দোলনে নামেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা।

এদিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সংস্কার, একচেটিয়া সিন্ডিকেট প্রথা বিলোপ এবং উন্মুক্ত মোবাইল আমদানির সুযোগ সৃষ্টিসহ কয়েকটি দাবিতে ব্যবসায়ীরা সড়ক অবরোধ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ব্যবসায়ীরা সড়কে টায়ার ও কাঠের ফালিতে আগুন ধরিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন-‘দফা এক, দাবি এক, ফয়েজ তৈয়্যবের পদত্যাগ।’ এ সময় কাওরান বাজার সার্ক ফোয়ারার সামনে একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এ সময় তীব্র যানজটে পড়ে নগরবাসী। এদিকে দেশের বাজারে মোবাইল ফোনের সেট এনইআইআর করতে আরও তিন মাস অর্থাৎ ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে সরকার। ফলে ১৫ মার্চের পর বাজারে বিক্রির জন্য রাখা অথবা আমদানির মোবাইল সেট এনইআইআরভুক্ত না করলে আর ব্যবহার করা যাবে না।

বুধবার সচিবালয়ে টেলিযোগাযোগ সচিব আব্দুন নাসের খানের সভাপতিত্বে মোবাইল ফোন সেট বিক্রেতাদের সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক সমিতি, বিটিআরসি, এনবিআর এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা শিগগির আমদানি করা ফোনের ওপর শুল্ক কমানোর দাবি জানান।

পুলিশের তেজগাঁও অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (এসি) মোহাম্মদ আক্কাছ বুধবার বিকালে বলেন, মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা সার্ক ফোয়ারা মোড়ে অবরোধ করে রাখায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে সড়ক অবরোধের কারণে সার্ক ফোয়ারা মোড় হয়ে চারদিকের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। অফিসফেরত মানুষ ও পথচারীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট।

রাজধানীর প্রগতি সরণির রাস্তা বন্ধ করে অভিন্ন আন্দোলনে নামেন যমুনা ফিউচার পার্কের মোবাইল ব্যবসায়ীরা। তারা দাবি করেন, এনইআইআর সংস্কার ছাড়া ১৬ ডিসেম্বর চালুর ঘোষণা দিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব তাদের সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করেছেন। আমরা আগেও বলেছি-আমরা চাই সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে নিয়মমাফিক ব্যবসা করতে। কিন্তু সিন্ডিকেটের টাকায় প্রস্তুত করা সিস্টেমে আমাদের জিম্মি করা আমরা মানি না।

যমুনা ফিউচার পার্ক এমবিসিবির সাধারণ সম্পাদক আজাদ ফয়সাল যুগান্তরকে বলেন, এনইআইআর চালু করলে ২০ লাখ মানুষের রুটি-রুজিতে আঘাত আসবে। আমরা চাই সরকার এনইআইআর চালু করুক। কিন্তু সেটা সব পক্ষকে সমান সুযোগ দিয়ে। কোনো সিন্ডিকেটের অর্থায়নে তৈরি করা সিস্টেমে আমরা জিম্মি থাকতে চাই না। এদিকে বিটিআরসি ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে।

সরকার জানিয়েছে, এনইআইআরের আওতায় প্রতিটি মোবাইল নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হবে; এতে অবৈধ মোবাইল ব্যবহার আর সম্ভব হবে না। একই সঙ্গে বৈধ আমদানির ওপর শুল্ক কমানো এবং প্রবাসীদের ফোন আনার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধার কথাও জানানো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এনইআইআরের বর্তমান কাঠামো, বাজারে সিন্ডিকেট শক্তির প্রভাব এবং আমদানির সীমাবদ্ধতা তাদের ব্যবসাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সেই প্রেক্ষিতেই আজকের একদফা আন্দোলনে তারা নেমেছেন।

এদিকে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, কোনো ধরনের রেজিস্ট্রেশন না করে আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত সেট বিক্রি বা ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু এরপর এনইআইআরের রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বিক্রি বা ব্যবহার করা যাবে না। টেলিযোগাযোগ সচিব আব্দুন নাসের খান যুগান্তরকে বলেছেন, সরকার প্রথমে ১৫ দিনের বেশি সময় দিতে রাজি হয়নি। কিন্তু আন্দোলনরত ব্যবসায়ী নেতারা ৩ মাসের সময় চেয়েছেন। মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারী সংগঠনের নেতারা এতে তেমন কোনো আপত্তি করেননি। তাই তাদের ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার মোবাইল সেট বিক্রেতা এবং প্রস্তুতকারক দুই পক্ষ সচিবালয়ে এসে এই নিয়ে স্মারক সই করবেন। মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ-এমবিসিবির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম বুধবার বৈঠকের পর যুগান্তরকে বলেছেন, আমরা তিন মাস ব্যবসা করার সময় পেয়েছি। সেটি আমরা মেনে নিয়েছি। আমদানি করা প্রতিটি সেটের ওপর ৬১ শতাংশের বেশি শুল্ক নির্ধারণ করেছে এনবিআর। এটা একেবারে অন্যায়। এটি নিয়ে পরে আমরা এনবিআর এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসব।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম