‘ফারাজ’ সিনেমার প্রদর্শন বন্ধ চান অবিন্তার মা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
‘ফারাজ’ সিনেমার মুক্তি ও প্রদর্শন বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন হামলায় নিহত অবিন্তা কবিরের মা রুবা আহমেদ। সাত বছর আগে ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে বর্বরোচিত জঙ্গি হামলার ঘটনা অবলম্বনে ভারতে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহজাদপুরে অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় রুবা আহমেদ বলেন, শ্যুটিং চলাকালে তিনি ‘ফারাজ’র নির্মাতা ও কলাকুশলীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সিনেমায় অবিন্তার প্রসঙ্গ না রাখার অনুরোধ জানান।
কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে তিনি দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেন। আদালতে সেই মামলা বিচারাধীন অবস্থায় ৩ ফেব্রুয়ারি সিনেমাটি ভারতে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। যা খুবই বেদনাদায়ক।
রুবা আহমেদ আরও বলেন, সিনেমায় ফারাজকে নায়কোচিত (হিরো) বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। নিহত অবিন্তা, তারুশী জৈনসহ কয়েকজনকে বাঁচাতে গিয়ে নাকি জীবন দিয়েছে ফারাজ। অথচ বাস্তবে এ গল্পের কোনো ভিত্তি নেই। কারণ জঙ্গি হামলায় আক্রান্তদের সবাই নিহত হয়েছেন। তাহলে ফারাজের বীরত্বের গল্প কে বলল? তাছাড়া নিহত অবিন্তাকে এর মধ্যে টেনে এনে তার ব্যক্তিগত এবং পরিবারের গোপনীয়তা ভঙ্গ করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনায় ভারতে চলচ্চিত্র নির্মাণের খবর ২০১৯ সালের দিকে প্রথম জানতে পারেন তিনি।
এরপর তিনি এবং হামলায় নিহত তারুশী জৈন’র মা তুলিকা জৈনসহ কয়েকজনের পরিবারের সদস্য পরিচালক মহেশ ভাটসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দেখা করেন। তারা চিত্রনাট্য দেখতে চান। তখন সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে আলোচনার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এরপর বিশ্বব্যাপী করোনা ছড়িয়ে পড়লে সিনেমা নির্মাণের আলোচনা থমকে যায়।
পরে হঠাৎ ২০২১ সালে লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সিনেমাটির প্রদর্শনী হয়। সেখানে স্পষ্টভাবে অবিন্তার চরিত্র ও ছবি দেখানো হয়। সিনেমায় অবিন্তার চরিত্রের নাম আয়েশা। এমনকি অবিন্তার বাবা-মা হিসাবে তাদের চরিত্র চিত্রায়ণ করা হয়েছে। এছাড়া তারুশি জৈন ও তার মায়ের চরিত্র আছে সিনেমায়। অথচ এ বিষয়ে হামলায় নিহত ২২ জনের কারও পরিবারের কাছ থেকে কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রুবা আহমেদ বলেন, অবিন্তা তাদের একমাত্র সন্তান। সে নিহত হওয়ার পর তারা নিজেদের পুরোপুরি গুটিয়ে নিয়েছেন। ঘটনার সাত বছর পর তিনি এই প্রথম গণমাধ্যমের সামনে এলেন। ভারতে সিনেমার মুক্তি ঠেকাতে না পারলেও নেটফ্লিক্স ও অ্যামাজনের মতো ওটিটি (অনলাইন) প্ল্যাটফরম থেকে বাংলাদেশে ‘ফারাজ’র প্রদর্শন বন্ধ রাখতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
