চট্টগ্রামে বেড়েছে গরম কাপড়ের বেচাকেনা
এ মৌসুমে ব্যবসা হাজার কোটি টাকা
আহমেদ মুসা, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কয়েক দিনের শীতের তীব্রতায় চট্টগ্রামে জমে উঠেছে গরম কাপড়ের ব্যবসা। ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত শপিংমলে শীতের কাপড়ের বেচাকেনা বেড়েছে। পাশাপাশি বন্দরনগরীর কাপড়ের পাইকারি বাজারগুলোও দু’সপ্তাহ ধরে জমজমাট। ক্রেতাদের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর তথ্যমতে, পাইকারি ও খুচরা মিলিয়ে এবারে চট্টগ্রামে হাজার কোটি টাকার শীতবস্ত্রের বিকিকিনি হবে।
রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এ বাজারের ১১০টি মার্কেটের প্রায় ৫০ শতাংশ দোকানে শীতের কাপড় তোলা হয়েছে। সে হিসাবে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার পাইকারি ও খুচরা দোকান যদি দৈনিক ১০ হাজার টাকার বিক্রিও করে, তিন মাসে এ পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৫০ কোটি টাকা। বন্দর দিয়ে তাইওয়ান, কোরিয়া, জাপান প্রভৃতি থেকে নিয়ে আসা হয় পুরাতন কাপড়ের গাঁট। নগরীর হকার্স মার্কেটসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা এখান থেকে সেই গাঁট কিনে নিয়ে যান। মূলত নিু আয়ের মানুষদের টার্গেট করে এসব কাপড় আনা হয়। চলতি মৌসুমে তারা ৫০ কোটি টাকার ব্যবসার কথা জানিয়েছেন।
নগরীতে সস্তা দামে গরম কাপড় কিনতে নিু ও মধ্য আয়ের মানুষরা ফুটপাতের দোকানে ভিড় করছেন। প্রতিবছর শীতের আগমনকে ঘিরে নগরীতে মৌসুমি হকারদের আনাগোনা বেড়ে যায়। বাড়তি রোজগারের আশায় এসব হকার ফুটপাতের পাশাপাশি নগরীর অলিগলিতেও ফেরি করে। একসময় জহুর হকার্স মার্কেটেই শীতের কাপড় বিক্রি হতো। পরে তা নগরীর বিভিন্ন মার্কেট থেকে ফুটপাত পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। কয়েক বছর প্রত্যাশিত শীত না পড়ায় তেমন বেচাকেনা হয়নি। অনেকে শীতের কাপড় কিনে মজুত করলেও তা বিক্রি করতে পারেননি। এবছরও শুরুতে শীতের দেখা মেলেনি। তখন পসরা সাজিয়ে বসলেও ক্রেতা পাওয়া যায়নি। তবে গত দুদিন শীত বাড়ায় ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। ফুটপাতে দামও কিছুটা নাগালের মধ্যে থাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করছেন লোকজন। শীত যত বাড়বে ফুটপাতের বাজার তত বেশি গরম হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
তীব্র শীত অনুভূত হওয়ার পর থেকে নগরীর নিউমার্কেট, রিয়াজুদ্দিন বাজার, আমতল, শহীদ মিনার, টেরিবাজার, আন্দরকিল্লা, লালদীঘি পাড়, কোতোয়ালি মোড়, জিপিওর সামনের সড়ক, চকবাজার, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, অক্সিজেন মোড়, চাক্তাই, রাজাখালী, আগ্রাবাদ, স্টিল মিল বাজার, বন্দরটিলা, ইপিজেড, বড়পোল, সাগরিকা, অলংকার মোড়, জিইসি মোড়সহ বিপণি কেন্দ্রগুলোর সামনে হকাররা নানা রকমের শীতের কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। ফুটপাতে ছোটদের বিভিন্ন সাইজের গরম কাপড়, বয়স্কদের সোয়েটার, কোট, ব্লেজার, মাফলারসহ বিভিন্ন আইটেমের শীতের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। হকাররা অনেকে ৩০ টাকা, ৫০ টাকা, ১০০ টাকা হাঁকডাক করে এসব কাপড় বিক্রি করছেন।
হকার্স মার্কেটে মেয়েদের সোয়েটার ও জ্যাকেটের দাম মানভেদে ২০০ থেকে ৮০০ টাকা, ছেলেদের সোয়েটার ১০০ থেকে ৫০০ টাকা, ছেলেদের জ্যাকেট ৩০০ থেকে ৩০০০ টাকা, ছোটদের সোয়েটার ৫০ থেকে ৬০০ টাকা, মাফলার ৪০ থেকে ২০০ টাকা এবং গরম টুপি ৫০ থেকে ২৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, জহুর হকার্সের তিনটি মার্কেটে ৮০০ এর বেশি দোকান রয়েছে। এর মধ্যে বড় দোকানের সংখ্যা ২০০, মাঝারি ৩৫০ এবং এর বাইরের দোকানগুলো ছোট। এই শীতে প্রতিদিন ছোট দোকানে ৫ থেকে ৮ হাজার, মাঝারিতে ১৫ থেকে ২০ হাজার ও বড় দোকানে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকার ব্যবসা চলবে। সব মিলিয়ে এ মার্কেটে আগামী তিন মাসে ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে ধারণা করছি।
