অমর একুশে বইমেলা ২০২৩
বইয়ের টানে ছুটছেন পাঠক
হক ফারুক আহমেদ
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পাঠক মানেই শত ব্যস্ততার মাঝে বইয়ের টানে ছুটে যাওয়া। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তেমনটাই দেখা গেল বইমেলার মূল প্রাঙ্গণ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
বিকাল পর্যন্ত পাঠকের আনাগোনা ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু সন্ধ্যা হতেই পালটে যায় সব। নানা বয়সি পাঠক মেলায় ছুটে আসেন। তারা বইয়ের সঙ্গে কাটান চমৎকার একটা সময়। কিনে নিয়েছেন প্রিয় বইও।
আজ অমর একুশে বইমেলার দ্বিতীয় শুক্রবার। আগামীকালও ছুটির দিন। প্রকাশকরা বলছেন, আজ থেকেই বইমেলা জমে উঠবে, যা আগামী সময়গুলো পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গণি যুগান্তরকে বলেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা বলে মেলার আগামী কয়কটি দিন গুরুত্বপূর্ণ। সামনের দিনগুলোতে পাঠকের আনাগোনা বাড়বে।’
এদিন বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে ছিল ‘জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : কবীর চৌধুরী’ এবং ‘জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : সাংবাদিক-সাহিত্যিক জহুর হোসেন চৌধুরী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবদুস সেলিম ও জাহীদ রেজা নূর। আলোচনায় অংশ নেন কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়, খায়রুল আলম সবুজ, মনজুরুল আহসান বুলবুল ও মুস্তাফিজ শফি। সভাপতিত্ব করেন শফি আহমেদ।
প্রাবন্ধিকদ্বয় বলেন, এক জীবনে কত যে বিপুল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকা যায় তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ কবীর চৌধুরী। তিনি বাংলা-ইংরেজিতে যেমন মৌলিক লেখা লিখেছেন তেমনি অনুবাদও করেছেন। তিনি কমপক্ষে দশটি সগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। কবীর চৌধুরী যথার্থ অর্থেই জাতীয় অধ্যাপক ছিলেন। কারণ তিনি ছিলেন সবারই শিক্ষক হওয়ার গুণসম্পন্ন এক অনন্য ব্যক্তিত্ব।
অপরদিকে সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরী বর্ণাঢ্য সাংবাদিকতা জীবনের লড়াইয়ের কালটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যৌবনে বামধারার প্রতি আকৃষ্ট জহুর হোসেন চৌধুরীর সাংবাদিকতার বৈশিষ্ট্য হলো বস্তুনিষ্ঠতাকে হেয় না করে সত্যকে তুলে ধরা।
এদিন লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন মালেক মাহমুদ, সুপা সাদিয়া, খান মুহাম্মদ রুমেল, গিরীশ গৈরিক প্রমুখ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন বিমল গুহ, স্নিগ্ধা বাউল এবং রমজান মাহমুদ। আবৃত্তি করেন রাজিয়া রহমান, জাহান বশির ও এএসএম সামিউল ইসলাম। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী কাঙ্গালিনি সুফিয়া, আবদুর রহমান, বশির উদ্দিন সরকার, সুভাষ বিশ্বাস, কোহিনুর আক্তার গোলাপী, নূরুল ইসলাম, বিমল বাউল, সুধীর মণ্ডল ও অমিয় বাউল।
নতুন বই : মেলার নবম দিনে মেলায় এসেছে ১২৩টি নতুন বই। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে মৌলি আজাদের ‘ইগলের চোখ’ (আগামী); সৈয়দ শামসুল হক অনূদিত টেড হিউজের ‘দ্য কামিং অব দ্য কিংস’ (ঐতিহ্য); তরুণ হউসুফের ‘শেরে বাংলা ও যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন : কিছু দুষ্প্রাপ্য দলিল’ (ঐতিহ্য)।
আবদুল মান্নান সৈয়দের প্রবন্ধ ‘বাংলা সাহিত্যে মুসলমান’ (অবসর); রফিকুর রশীদের গল্পগ্রন্থ ‘শেখ মুজিব শেখ রাসেল ছেলেবেলার গল্প’ (আগামী প্রকাশনী); মোনায়েম সরকার সম্পাদিত ‘আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী স্মারকগ্রন্থ’ (আগামী); ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেনের প্রবন্ধ ‘বঙ্গবন্ধু-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কূটনীতি’ (আগামী); আনোয়ারা সৈয়দ হকের ভ্রমণবিষয়ক বই ‘দেখে এলাম মিশর ও মরক্কো’ (ঐতিহ্য); ইমরান মাহফুজের কবিতার বই ‘মুখোশপরা পাঠশালা’ (ঐতিহ্য); শামীমা চৌধুরীর ছোটগল্প ‘ভেসে যায় বেহুলার ভেলা’ (শিল্পতরু প্রকাশনা); মুহম্মদ নূরুল হুদার কাব্যগ্রন্থ ‘প্রেমের কবিতা’ (সময়); লুৎফর রহমান রিটনের ‘ফেল্টুস! চড় খাবি’ (কিন্ডার বুকস); বাবুল আনোয়ারের ‘ভালোবাসার কবিতা’ (পুঁথিনিলয়) এবং নম্রতা সাহার গল্পগ্রন্থ ‘অপরাজিতা’ (অন্যধারা)।
