সংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ারের জীবনাবসান
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
তিনি তার কণ্ঠের সুমধুর সুধায় প্রাণ ভরিয়েছিলেন শ্রোতাদের। সেই কণ্ঠ অবশেষে থেমে গেল। দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে অনন্তলোকে পাড়ি জমালেন একুশে পদকজয়ী রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পাপিয়া সারোয়ার। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্বামী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন।
ঢাকার ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাপিয়া মৃত্যুবরণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্পীর স্বামী সারোয়ার এ আলম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, পাপিয়া আর আমাদের মাঝে নেই। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার দিকে চিকিৎসক তার লাইফ সাপোর্ট খুলে মৃত ঘোষণা করেছেন।
পাপিয়া সারোয়ার ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে তিন বছর ধরে ভুগছিলেন। ২০২১ সালে একুশে পদকপ্রাপ্ত এ শিল্পী দেশ-বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সম্প্রতি অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার ইমপালস হাসপাতালে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। শিল্পী পাপিয়া সারোয়ারকে আজ শুক্রবার বাদ জুমা জানাজা শেষে বনানীতে তার বাবা সৈয়দ বজলুর রহমানের কবরে সমাহিত করা হবে।
পাপিয়া সারোয়ারের জন্ম বরিশালে ১৯৫২ সালের ২১ নভেম্বর। ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রসংগীত ভালোবাসতেন তিনি। পাপিয়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে ছায়ানটে ভর্তি হন। পরে তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে ভর্তি হন। ১৯৬৭ সাল থেকে বেতার ও টিভিতে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসাবে গান করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন।
১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রসংগীতে ডিগ্রি নিতে ভারতে যান। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনিই প্রথম ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে সেখানে স্নাতক করার সুযোগ পান। এর আগে তিনি ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন ও জাহেদুর রহিমের কাছে গানের দীক্ষা নেন। তার প্রথম অডিও অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮২ সালে। আধুনিক গানেও তিনি অনন্য। ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ গানটি তাকে তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দেয়। তার সর্বশেষ অ্যালবাম ‘আকাশপানে হাত বাড়ালাম’ প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালে। একই বছর তিনি বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার পান। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভ করেন। চলতি বছর চ্যানেল আইয়ের আয়োজনে রবীন্দ্রমেলায় পাপিয়া সারোয়ারকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।
