Logo
Logo
×

শেষ পাতা

পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বরাবরই বলে আসছিলেন নিরঙ্কুশ বিজয় নিয়ে পঞ্চমবারের মতো তিনি ক্ষমতায় বসবেন। এখন ক্রেমলিনেরই অনুগত অন্য তিন প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচনে ৮৭ শতাংশ ভোট পাওয়ার পর তিনি বলছেন, রাশিয়ার গণতন্ত্র পশ্চিমা অনেক দেশের চেয়েও বেশি স্বচ্ছ। খবর বিবিসি, আলজাজিরার।

রাশিয়ায় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তিন দিন ধরে ভোটগ্রহণের ফলাফলে দেখা গেছে প্রেসিডেন্ট পুতিন ৭ কোটি ৬০ লাখ ভোট পেয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইল্লা পামফ্লোবা ৯৯ শতাংশের বেশি ভোট গণনার পর একে ‘রেকর্ডসংখ্যক ভোট’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ভোট দেওয়ার সংখ্যাও একটি রেকর্ড। এবারের নির্বাচনে ৭৭.৪৪ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। নতুন রাশিয়ার ইতিহাসে এমনটি আর কখনো ঘটেনি।

ইউক্রেনের রাশিয়া-অধিকৃত এলাকার বাসিন্দাদের ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে সময় বরাদ্দ ছিল আরও বেশি। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে ফলাফলকে বিপুল বিজয় হিসাবেই উল্লেখ করা হয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কখনোই লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড ছিল না। কারণ, ক্রেমলিন রাজনৈতিক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে মিডিয়া, নির্বাচন সবকিছুই কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। ভ্লাদিমির পুতিনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী নিকোলাই খারিতোনভ। তিনি পেয়েছেন চার শতাংশের কিছু বেশি ভোট। অন্য দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পেয়েছেন তার চেয়েও কম। তিন প্রার্থীর মধ্যে কেউই ‘সিরিয়াস’ ছিলেন না। এমনকি, খারিতোনভ নির্বাচনের আগে ‘জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার’ জন্য রীতিমতো প্রেসিডেন্টের প্রশংসা করেন।

আস্থা রাখার মতো কোনো বিকল্প না থাকায় রাশিয়ানদের আংশিকভাবে পঞ্চমবারের মতো পুতিনকেই প্রেসিডেন্ট হিসাবে বেছে নিতে হয়েছে। তবে এর মূল কারণ, ক্রেমলিন রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে সম্ভাব্য যে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীকে সরিয়ে দিয়েছে। বিরোধীরা হয় জেলে গেছেন, অথবা নির্বাসনে পালিয়েছেন নয়তো প্রাণ হারিয়েছেন।

কয়েক সপ্তাহ ধরে শোনা যাচ্ছিল, বরিস নাদেজদিন নামে একজন যুদ্ধবিরোধী রাজনীতিবিদকে দাঁড়ানোর অনুমতি দেওয়া হতে পারে। কিন্তু ক্রমশ সমর্থন বাড়ছিল বলে গত মাসে তাকে নির্বাচন কমিশন বাদ দিয়ে দেয়।

প্রেসিডেন্ট পুতিন সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার নির্বাচনি প্রচারণাকে মার্কিনিদের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রসর বলে দাবি করেছেন। তিনি বিশেষ করে, অনলাইন ভোটিংয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। নির্বাচন কর্মকর্তাদের মতে, ৮০ লাখ ভোটার এবার অনলাইনে ভোট দিয়েছেন। পুতিন নিজেও অনলাইনে ভোট দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি স্বচ্ছ এবং একেবারে নিরপেক্ষ।’

স্বাধীন পর্যবেক্ষণ সংস্থা গোলোসকে ভোট পর্যবেক্ষণ করতে দেয়া হয়নি। কিন্তু, অনিয়মের তথ্য ঠিকই বেরিয়ে এসেছে। জানা গেছে, সরকারি কর্মচারীদের ভোটকেন্দ্রে বা অনলাইনে ভোট দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিন বিরোধীদের প্রচারণারও প্রশংসা করে বলেছেন, এতে ভোটার উপস্থিতি বেশি হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, কোনো যথার্থ বিরোধী প্রার্থীকে নির্বাচনে দাঁড়াতেই দেওয়া হয়নি। সদ্য প্রয়াত আলেক্সেই নাভালনির সমর্থকরাই যা কিছু প্রতীকী প্রতিবাদ করেছেন। তাদের ‘নুন অ্যাগেইনস্ট পুতিন’ কর্মসূচির অংশ হিসাবে মস্কো এবং সেন্ট পিটার্সবার্গের মতো শহর এবং বিদেশের অনেক দূতাবাসের বাইরে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা গেলেও ফলাফলে এর কোনো প্রভাব নেই।

পশ্চিমা দেশগুলো এক সুরে বলছে, ভোট অবাধ বা সুষ্ঠু কোনোটিই হয়নি। জার্মানি একে ‘সাজানো-নির্বাচন’ বলে অভিহিত করেছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড ক্যামেরন ‘ইউক্রেনের ভূখণ্ডে অবৈধ নির্বাচন’ আয়োজনের নিন্দা করেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘এটি স্বৈরশাসককে ক্ষমতায় রাখার নির্বাচন।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম