চাঁদা, প্রভাব বিস্তার
মধ্যনগরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১
সুনামগঞ্জ ও তাহিরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর সীমান্তে ভারতীয় চুনাপাথর পরিবহণকারী গাড়ি থেকে চাঁদা আদায়ে আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে যুবদল ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। উপজেলার মহিষখলা বাজারে সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কয়েক দফায় চলে এ সংঘর্ষ। এ সময় একপক্ষের ঢিলের আঘাতে পথচারী হোসেনপুর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী নিহত হয়েছেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নন।
সীমান্তে ভারতীয় চুনাপাথর পরিবহণকারী গাড়ি থেকে চাঁদা আদায় কেন্দ্র করে কিছু দিন ধরে স্থানীয় ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা হারুনুর মাহমুদ এবং সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা হযরত আলী গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার সন্ধ্যায় মহিষখলা বাজারে দুপক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়।
এ সময় হযরত আলী গ্রুপ হারুনের লোকজনকে ধাওয়া করলে তারা বাজার থেকে চলে যান। পরে মাগরিবের নামাজের পর হারুন গ্রুপের শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহিষখলা বাজারে এসে হযরত আলী গ্রুপের লোকজনের ওপর আক্রমণ চালায়। এ সময় ইটের আঘাতে আহত হয়ে মোহাম্মদ আলী নিহত ও ২০ জন আহত হন। আহতদের ধর্মপাশা ও নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মধ্যনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করায় একজন সহকারী পুলিশ সুপার ও থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সজীব রহমান বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপির স্থানীয় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। মোহাম্মদ আলী সংঘর্ষের ঘটনায় নয়, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে প্রথমে ওসি গণমাধ্যমকে বললেও পরে তিনি তা অস্বীকার করেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় কোনো পক্ষ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত থানায় অভিযোগ করেনি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আলী ফরিদ আহমেদ জানান, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা ওসির : এলাকাবাসীর দাবি চাঁদাবাজির ঘটনা আড়াল করতেই সংঘর্ষে মোহাম্মদ আলী নিহতের ঘটনা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে জানান ওসি। সোমবার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে থানার ওসি সজীব চাঁদা আদায়ের প্রসঙ্গ কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বললেন, সীমান্ত সড়কে চাঁদাবাজির সঙ্গে আমার (ওসি) বা থানা পুলিশের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মোহাম্মদ আলী সংঘর্ষের ঘটনায় নয় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন কিভাবে নিশ্চিত হলেন-জানতে চাইলে ওসি বললেন, আমি এমন কথা বলিনি, নিহতের পরিবারের লোকজন এমনটি দাবি করছেন।
