দামে খুশি গদখালির চাষিরা
ক্ষতি পোষানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছে ভালোবাসার ফুল
ইন্দ্রজিৎ রায়, যশোর
প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মহামারী করোনার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানে। লন্ডভন্ড হয় ফুলচাষিদের জীবন-জীবিকা। সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নে আবারও ফুলচাষ শুরু করেন যশোরের গদখালি এলাকার চাষিরা। এবার বসন্তবরণ ও ভালোবাসা দিবস ঘিরে ফুলের বাজার চাঙা হয়েছে। এ দামে ৮০ শতাংশ ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন ফুলচাষিরা। দুটি দিবস ঘিরে ফুলের রাজধানী গদখালিতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার্স সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, করোনা ও আম্ফান-পরবর্তী বাজারে ফুলের দামে চাষিরা খুশি। দুটি দুর্যোগে চাষিদের অন্তত সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা কঠিন। তার পরও ভালোবাসা দিবস ও বসন্তবরণ ঘিরে ফুলের বাজার চাঙা হয়েছে। দুটি দিবসে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে। এতে চাষিরা ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়েছেন।
বিদেশি প্লাস্টিক ফুল আমদানি বন্ধের দাবি জানিয়ে আব্দুর রহিম বলেন, সম্ভাবনাময় দেড় হাজার কোটি টাকার ফুলের বাজার রক্ষা ও সম্প্রসারণ করতে সারা দেশে সামাজিক অনুষ্ঠান সীমিত আকারে চালুর রাষ্ট্রীয় ঘোষণা দিতে হবে।
এদিকে, শনিবার ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালিতে ফুলের বাজার ছিল জমজমাট। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা আসেন ফুল কিনতে। ফুলের দামে চাষিরাও খুশি। রজনীগন্ধার পিস ৭-৮ টাকা, গ্লাডিওলাসের পিস ৬-১৫ টাকা, গোলাপের পিস ১০-১২ টাকা, জারবেরা ১০-১৫ টাকা পিস, লং স্টিক ৩০ টাকা পিস, চন্দ্রমল্লিকা ২-৩ টাকা পিস, গাঁদাফুল এক হাজার পিস ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ঝিকরগাছার বর্ণি নারাঙ্গালী গ্রামের চাষি আবু তাহের বলেন, ২০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ করেছি। বসন্তবরণ ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে ফুলের ভালো দাম পেয়েছি। ইতোমধ্যে ছয় লাখ টাকার ফুল বিক্রি করেছি। আশা করছি এ মৌসুমে ৩৫-৪০ লাখ টাকার ফুল বিক্রি করতে পারব। এতে করোনা ও আম্ফানের ক্ষতির ৮০ শতাংশই পুষিয়ে নিতে পারব।
সোলায়মান হোসেন নামে আরেক চাষি বলেন, তিনি ছয় হাজার পিস গোলাপ ফুল ১১ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। যা গত বছর বিক্রি করেছিলেন ১৭ থেকে ১৮ টাকা দরে। করোনা ও আম্ফানের পরে এ দামে লাভে যাওয়া যাবে না। তবে ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।
পাইকারদের দাবি, গত বছরের তুলনায় গোলাপের দাম এবার একটু কম। তবে আট টাকা কমে তারা কিনতে পারেননি। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় ফুলের চাহিদা কমেছে। সেই হিসাবে একটু বেশি দামে কিনে বিক্রি করতে পারবেন কি না সংশয়ও প্রকাশ করেছেন। ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান বলেন, বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস সামনে রেখে প্রস্তুতিটা ভালোই ছিল। আশা করছিলাম, এ বছর গোলাপের দাম ১৫ টাকা করে পাব। কিন্তু দাম তিন-চার টাকা করে কম পাইছি। অন্য ফুল রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাসের দামও অন্য বছরের তুলনায় কম।
