Logo
Logo
×

শেষ পাতা

শেয়ারবাজারে আইন লঙ্ঘন

এমারেল্ড অয়েলের পরিচালকদের ২৫ লাখ টাকা জরিমানা

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

এমারেল্ড অয়েলের পরিচালকদের ২৫ লাখ টাকা জরিমানা

শেয়ারবাজারে বিতর্কিত কোম্পানি এমারেল্ড অয়েলের পাঁচ পরিচালককে মোট ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

একই সঙ্গে কোম্পানির উদ্যোক্তা, পরিচালক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা, কোম্পানি সচিব এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কর্মকর্তার বিও অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছে। আইন অনুসারে নির্ধারিত সময়ে আর্থিক হিসাব না দেয়ায় মঙ্গলবার বিএসইসির কমিশন সভায় কোম্পানির বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এমন একসময় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হল, যখন মিনরি নামের জাপানি একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে কোম্পানিটি বিক্রির প্রক্রিয়া চলছিল।

এদিকে পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের এক পরিচালককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা এবং ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সকে সতর্ক করেছে কমিশন। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এমারেল্ড অয়েলের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে শুরু থেকেই বিনিয়োগকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে সতর্ক করে আসছে দৈনিক যুগান্তর।

বিএসইসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এমারেল্ড অয়েল ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত আর্থিক হিসাব জমা দেয়নি। এ ধরনের কাজ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস ১৯৮৭ সালের ১২ (৩এ) ধারার লংঘন। ফলে তাদের প্রত্যেক পরিচালককে পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

বর্তমানে কোম্পানিটির পাঁচজন পরিচালক রয়েছেন। এরা হলেন- সৈয়দ মনোয়ারুল ইসলাম, সৈয়দ হাসিবুল গনি গালিব, সজন কুমার বসাক, অভিতাভ ভৌমিক এবং এএসএম মনিরুল ইসলাম। তবে বেসিক ব্যাংকসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার কারণে তিনজন পরিচালক পলাতক। এরা হলেন- সৈয়দ মনোয়ারুল ইসলাম, সৈয়দ হাসিবুল গনি গালিব এবং এএসএম মনিরুল ইসলাম।

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে কোম্পানিটি বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।

মিনরি নামে জাপানি একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির প্রক্রিয়া চলছিল। কোম্পানিটির মালিক বাংলাদেশি হলেও তারা জাপানেই ব্যবসা করছে। বিক্রির প্রক্রিয়া অনেকদূর এগিয়ে ছিল। কিন্তু বেসিক ব্যাংকের কাছে প্রতিষ্ঠানের ৭৫ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে। এই ঋণের কারণেই ব্যাংকটির অনুমোদন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বেসিক ব্যাংক সূত্র জানায়, এই অনুমোদনের ক্ষেত্রে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে তারা।

সূত্র জানায়, কোম্পানিটি বিক্রির জন্য তাদের বোর্ড মিটিং সিদ্ধান্ত জরুরি। আর বোর্ড মিটিংয়ের জন্য কোরাম পূরণে পাঁচজন সদস্যের তিনজনের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। কিন্তু মাত্র দু’জন সদস্য উপস্থিত রয়েছেন। এরা হলেন- সজন কুমার বসাক এবং অমিতাভ ভৌমিক।

এ ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান সৈয়দ মনোয়ারুল ইসলাম পলাতক থাকলেও তাকে বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থিত দেখিয়ে তার সই জাল করে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি সন্দেহ হলে তা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয় ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে ঋণ নেয়ার সময় চেয়ারম্যানের যে সই ছিল ওই সইয়ের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়নি। এ ছাড়াও চেয়ারম্যানের সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করতে পারেনি ব্যাংক।

এর আগে ব্যাংকের পক্ষ থেকে মিনরিকে প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট একটি সময়ের মধ্যে ১৫ কোটি টাকা জমা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এমারেল্ড। ফলে বিক্রির ব্যাপারে বেসিক ব্যাংকের অনুমোদন পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত। এ অবস্থায় বিএসইসির এ সিদ্ধান্তের পর কোম্পানিটি বিক্রির আপাতত কোনো সম্ভাবনা থাকল না।

এর আগেও কোম্পানির ২ শতাংশেরও বেশি উদ্যোক্তা শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে। ২০১৬ সালের ৩০ জুন কোম্পানির উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত শেয়ারের পরিমাণ ছিল ৩০ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা ২৮ দশমিক ৪২ শতাংশে নেমে এসেছে। এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য কোম্পানির পরিচালক সজন কুমার বসাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ দিকে বিক্রির খবর বাজারে ছড়িয়ে পড়ায় সাম্প্রতিক সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছিল। তবে বর্তমানে আবার কমতে শুরু করেছে।

এমারেল্ড অয়েল

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম