Logo
Logo
×

শেষ পাতা

পটিয়ায় তোলপাড়

থানায় ঘুমে পুলিশ, সেলফি ভিডিও কলে ছাত্রলীগ নেতা

Icon

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

থানায় ঘুমে পুলিশ, সেলফি ভিডিও কলে ছাত্রলীগ নেতা

পটিয়া থানায় বুধবার ঘুমন্ত পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা মহিমের সেলফি -সংগৃহীত

চট্টগ্রামের পটিয়ায় গ্রেফতার হওয়া ছাত্রলীগ নেতা মো. শোয়াইব-উল ইসলাম মহিম (২১) থানা হাজতে না থেকে থাকছেন কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যের কক্ষে। সেখানে বসেই ঘুমন্ত পুলিশ সদস্যকে নিয়ে মোবাইল ফোনে সেলফি তুলেছেন, নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন এবং লাইভ চ্যাট করেছেন। চেয়ারে বসে ঘুমাতে থাকা পুলিশ সদস্যকে নিয়ে সেলফি তুলে বুধবার রাতে ফেসবুকে আপ করে তিনি লেখেন-‘ঘুম ভালোবাসিরে এএএ...। জীবন যেমনই হোক, বিনোদন মিস করা যাবে না।’

তিনি আরও লেখেন-‘আমি পটিয়া থানায়। দেখা হবে আবারও, ফিরব বীরের বেশে কোনো একদিন, জয় বাংলা।’ আরও লেখেন, ‘এই দিন দিন নয়, দিন আরও আছে।’ ফেসবুক ছবিতে দেখা যায়, ছাত্রলীগ নেতার পেছনে চেয়ারে বসা এক পুলিশ কনস্টেবল। ভিডিও কলে আরেক ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে কথাও বলেন সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেফতার হওয়া নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা মহিম।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে থানায় পুলিশি হেফাজতে থাকা আসামির মোবাইল ফোন ও ফেসবুক ব্যবহার নিয়ে আলোচনা চলছে। তাকে গ্রেফতারের পর হাজতখানায় না রেখে কেন কর্তব্যরত কর্মকর্তার কক্ষে রাখা হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতারা। ওই ছাত্রলীগ নেতা পটিয়া উপজেলার বরলিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল বশরের ছেলে এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি। বুধবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

জানা গেছে, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের ভোরে পটিয়ার বররিয়া ও গৈড়লারটেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে স্লোগান দেওয়া হয়। এর ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় পটিয়া থানায় ৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলায় ১৪ জনকে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত ২৫ জনকে আসামি করা হয়। গৈড়লারটেকের ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন শোয়াইব-উল ইসলাম মহিম।

আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হলেও পটিয়ায় দলটির নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে ও গোপনে উভয়ভাবেই দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এরপর বুধবার রাতে পৌর এলাকার কাগজীপাড়া থেকে শোয়াইবকে গ্রেফতারের পর থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। কিন্তু তাকে রাখা হয় বিশেষ একটি কক্ষে। সেখানে পুলিশের উপস্থিতিতে ফেসবুকে সারা রাত দলের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে লাইভ চ্যাটিং করেন। এ সময় তার হাতে হ্যান্ডকাফ পরা দেখা যায়।

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে পুলিশ মহিমের কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে নেয় এবং তার ফেসবুক স্ট্যাটাসগুলো মুছে দেয়। পটিয়া থানার ওসি জিয়াউল হক বলেন, ওই ছাত্রলীগ নেতা ১৬ ডিসেম্বরের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলার আসামি। তাকে ওই মামলায় চালান দেওয়া হয়েছে। হাজতে না রেখে পুলিশ হেফাজতে বিশেষ কক্ষে রাখা এবং সেখান থেকে মোবাইল ব্যবহারের সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাকে একটি কক্ষে রাখা হয়েছিল। হয়তো সে সময় তার কাছে মোবাইল ছিল। তাকে থানায় রেখে পুলিশ অভিযানে বের হয়েছিল। সে ওই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম