মোগল স্থাপত্যের নিদর্শন আতিয়া মসজিদ
মো. নুরুল ইসলাম, দেলদুয়ার (টাঙ্গাইল)
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার আতিয়া জামে মসজিদ মোগল স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন। ১০ টাকার নোটে মসজিদটি স্থান পেয়েছে। ৪১৬ বছর আগে দেলদুয়ার উপজেলার নিভৃতপল্লি আতিয়া গ্রামে চুন-সুরকিতে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। আতিয়া থেকে এ অঞ্চলে মোগলদের শাসনকার্য পরিচালনা হতো। ১৫৯৮ খ্রিষ্টাব্দে যমুনা-ধলেশ্বরী-লৌহজং-ঝিনাই-বংশী নদী বিধৌত বিশাল অঞ্চল নিয়ে আতিয়া পরগোনা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দে আতিয়া মহকুমা নামে পরিচিত ছিল। পরের বছর ১৫ নভেম্বর মহকুমা টাঙ্গাইলে স্থানান্তরিত হয়।
১৬০৯ খ্রিষ্টাব্দে করটিয়ার জমিদার সাঈদ খান পন্নী মসজিদটি নির্মাণ করেন। দেলদুয়ার সদর থেকে সাত কিলোমিটার পশ্চিমে খরস্রোতা লৌহজং নদীর তীরে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে এখন মসজিদের পাশে নদীর অস্তিত্বই নেই। চার পাশে জনবসতি, মাঠঘাট আর ফসলি জমি। মহাস্থান গড় থেকে আনা বিভিন্ন মাপের ১৮ থেকে ২০ ধরনের নানা কারুকাজ খচিত টেরাকোটাসমৃদ্ধ ইট ও চুন-সুরকি দিয়ে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৬৯ ফুট ও প্রস্থ ৪০ ফুট। এর দেওয়ালের ঘনত্ব সাড়ে ৭ ফুট। চারটি বড় পিলারের ওপর দণ্ডায়মান মসজিদটিতে একটি বড় ও তিনটি অপেক্ষাকৃত ছোট গম্বুজ শোভা পাচ্ছে। মসজিদের ভেতরে পাঁচ কাতারে ১৫ জন করে ৭৫ জন এবং বারান্দায় দুই কাতারে ৩০ জন মুসল্লি একত্রে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন। এছাড়া মসজিদের সামনে ফাঁকা স্থানে সহস্রাধিক মুসল্লির সংকুলান হয়।
১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দে জমিদার রওশন খাতুন চৌধুরানী প্রথম মসজিদটির সংস্কার করেন। পরে ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে করটিয়ার জমিদার ওয়াজেদ আলী খান পন্নীর সহযোগিতায় জমিদার আবু আহমেদ গজনবী পুনঃসংস্কার করেন। বর্তমানে মসজিদের সংস্কার খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।
ঢাকার মিরপুর থেকে মসজিদ পরিদর্শনে আসা যুবক মাসুম বিল্লাহ বলেন, মসজিদের ঐতিহ্য সম্পর্কে অনেক শুনেছি। যে মসজিদ ১০ টাকার নোটে স্থান পেয়েছে তা নিজ চোখে দেখার ইচ্ছে ছিল। তাই এসেছি। মসজিদের নির্মাণ শৈলী চমৎকার।
মসজিদের ইমাম মুফতি আব্দুল বাছির বলেন, মসজিদটি যে মানের স্থাপনা সে মানের সংস্কার হয় না। এর সৌন্দর্য ধরে রাখতে অতিসত্বর সংস্কার করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে অনেক পর্যটক এসে মসজিদের বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে হতাশ হন।
