ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক আর নেই
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আবদুর রাজ্জাক এক সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন। পরে এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তিতে এবি পার্টি থেকে পদত্যাগ করে আবার জামায়াতে ফিরে আসেন। তবে রাজনীতিতে আর সক্রিয় হতে পারেননি।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল শিশির মনির তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের মৃত্যুর কথা জানান। মৃত্যুকালে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক স্ত্রী, দুই পুত্র, এক কন্যা, নাতি-নাতনিসহ বহু স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বাদ এশা (সাড়ে ৮টায়) ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আজ সোমবার বেলা ১১টায় সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে। সত্তরের দশকের শেষের দিকে লেখাপড়ার জন্য যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন আবদুর রাজ্জাক। ১৯৮০ সালে তিনি বার অ্যাট ল’ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। ওই বছরের ডিসেম্বরে দেশে ফিরে আইন পেশায় যোগ দেন। ২০১৩ সালে যুক্তরাজ্যে ফিরে গিয়ে সেখানে আবারও পুরোদমে আইন পেশায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
জামায়াতের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি হিসাবে কাজ করেন। ২০১৯ সালে তিনি জামায়াত থেকে পদত্যাগ করেন। পরে আত্মপ্রকাশ করা এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হয়েছিলেন। ২০১৩ সালে যুক্তরাজ্যে যান। ১১ বছর পর গত ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে দেশে ফেরেন তিনি।
২০২০ সালে আবদুর রাজ্জাকের প্রোস্টেট ক্যানসার ধরা পড়ে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে লন্ডনের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময় তিনি এবি পার্টির উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
আবদুর রাজ্জাকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এক শোকাবার্তায় তিনি শোকসন্তপ্ত? পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। আবদুর রাজ্জাকের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে প্রধান বিচারপতি বলেন, তার প্রয়াণে দেশের আইন অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হলো।
ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এবং সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। যুক্ত শোক বাণীতে তারা বলেন, ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে প্রতিটি দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি তার দীর্ঘ কর্মজীবনে পেশাদারিত্ব, স্বচ্ছতা এবং দায়িত্ববোধের যে উদাহরণ স্থাপন করেছেন তা একবারেই বিরল।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। এক শোকবার্তায় তারা বলেন, আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুতে বাংলাদেশের আইনাঙ্গনের অপূরণীয় ক্ষতি হলো। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার সমুন্নত করতে তার অবদানের কথা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
