Logo
Logo
×

শেষ পাতা

দেশ এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছে : ফখরুল

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দেশ এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছে : ফখরুল

বাংলাদেশ এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ভয়াবহ অবস্থা থেকে বের হতে না পারলে গোটা জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। এই বিপদ, এই সংকট শুধু বিএনপির নয়-এই সংকট আজ পুরো জাতির। ভবিষ্যতে স্বাধীন থাকব কি না, দেশের সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না, দেশ করদরাজ্যে পরিণত হবে কি না, গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে কি না-এর সবকিছু আগামী কয়েকটা দিনের ওপর নির্ভর করছে। তাই সবাইকে রাজপথে বের হয়ে আসতে হবে।

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ’র সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেউলিয়া হয়ে গেছে উলে­খ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেউলিয়া হয়ে এখন দল ভাঙার চেষ্টা করে। দল কখন ভাঙতে যায়, যখন সে বুঝে দুর্বল। সরকার আমাদের দলছুট, বহিষ্কৃত লোকজনকে নিয়ে আবার দল তৈরি করে ঝামেলা করতে চায়। খুব পরিষ্কারভাবে বলছি, এগুলো করে কোনো লাভ হবে না। মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। মানুষ একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এর বিকল্প তারা কিছু চায় না।

বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি কার্যকরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ভিসানীতি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া, গায়ের জোরে গুম-হত্যা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাওয়া দেশগুলোর বিরুদ্ধে পড়েছে। অনেকে ওইভাবে চিন্তা করছেন না; অনেকে আছেন যে খুব খুশি হয়েছি আমরা। এটা তো খুশির ব্যাপার না, এটা লজ্জার। এজন্য সম্পূর্ণ দায়ী শেখ হাসিনার ভয়াবহ কর্তৃত্ববাদী শাসন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিদেশে গিয়ে অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী যেসব কথা বলেন, তার কথায় বাংলাদেশকে দুই শক্তির মধ্যে মুখোমুখি করে দিয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য সুখকর নয়, উদ্বেগজনক। দেশকে ভয়াবহ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরার সাংবাদিক বললেন, তিনি এখানে আছেন, কোনোদিন ভাবেননি যে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাবেন। এখন চিন্তা করতে শুরু করেছেন, বাংলাদেশে থাকবেন না। কেন? কারণ তিনি একটা রেস্টুরেন্টে কথা বলতে পারেন না, বিয়ে বাড়িতে কিংবা উৎসবে গিয়ে কথা বলতে পারেন না। তিনি কাদের সঙ্গে চলাফেরা করেন, কার সঙ্গে বসে কথা বলেন, তাও এখন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমাদের বহু বুদ্ধিজীবী এখন টেলিভিশনের টকশোতে যান না। তাদের ভয় দেখানো হয়। আজ দুর্ভাগ্যজনকভাবে যারা স্বাধীনতাযুদ্ধে জড়িত ছিলাম, আমরা এটা ভাবতেও পারি না।

ফখরুল বলেন, আমরা এক বছর ধরে রাস্তায় নেমেছি। এর মধ্যে ২২ জন তরুণ-যুবক নেতার পুলিশের গুলিতে প্রাণ গেছে। অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে এবং জেলে গেছে। ঢাকায় বেশির ভাগ নেতাকর্মী নিজের বাসায় থাকতে পারেন না; অন্যত্র বাসা ভাড়া করে থাকেন। প্রতিদিন তাদের মামলার হাজিরা দিতে আদালতে যেতে হয়।

তিনি বলেন, ভাটারা থানার একেবারেই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাজাহানের ট্রায়াল হয়ে গেছে। এই যে মানুষের টেনশন, প্রতিটি মানুষকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। দলের সিনিয়র নেতাদের মামলাগুলো প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আইন মন্ত্রণালয়ে একটি সেল তৈরি করেছে; কত দ্রুত সব সিনিয়র নেতাদের মামলাগুলো বিচার শেষ করে সাজা দিয়ে নির্বাচনে অবৈধ ঘোষণা করা যায়। কিন্তু কোনো অবস্থায় আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।

আ স ম হান্নান শাহ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে এ সভা হয়। সংগঠনটির সভাপতি ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মজিবুর রহমানের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, কর্নেল (অব.) জয়নাল আবেদীন, বেনজির আহমেদ টিটু, হুমায়ুন কবির খান, ওমর ফারুক শাফিন, হান্নান শাহের ছেলে গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান, সাংবাদিক রাশেদুল হক প্রমুখ।

বাংলাদেশ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম