ঈদের ছুটিতে কম ডেলিভারি
চট্টগ্রাম বন্দরে বেড়েছে কনটেইনার জট
মজুমদার নাজিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ১৯ মে ২০২১, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ডে কনটেইনার জট। বুধবারের ছবি -যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নানা উদ্যোগের পরও ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারের চাপ বেড়েছে। আমদানিকারকরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম পণ্য ডেলিভারি নেওয়ায় বন্দর ইয়ার্ডে কনটেইনারের স্তূপ জমতে শুরু করেছে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, ইয়ার্ডে এখনো যে পরিমাণ কনটেইনার রয়েছে, তাতে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ঈদের ছুটি শেষে ধীরে ধীরে ডেলিভারি বাড়ছে। তাই কনটেইনারের চাপ কয়েকদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসতে পারে।
জানা যায়, ঈদের ছুটি শুরুর আগে বন্দর ইয়ার্ডে কনটেইনারের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৬ হাজার টিইইউএস (২০ ফুট সমমানের কনটেইনার)। এক সপ্তাহ পর মঙ্গলবার তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৪০ হাজার। কয়েকদিন ধরেই কনটেইনারের সংখ্যা ৪০ হাজারের ঘরে থাকছে, যা স্বাভাবিক সময়ে থাকে ৩৬-৩৭ হাজার।
চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ধারণক্ষমতা ৪৯ হাজার টিইইউএস। আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী বন্দরের ভেতরে হ্যান্ডলিং কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে কনটেইনারের সংখ্যা ধারণক্ষমতার ৭০ শতাংশ রাখতে হয়। এর বেশি হলে স্বাভাবিক পণ্য হ্যান্ডলিং ব্যাহত হতে পারে।
কনটেইনারের সংখ্যা ধারণক্ষমতার কাছাকাছি গেলে অথবা অতিক্রম করলে জাহাজ থেকে নতুন পণ্য নামিয়ে রাখার জায়গা থাকে না। আবার কনটেইনার নাড়াচাড়া করা কিংবা ট্রেলারে তুলতেও অসুবিধা হয়। কিছু কনটেইনার খুলে ভেতরে থাকা পণ্য ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানেও পরিবহণ করা হয়। এজন্য ফাঁকা জায়গার প্রয়োজন পড়ে। কনটেইনার বেড়ে গেলে ফাঁকা জায়গা কমে যায়। এতে বন্দরের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হয়।
প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে বন্দরের পক্ষ থেকে পণ্য ডেলিভারি স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে কলকারখানা বন্ধ থাকে বলে আমদানিকরাকরা পণ্য ডেলিভারি নিতে আগ্রহী হন না। এছাড়া পণ্য ডেলিভারিতে নিয়োজিত সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলোও বেশির ভাগই বন্ধ থাকে। তাই এই সময়ে কনটেইনারের সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। ঈদুলফিতরের ছুটিতে কনটেইনার জট এড়াতে এবার বেশ আগেভাগেই কিছু উদ্যোগ নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। ঈদের দিন শুধু আট ঘণ্টা বন্দরের কাজ বন্ধ রাখা হয়।
এছাড়া অন্য সময় পণ্য খালাস, জাহাজে তোলা ও ডেলিভারি কার্যক্রম চালু ছিল। কাস্টমস, অফডক, ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ঈদের সময় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছিল যেন আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা টাকা জমা দেওয়াসহ ডকুমেন্টেশনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে পারেন। এতে কিছু সুফল মিললেও ডেলিভারিতে ধীরগতি বন্ধ করা যায়নি।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক যুগান্তরকে বলেন, ঈদের ছুটিতে কনটেইনারের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। ঈদের আগের ও পরের দিন সরকারি ছুটি থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করেছেন। ওই সময় জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হয়েছে। কিন্তু ডেলিভারি কম হয়েছে। তিনি আরও বলেন, একসময় প্রায় প্রতিদিনই ইয়ার্ডে ৪০-৪২ হাজার কনটেইনার থাকত। মাঝে আমাদের কিছু উদ্যোগের ফলে তা ৩৬-৩৭ হাজারে নেমে আসে। ঈদের ছুটিতে আবার ৪০ হাজারে পৌঁছলেও পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না। বন্দর থেকে মঙ্গলবার সাড়ে ৪ হাজার কনটেইনার ডেলিভারি হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আশা করছি, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।
