Logo
Logo
×

শেষ পাতা

যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে স্বরূপকাঠি পৌরসভার মেয়র

অগোছালো পৌরসভাকে শৃঙ্খলায় এনেছি

Icon

একেএম কাওসার উদ্দিন তালুকদার, স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর)

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে স্বরূপকাঠি পৌরসভার মেয়র

স্বরূপকাঠি পৌরসভার যাত্রা শুরু ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভাটির আয়তন ৪৯৮ বর্গকিলোমিটার। এখানে ২৮ হাজার ৫২৯ জন লোকের বাস।

মোট ভোটার ১৬ হাজারের কিছু বেশি। ২০১২ সালে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। বর্তমানে মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন মো. গোলাম কবির।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বিএনপির প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম ফরিদকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। দায়িত্ব পালনের সাড়ে তিন বছরে তিনি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক সংস্কার (কার্পেটিং ও আরসিসিকরণ) ও সম্প্রসারণ, সড়কবাতি স্থাপন, শহরের গুরুত্বপূর্ণ ৭-৮টি স্থানে আধুনিক ওয়াশক্লক ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণসহ অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন।

তারপরও রয়ে গেছে অনেক সমস্যা। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। উপজেলা পরিষদের সামনের মূল সড়ক ও থানার মোড়সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ডুবে যায়। এসব কারণে পৌরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা রয়েছে।

শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. মাহমুদুর রহমান খানের অভিযোগ- পৌরসভাটি প্রথম

শ্রেণির হলেও পৌরবাসী প্রত্যাশিত সুবিধা পাচ্ছেন না। পৌর এলাকায় অটো ও টেম্পোস্ট্যান্ড না থাকায় প্রধান ৩টি সড়কের ওপর যত্রতত্র টেম্পো দাঁড় করিয়ে

রাখা হয়। এতে পথচারীদের চলাচলে সমস্যা হয়। এখানে বয়স্ক নাগরিক ও শিশুদের জন্য বিনোদন পার্ক নেই। নেই খেলার মাঠ। বর্জ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার উন্নতি হয়নি। পৌরসভার আরেকজন বাসিন্দা বলেন, এক শ্রেণির অবৈধ দখলদার পৌর এলাকার বিভিন্ন খাল দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে পয়ঃনিষ্কাশনে বাধার সৃষ্টি করছে।

তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষ। পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের মধ্যবর্তী স্থানের ছোট খালটি পারিবারিক ও দোকানপাটের বর্জ্য ফেলে ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। এ ব্যাপারেও উদাসীন পৌর কর্তৃপক্ষ।

এসব অভিযোগের জবাব ও নিজের সফলতার কথা জানাতে যুগান্তরের মুখোমুখি হয়েছিলেন মেয়র মো. গোলাম কবির। তিনি বলেন, পৌর এলাকার প্রধান প্রধান সড়ক পাকা করাসহ ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি। সড়কবাতি স্থাপন করেছি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ ৭-৮ স্থানে আধুনিক ওয়াশক্লক ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করেছি। ক্লিনার দিয়ে সব সময় সড়ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা করেছি। সর্বোপরি একটি অগোছালো পৌরসভাকে নাগরিক সেবাদান প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছি। এ কারণে পৌরবাসী আমার ওপর সন্তুষ্ট।

মেয়র বলেন, নির্বাচনের সময় দেয়া প্রতিশ্রুতির ৭০ ভাগ ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করেছি। বাকি কাজ আগামী মেয়াদের মধ্যেই শেষ করতে পারব বলে আশা করছি। অনেকগুলো প্রকল্প চলমান রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে পৌরসভায় জলাবদ্ধতাসহ অনেক সমস্যাই থাকবে না।

বৃষ্টি হলে পৌরসভার সামনের রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন দফতরের সহযোগিতা ছাড়া পৌরসভা চাইলেই একা সব কাজ করতে পারে না। পৌরসভার সামনের সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের। এ সড়কটি অন্তত এক ফুট উঁচু করে সংস্কার করা দরকার। কিন্তু ওই দফতর সহযোগিতা না করলে তো পৌরসভার পক্ষে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়।

খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে খালগুলো উদ্ধার করব। তিনি বলেন, পৌর কবরস্থান, শ্মশানঘাট ও পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী অর্থবছরে এই কাজ সম্পন্ন করতে পারব বলে আশা করছি।

মেয়র বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ কম পাচ্ছি। এরপরও পরিকল্পিত কর্মসূচির মাধ্যমে পৌরসভাকে নাগরিকবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।

এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম কবির বলেন, ইজিবি টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদাররা কাজ পান। এখানে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেয়ার সুযোগ নেই। যথাযথ কাজ আদায়ের পরেই ঠিকাদারকে বিল প্রদান করা হয়।

তিনি বলেন, পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের পরামর্শ এবং সহযোগিতা নিয়ে স্বরূপকাঠি পৌরসভাকে আধুনিক ও মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

স্বরূপকাঠি পৌরসভার মেয়র

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম